প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নিজস্ব প্রতিবেদক: এপেন্ডিসাইট অপারেশনের দীর্ঘ ১৮ মাস পর শিশু বাচ্চা ইয়ামিন হোসেনের পেট থেকে বের হলো ”মোপ” ( ব্যান্ডেজ কাপড় )। ভিক্টোরিয়ার ডাক্তার মোঃ ইউসুফ আলী সরকার, খানপুর ৩০০ শয্যা – মেডিহোপ হাসপাতালের সার্জন ডাঃ ফয়সাল আহম্মেদ ও মেডিহোপ হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মুহম্মদ মশিউর রহমান এর কাছে সুষ্ঠ বিচার চেয়ে পিতা মোঃ শামীমুর রহমান এর অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সোমবার ( ৮ মে ) দুপুর ১২টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে চিকিৎসা অবহেলা ডাক্তার ও মেডিহোপ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীর পিতা মোঃ শামীমুর রহমান উপস্থিত হয়ে এ অভিযোগ দায়ের করেন। মোঃ শামীমুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে জানান, আমার ছেলে ইয়ামিন হোসেনকে চিকিৎসার অবহেলা ও গাফিলতির কারনে ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের ডাক্তার মোঃ ইউসুফ আলী সরকার, খানপুর ৩০০ শয্যা – মেডিহোপ হাসপাতালের সার্জন ডাঃ ফয়সাল আহম্মেদ ও মেডিহোপ হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার সহ হাজী আনিছুর রহমান এর বিরুদ্ধে সিভিল সার্জন, জেলা প্রশাসক, চিকিৎসক তত্ত্বাবধায়ক খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতাল, আর.এম.ও, ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল, নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।
বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে দৌড়ঝাঁপে কোন সুচিকিৎসা না পেয়ে দীর্ঘ ১৮ মাস পর আমরা ঢাকাস্থ মাতৃআইল শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানকার ডাক্তারগণ ইয়ামিন হোসেনের পায়ুপথে ”মোপ” ( ব্যান্ডেজ কাপড় ) দেখে তারাও হতবাগ হয়ে পরে সমস্ত ডকুমেন্ট আমাদের কাছে রয়েছে এবং অনুলিপির সাথে সংযুক্ত করে সিভিল সার্জন এর কাছে জমা দিয়েছি এবং আইনগত ব্যবস্থা নিব।
এবিষয়ে মোঃ শামীমুর রহমান অভিযোগে উল্লেখ্য করেছেন, গত ইং ১৬/০৯/২০২১ তারিখে আমার ছেলে মোঃ ইয়ামিন হোসেন এর পেটের পীড়া জনিত সমস্যার কারনে তাহাকে নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিলে তখনকার দায়িত্বরত ডাক্তার মোঃ ইউসুফ আলী সরকার আমাদেরকে জানায় যে, জরুরী আমার ছেলের এপেন্ডিসাইট অপারেশন করতে হবে এবং আমাদেরকে বলে যে, আমরা যেনো নারায়ণগঞ্জ চাষাড়াস্থ মেডিহোপ হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করাই অতপর: আমরা বিগত ইং ২০/০৯/২০২১ তারিখে আমার ছেলেকে চাষাড়া মেডিহোপ হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গত ইং ২০/০৯/২০২১ তারিখ বিকাল অনুমান ৫.০০ ঘটিকার সময় উল্লেখিত ভিক্টোরিয়ার ডাক্তার মোঃ ইউসুফ আলী সরকার এবং নারায়ণগঞ্জ খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালের সার্জন ডাঃ ফয়সাল আহম্মেদ সম্মিলিতভাবে আমার ছেলের এপেন্ডিসাইট অপারেশন করেন।
পরবর্তীতে দেড়মাস পর আমার ছেলের পেট ফুলে গেলে আমি পূনরায় আমার ছেলেকে ভিক্টোরিয়ার ডাক্তার মোঃ ইউসুফ আলী সরকারের কাছে নিয়া গেলে তিনি পুনরায় ডাঃ ফয়সাল আহম্মেদকে সাথে নিয়া টিভি বলিয়া আবারো আমার ছেলের পেটে অপারেশ করিয়াছেন। ২য় বার অপারেশনের পরও দিনদিন আমার ছেলে অসুস্থ হইতে থাকে এবং তাহার খাবার দাবার বন্ধ হইয়া যায়। ১৮ মাস যাবত আমার ছেলে সুস্থ না হইয়া বরং দিনদিন অসুস্থতার মাত্রা বাড়িতে থাকে এবং আমার ছেলের অবস্থা মুমূর্ষু হইয়া পড়িয়াছে।
অতপর: আমরা বিভিন্ন হাসপাতাল ও ডাক্তারের পরীক্ষা নিরীক্ষা করিলেও কোন ধরনের রোগ নির্ণয় করা যায় নাই। পরবর্তীতে আমি গত ইং ২১/০৪/২০২৩ তারিখে আমার ছেলেকে মাতৃআইল শিশু হাসপাতালে ভর্তি করাই। ভর্তি করানোর দুইদিন পর আমার ছেলের পায়ুপথে একটি ব্যান্ডিজের দুই ইঞ্চি গজ কাপড় দেখা যায়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য মাতুয়াল হাসপাতালের ডাক্তারদের পরামর্শে প্রো-একটিভ হাসপাতালে নিয়া বিশেষ পদ্ধতীতে আমার ছেলের পেটের ভিতর হইতে ব্যান্ডিজের গজ কাপড় বের করা হয়।
এমতাবস্থায় উল্লেখিত মোঃ ইউসুফ আলী সরকার ও ডাঃ ফয়সাল: আহম্মেদের ভুল চিকিৎসা ও অবহেলার কারনে আমার ছেলে অনুমান ১৮ মাস মৃত্যুর সহিত যুদ্ধ করিয়াছে। উল্লেখ্য যে, আমি বিষয়টি মেডিহোপ হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক আলহাজ্ব আনিসুর রহমান আনিসকে জানাইলে তিনি তাহাদের গাফলতী ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আমার ছেলেকে পুনরায় তাহাদের হসপিটালে ভর্তি করানোর জন্য বলিলেও আমি আমার ছেলের জীবনের কথা চিন্তা করিয়া সেখানে আনি নাই।
এই ঘটনার যাবতীয় কাগজপত্র ও প্রয়োজনীয় সকল প্রকার তথ্য সনদ আমার নিকট রহিয়াছে। এবিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মুহম্মদ মশিউর রহমান জানান, আমরা তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত্ব ব্যবস্থা গ্রহণ করব।