প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সারাদেশের মতো মুন্সীগঞ্জে বৌদ্ধ ধমালম্বীদের ধর্মীয় উৎসব বৈশাখী পূর্ণিমা উদযাপিত হয়েছে সদর উপজেলার বজ্রযোগিনী গ্রামে বাংলার মহাপন্ডিত জ্ঞানতাপস অতীশ দীপংকর শ্রীজ্ঞানের জন্মস্থানে প্রতিষ্ঠিত অতীশ দীপংকর মেমোরিয়াল কমপ্লেক্সে।গৌতম বুদ্ধের শুভজন্ম, বোধিজ্ঞান ও নির্বাণ লাভ -এই ত্রিস্মৃতি বিজড়িত বৈশাখী পূর্ণিমায় জেলার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা নানা আনুষ্ঠানিকতায় দিনটি উদযাপন করেন।
ধর্মীয় উৎসবটি বিশ্বে সবার কাছে এটি বুদ্ধপূর্ণিমা নামে পরিচিত। বৌদ্ধ ধর্ম মতে, আজ থেকে প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে এই দিনে মহামতি গৌতম বুদ্ধ আবির্ভূত হয়েছিলেন। তার জন্ম, বোধিলাভ ও মহাপ্রয়াণ বৈশাখী পূর্ণিমার দিনে হয়েছিল বলে এর (বৈশাখী পূর্ণিমা) অপর নাম হয় ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’।এ উপলক্ষে সকাল থেকে বুদ্ধ পূজা, প্রদীপ প্রজ্বলন, ধর্মীয় আলোচনা সভা, সমবেত প্রার্থনা, আলোচনা সভা ও বুদ্ধ পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ ছাড়াও মানব জাতির সর্বাঙ্গীণ শান্তি ও মঙ্গল কামনায় সকালে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।অতীশ দিপংকর মেমোরিয়াল কমপ্লেক্সর অধ্যক্ষ ভদন্ত করুনান্দ থের বৈশাখী পূর্ণিমা পসঙ্গে বলেন, পূর্বজন্মে বোধিসত্ব সকল পারমি পূরণ করে সন্তোষকুমার নামে যখন স্বর্গে অবস্থান করছিলেন, তখন দেবগণ তাকে জগতের মুক্তি এবং দেবতা ও মানুষের নির্বাণ পথের সন্ধান দানের জন্য মনুষ্যকুলে জন্ম নিতে অনুরোধ করেন। দেবতাদের অনুরোধে বোধিসত্ব সর্বদিক বিবেচনাপূর্বক এক আষাঢ়ী পূর্ণিমায় স্বপ্নযোগে মাতৃকুক্ষিতে প্রতিসন্ধি গ্রহণ করেন এবং পরবর্তী এক শুভ বৈশাখী পূর্ণিমায় জন্ম লাভ করেন।
গৌতম বুদ্ধের শুভজন্ম হয়েছিল লুম্বিনী কাননের শালবৃক্ষ ছায়ায় খোলা আকাশের নিচে। তার কাছে জাতি, শ্রেণি ও গোত্রের ভেদাভেদ ছিল না। তিনি মানুষকে মানুষ এবং প্রাণীকে প্রাণিরূপেই জানতেন এবং এর প্রাণসত্তার মধ্যেই যে কষ্টবোধ আছে তা তিনি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতেন। তিনি বলেছিলেন, ‘সবেব সত্তা ভবন্তু সুখিতত্তা’ অর্থাৎ জগতের সব প্রাণী সুখি হোক’। বৈশাখী পূর্ণিমা উপলক্ষে সকাল থেকেই অতীশ দীপংকর মেমোরিয়াল কমপ্লেক্সে দর্শনার্থীরাও ভিড় জমায়।
ঢাকা থেকে পরিবার সাথে আসা সুবর্ণা বড়ুয়া জানান, উৎসবের দিনটি উদযাপন করতে আমরা এই পুণ্যভুমিতে এসেছি।তিব্বতে বৌদ্ধ ধর্মের সংস্কারক শ্রেষ্ঠ বাঙালি পন্ডিত অতীশ দীপংকর শ্রীজ্ঞান মহান ধর্মগুরু ও দার্শনিক। আমাদের নতুন পজন্মকে শ্রীজ্ঞানের ভিটা দর্শনের জন্য উৎসবের দিনে এখানে আসা।