না’গঞ্জে ট্রাফিক পুলিশের নিয়ন্ত্রণে অটো রিক্সায় চাঁদাবাজি !

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জ সদরের বিভিন্ন এলাকায় চলাচল করে প্রায় শহস্রাধিক ব্যাটারি চালিত আটো রিক্সা। জেলা পুলিশের নির্দেশনায় গেল বছরের এপ্রিল মাস থেকে অবৈধ এই পরিবহন শহরে প্রবেশ নিষেধ বলে ঘোষণা দেয়া হয়। সেসময় যানজট নিয়ন্ত্রণে এমন ঘোষণার পর শহরের প্রবেশ মুখ গুলোতে জেলা পুলিশ চেকপোষ্ট বসিয়ে অবৈধ অটো রিক্সা প্রবেশ বন্ধে সক্রিয় হয়।

কিছু দিন এমন নিষেধাজ্ঞা কঠোর ভাবে পালন হলেও হঠাৎ শিথিল হতে দেখা যায়। তবে এই শিথিলতার পেছনে লুকিয়ে আছে ভিন্ন এক গল্প । অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রতিদিন শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাড়া সহ , কালিরবাজার, মেট্রোহল, দুই নাম্বার রেলগেট, চাঁনমারি এলাকায় প্রায় শহস্রাধিক ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সা নিয়মিত চলাচল করছে।তবে প্রতিদিন প্রায় ১ শতাধিকেরও বেশি অটোরিক্সা নিয়মিত আটক করছে পুলিশ। পুলিশের ভাষ্য তারা অবৈধ অটোরিক্সা নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে এই আটকাভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন।

এদিকে অনুসন্ধানে গেছে যেসকল অটোরিক্সা শহরের বিভিন্ন এলাকায় বিনাবাধায় নিয়মিত চলাচল করছে তারা ট্রাফিক পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকমর্তাকে মাসিক মাসোহারার বিনিময়ে ম্যানেজ করে বিনা বাধায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। যেসব অটোরিক্সা মাসোহারা দিচ্ছেনা তাদেরকেই প্রতিদিন আটক করা হচ্ছে। আটককৃত অটোরিক্সা গুলোর প্রতিটি থেকে নেয়া হচ্ছে কমপক্ষে ১ হাজার টাকা । ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর এ্যাডমিন মি. করিম জানিয়েছেন, আটককৃত প্রতিটি অটো কে রেকার বিল এর নামে ১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে ছেড়ে দেয়া হয়।

যেসব আটোরিক্সা মাসোহারায় চলাচল করছে তাদের কে বিশেষ এক ধরণের চাবির রিং প্রদান করা হচ্ছে। সাংকেতিক সেসব চাবির রিং এ মাসের নাম এবং একটি সিরিয়াল নাম্বার সংযুক্ত থাকে।বিশেষ এ চিহ্ন ব্যবহারকারী অটো রিক্সা পুলিশ আটক না করে শহরে চলাচলের সুযোগ করে দেয়। তাদের থেকে আদায় করা হয় প্রতি মাসে অটোরিক্সা প্রতি ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা। যার হিসেব প্রতি মাসে দাড়ায় ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা। অটো বাণিজ্যে প্রকাশ্যে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এটিএসআই) আবুল বাশার।

নিজের তৈরী ভিজিটিং কার্ড লেমিনেশন করে অটোচালকদের শহরে প্রবেশ বৈধ করেন। বিনিময়ে আদায় করেন মাসোহারা। তার একান্ত সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন বাবুল। শহরের ডাক বাংলো মোড়ে অবস্থিত ট্রাফিক পুলিশের অস্থায়ী ডাম্পিং স্টেশনে গিয়ে দেখা যায় আবুল বাশারের সহযোগী বাবুল নিজেই জরিমানা আদায় করে তার রশিদ প্রদান করছেন ।শহরের কালিরবাজার ও আশে পাশের এলকায় অটো বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের অপর একজন সহকারী উপ-পরিদর্শক রঞ্জু তালুকদার ওরফে শহীদুল।

তার একান্ত সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন বিটুল। তিনিও নিজেই টাকা সংগ্রহ করে প্রদান করে রশিদ।তবে এসব টাকা রাষ্ট্রিয় কোষাগারে কিভাবে জমা হচ্ছে এবং আদায়কৃত পুরো টাকা আধৌও জমা হচ্ছে কিনা তার কোন সদুত্তর মিলেনি নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) সোহান সরকার এর কাছ থেকে।সরেজমিনে দেখা যায়, অটোপ্রতি বাধ্যতামুলক ১ হাজার টাকা প্রাদনের ক্ষেত্রে যারা ২শ বা ১শ টাকা কম দিতে সক্ষম হন তাদেরকে টাকা আদায়ের কোন রশিদ প্রদান করেননা।

রশিদ ছাড়া এসব টাকার নির্দিষ্ট হিসেব কিভাবে সংরক্ষণ করা হয় তার কোন জবাব মেলেনি ট্রাফিক কতৃপক্ষের কাছ থেকে। অপরদিকে বাংলাদেশ পুলিশে নিয়োগপ্রাপ্ত না হয়ে টাকা আদায় ও রশিদ প্রদান এমনকি গাড়ি আটক ও পুলিশি প্রভাব বিস্তার কিভাবে করছেন বাশার ও শহীদুলের দুই সহযোগী? এমন প্রশ্নে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (এ্যাডমিন) মি. করিম এ কর্মকান্ড গুলো সহযোগীরা করতে পারেননা বলে স্বীকার করেছেন।

সহযোগীদের নিয়োগ পক্রিয়া এবং তাদের বেতন কোন পক্রিয়ায় পরিশোধ করা হয়? পাশাপাশি এই অর্থের জোগান দেয়া হয় কোন মাধ্যম থেকে তার কোন উত্তর মেলেনি প্রসাশনিক দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশের এই কর্মকর্তার কাছ থেকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here