বরগুনায় জেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত হয়ে ইউপি সদস্য কে মারধর,বিচারের দাবীতে মানববন্ধন

0
বরগুনায় জেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত হয়ে ইউপি সদস্য কে মারধর,বিচারের দাবীতে মানববন্ধন

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি: বরগুনার তালতলীতে সদ্য অনুষ্ঠিত হওয়া জেলা পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের প্রার্থী দেলোয়ারা হামিদ পরাজিত হয়ে আক্রোশে সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা তার ভোটার সোনাকাটা ইউপি সদস্য নুরজাহান বেগম ও তার স্বামী মাসুদ পিয়াদাকে জনসম্মুখে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনা নিয়ন্ত্রনে আনার জন্য স্থানীয়রা ধরতে গেলে তাদের মধ্যে আরো ৩জন আহত হয়েছে। হামলার বিচার না হওয়া পযর্ন্ত সোনাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের সকল কার্যক্রম স্থাগিত ঘোষনা করেছেন চেয়ারম্যান। বৃহস্পতিবার উপজেলা শহরের বটতলা এলাকায় বিচারের দাবিতে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সদ্য শেষ হয়েছে জেলা পরিষদ নির্বাচন। বরগুনা সদর,আমতলী ও তালতলী নিয়ে সংরক্ষিত সদস্যা পদে নির্বাচনে প্রার্থী হন সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মিসেস দেয়োয়ারা হামিদ।

এ নির্বাচনে উপজেলার ৯৪ জন জনপ্রতিনিধি ভোট প্রদান করেন। এতে ঐ প্রার্থী মাত্র ১২টি ভোট পায়। ভোট কম পাওয়ায় উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য নুরজাহান বেগম তাকে ভোট দেয়নি বলে সন্দেহ হলে ওই প্রার্থী দেলোয়ারা হামিদের নাতি হৃদয়ের নেতৃত্বে ২০/২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী বুধবার বিকালে ঐ ইউনিয়নের লাউপাড়া বাজারে বসে তাকে ও তার স্বামী মাসুদ পেয়াদাকে বেধারক করে। ঘটনাটি নিয়ন্ত্রণের জন্য স্থানীয় কয়েকজন জনসাধারণ ধরতে গেলে তাদের মধ্যে ৩ জন আহত হয়।

আহতরা হলেও উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডর নুর হোসেন, রিয়াজ ও ছালাম। আহতরা সকলেই বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত সদস্য আবুল কালাম সিকদারের সভাপতিত্বে উপজেলার বটতলা এলাকায় এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সোনাকাটা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সহিদ আকন, টুকু সিকদার, বড়বগী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম লিটু, মোঃ সিদ্দিকুর রহমান ও ছোটবগী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মোঃ ফারুক হোসেন প্রমুখ।

এদিকে এই হামলার বিচার না হওয়া পর্যন্ত ঐ ইউনিয়নের জরুরী জনসেবা ছাড়া সকল কার্যক্রম স্থাগিত করার ঘোষনা দিয়েছেন চেয়ারম্যান ফরাজী মোহাম্মদ ইউনুস ও তার ইউপি সদস্যরা। ঐ ইউনিয়নের ৭,৮,৯ নং সংরক্ষিত ইউপি সদস্যা রাহিমা বেগম বলেন, জেলা পরিদষ সদস্য দেলোয়ারা হামিদ নির্বাচনে জয়ী হতে না পেরে নির্বাচনের জের ধরে আমার সহকর্মী নুরজাহানকে রাস্তায় ফেলে জনসম্মুখে মারধর করেন। আমরা এই হামলার বিচার চাই। আহত ইউপি সদস্য নুর জাহান বেগম বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনে দেলোয়ারা হামিদ বিজয়ী হতে না পারায় তার নাতি হৃদয় ফকির আমার কাছে ৩ লাখ টাকা দাবি করেন।

দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করায় আমিসহ আমার স্বামীর ওপর হামলা করেন। এ সময় আমার গলার চেইন, হাতের আংটি ও আমার স্বামীর পকেট থেকে ১২ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।সোনাকাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফরাজী মো. ইউনুচ বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনে দেলোয়ারা হামিদকে ভোট না দেওয়াতে তার নাতি হৃদয় ফকির আমার পরিষদের সদস্য নুরজাহানকে নিয়ে বিভিন্ন কটুক্তিমূলক কথাবার্তা বলেন । তিনি বলেন জেলা পরিষদ নির্বাচন চলাকালীন সময়ে আমার অনুপস্থিতে ঐ প্রার্থী পরিষদে এসে জোর করে নির্বাচন উপলক্ষে সকল ইউপি সদস্যকে ৫ হাজার টাকা করে দেয়। তবে কেউ নিয়েছে কেউ নেয়নি। তবুও বলেছি তোদের টাকা তোরা নিয়ে যা।

এ কারনে আমার সদস্যকে জনসম্মুখে মারধর করাটা খুবই দুঃখজনক। এই হামলার বিচার না হওয়া পর্যন্ত জরুরী জনসেবা ছাড়া পরিষদের সকল কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।এবিষয়ে হৃদয়কে পাওয়া না গেলে প্রার্থী মিসেস দেলোয়ারা হামিদ মোবাইল ফোনে বলেন, আমার নির্বাচনের জন্য ঐ ইউনিয়নের সকল সদস্যরা ভোট দিবে বলে আমি ৫ হাজার টাকা করে দেই। ওই ইউনিয়নের সদস্য নূরজাহান আমার সম্পর্কে বেয়াইন হয়। সেই সুবাদে আমার নাতি হৃদয় তার কাছে ভোটের কথা জিজ্ঞেসা করে।

এ নিয়ে তাদের মধ্যে কাটাকাটির একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। আমি এর বেশি কিছু জানিনা। এবিষয়ে তালতলী থানার ভারপ্রার্প্ত কর্মকর্তা কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, এ ঘটনায় ৮জনকে আসামী করে থানায় মামলা হয়েছে। তবে কেউ গ্রেফতার হয়নি।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here