ঝিনাইদহের শৈলকুপায় হত্যা মামলার আসামী পেলেন নৌকার মনোনয়ন !

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি:সপ্তম ধাপে অনুষ্ঠিত ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মনোহারপুর ইউনিয়নে নৌকারমনোনয়ন পেয়েছেন হত্যা মামলার আসামী জাহিদুল ইসলাম জাহিদ। শৈলকুপাছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক জাহিদ রাশিদুলইসলাম শৈলকুপার উকিল মৃধা হত্যা মামলার ২৪ নং আসামী। তবে তিনি এ মামলায়জামিনে আছেন। হত্যা মামলার আসামী নৌকার মনোনয়ন পাওয়ায় এ নিয়ে দলের মধ্যেশোরগোল শুরু হয়েছে। তৃণমুলে বিভেদ ও দ্বন্দ ছড়িয়ে পড়েছে।

ক্ষোভ দেখা দিয়েছেজেলা উপজেলা আওয়ামীলীগেও। জাহিদের প্রতিপক্ষরা নৌকার মনোনয়ন বাতিলের দাবীজানিয়ে মাঠ গরম করছেন। করেছেন মনোনয়ন বোর্ডের কাছে আপীল। পুলিশ সুত্রেজানা গেছে, শৈলকুপার দামুকদিয়া গ্রামে গত বছরের ২৫ জুলাই সামাজিক দলাদলিরজের ধরে রাশিদুল ইসলাম ওরফে উকিল মৃধা (৪৫) নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মী খুন হন। হত্যাকান্ডের পর গ্রামটিতে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করা হয় বলে অভিযোগ। উকিলমৃধা হত্যার জন্য আওয়ামী লীগের জাহিদ গ্রæপ কে দায়ী করেন নিহত’র ভাতিজাআজমীর শরীফ।

তিনি জানান, গত বছরের ২৩ জুলাই আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গ্রামে মারামারি হয়। বিষয়টি মীমাংসার জন্য ২৫ জুলাই রাতে শৈলকুপা থানা পুলিশের আহবানে সাড়া দিয়ে বৈঠকে যোগ দিতে রওনা হন উকিল মৃধা। কিন্তু পথের মধ্যেই তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত’র স্ত্রী মনোহরপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বরওয়ার্ডের মেম্বার তানিয়াা খাতুন ২৬ জুলাই বাদী হয়ে ২৮ জনের নাম উল্লেখ করেএকটি হত্যা মামলা করেন। এই মামলায় নৌকার মনোনয়নপ্রাপ্ত যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম জাহিদ ২৪ নং আসামী। ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নুরুল আমিন ওসম্পাদক আব্দুর রশিদ জানান, খুনের মামলার আসামীকে মনোনয়ন দেওয়ায় তৃণমুলে বিভেদ ছড়িয়ে পড়েছে।

এদিকে একজন হত্যা মামলার আসামী কি ভাবে নৌকারমনোনয়ন পেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শৈলকুপা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম- সাধারন সম্পাদক ও মনোহরপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তফা আরিফ রেজামন্নু। তিনি নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে নিজে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। আরিফ রেজা মন্নু বলেন ১৯৮৬ সাল থেকে তিনি অধ্যক্ষ কামরুজ্জামানের হাত ধরে আওয়ামী রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ১৯৯৮ সালে বিএনপির শক্তি ইউপি প্রার্থীকে হারিয়ে প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯ বছর উপজেলা আওয়ামলীগের সদস্য থাকার পর ২০১৫ সালে ডেলিগেটদের সরাসরি ভোটে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

তিনি অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালে উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের পক্ষে কাজ করায় শৈলকুপার এক প্রভাবশালী নেতার রোষানলে পড়েন। সে কারণে নৌকার মনোনয়ন পাননি। মন্নু দাবী করেন তিনি জীবনে কখনো নৌকার বিপক্ষে ভোট করিনি। অথচ জেলাআওয়ামীলীগের সভাপতি ও সম্পাদকের রেজুলেশন বাদ দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে আমার মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে মনোনয়ন বোর্ডের কাছে আপীল করেছেন বলে জানান মন্নু। তিনি আরো বলেন, তার পিতা একজন মুক্তিযোদ্ধা। যার সনদ দিয়েছেন স্থানীয় এমপি আব্দুল হাই।

এছাড়া তার পরিবারে কোন জামায়াত বিএনপি নেই। বিষয়টি নিয়ে নৌকার মনোনয় প্রাপ্ত যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, ষড়যন্ত্র করে আমাকে হত্যা মামলার আসামী করা হয়েছে। ঘটনার দিন তিনি শৈলকুপা থানায় তৎকালীন ওসি জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে একটি শালিস বেঠকে ছিলেন। পুলিশ আসল সত্যটি জানে বিধায় দ্রæত তিনি জামিন পান। তিনি যে বকুল মৃধা হত্যার সঙ্গে জড়িত না তা ইউনিয়নের শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত কেও বিশ্বাস করেনি। তিনি দাবী করেন তার প্রতিপক্ষ বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নু তাকে খুনের মামলায় ফাঁসিয়েছেন, যাতে নৌকার মনোনয়ন না পায়।

জাহিদের ভাষ্য, মনোহরপুর ইউনিয়নের তৃনমুলসহ সাধারণ ভোটারদের ৯৫ ভাগ তার সঙ্গে আছেন। তিনি বিপুল ভোটে জয়ী হবেন। কোন ষড়যন্ত্র তাকে দমাতে পারবে না। তিনি বলেন মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নুর পরিবারে রাজাকার, বিএনপি ও জামায়াত রয়েছে বলে দাবী করেন জাহিদ। উল্লেখ্য সপ্তম ধাপে অনুষ্ঠিত শৈলকুপার মনোহরপুর ইউনিয়নে আগামী ৭ ফেব্রয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here