বরগুনায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগাম তথ্য দেওয়া আবহাওয়া তথ্য বোর্ডটি অকেজো

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ বরগুনা প্রতিনিধি : বরগুনার বেতাগীতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা ও কৃষি বিষয়ে চাষীদের আগাম তথ্য দিতে আবহাওয়া তথ্য বোর্ড ও অটোমেটিক রেইনগজ স্থাপন হলেও কৃষকদের তা কোন কাজে আসছে না। দুই বছরেও চালু না হওয়ায় ভেস্তে যাচ্ছে সরকারি উদ্যোগ। কৃষিকে ঝুঁকিমুক্ত করতে চাষীদের আগাম পূর্বাভাস সুবিধা তো দুরের কথা নষ্ট হচ্ছে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকা লাখ লাখ টাকার যন্ত্রপাতি।

কোথাও কোথাও খুলে পরছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরগুনার উপপরিচালক আবদুর রশিদ জানিয়েছেন দুর্যোগের বিষয়ে সচেতনতা বাড়িয়ে খাদ্য শস্যসহ বিভিন্ন ফসল রক্ষায় চাষিদের আগাম তথ্য দিতে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতিকরণ প্রকল্পের আওতায় এ উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় চত্বরে বসানো হয় আবহাওয়া তথ্য বোর্ড। এ জন্য প্রতিটি ইউনিয়নের অনুকূলে কৃষি অফিসে দেওয়া হয় ট্যাবসহ আনুষঙ্গিক বিভিন্ন যন্ত্রপাতি।

তবে উপজেলার কাজিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে তথ্য বোর্ড বসানো হলেও সেখানে এখনো পৌঁছানো হয়নি প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। বরং সেখানকার অটোমেটিক রেইনগজ প্রকল্পের সাথে জড়িতদের তদারকির অভাবে ভুলক্রমে বসানো হয়েছে উপজেলা কৃষি অফিসে। এ তথ্য বোর্ডের মাধ্যমে চাষিদের প্রতিদিনের খরা, ঝড়-বৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, দাবদাহ, শীত, কুয়াশা, বন্যাসহ যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয়ে আগাম তথ্য সেবা দেওয়ার কথা। আবহাওয়া কবে কেমন থাকবে এবং চলতি ফসলের জন্য তা কতটুকু উপকারী ইত্যাদি বিষয় কৃষকরা এ তথ্য বোর্ডের মাধ্যমে জানতে পারবেন। আগাম তথ্যের ভিত্তিতে তারা ফসল রক্ষায় প্রস্তুতি নিতে পারবেন।

কিন্তু দীর্ঘ দুই বছরেও এ তথ্য বোর্ড চালু না হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন চাষিরা। সরেজমিনে বেতাগী উপজেলার সদর ইউনিয়নে গিয়ে কার্যালয়ের সামনে আবহাওয়া তথ্য বোর্ড ও কেন্দ্র স্থাপন দেখা যায়। তবে বোর্ডে হালনাগাদ কোনো তথ্য তো দুরে থাক বরং বোর্ডটি খুলে পরছে। দীর্ঘদিন পড়ে থেকে নষ্ট হতে বসেছে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। একই দশা বিবিচিনি, মোকামিয়া, হোসনাবাদ, বুড়ামজুমদার ও সড়িষামুরি ইউনিয়ন পরিষদের। কৃষি তথ্যসেবা চালু না হওয়ায় এসব ইউনিয়নের কৃষকরা সুফল পাচ্ছেন না।

স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করেন, অবশ্য সরকারি প্রকল্পের কাজ-কারবার এমনই। দুর্যোগে ফসলের ক্ষতি হলেও কারো কোন মাথা ব্যথা নেই। বিবিচিনি ইউনিয়নের গড়িয়াবুনিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল হামিদ বলেন, দুই বছর আগে ইউনিয়ন পরিষদে কৃষকদের আবহাওয়ার তথ্য দেওয়ার জন্য কিছু মেশিনপত্র লাগানো হয়। কিন্তু লাগানোর পর থেকে আজ পর্যন্ত ওই মেশিনপত্র থেকে আমরা কোন উপকার পাইনি। উপজেলার প্রত্যন্ত পল্লী সড়িষামুড়ি ইউনিয়নের কালিকাবাড়ি গ্রামের কৃষক ফিরোজ মিয়া বলেন, ‘খরা ও অতিবৃষ্টিতে প্রতিবার ফসলের ক্ষতি হয়।

মাঠে ফসল রেখে আমরা ঘুমাতে পারি না। আগাম কৃষি তথ্য পাওয়ার খবরে খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু দুই বছরেও ইউনিয়নে গিয়ে কিছু পাইনি। বেতাগী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, তথ্য দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি থাকলেও লোকবল এবং প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষনের অভাবে এটি চালু করা যাচ্ছে না। বিশেষ করে প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্টদের তদারিকর অভাবে সরকারের এ মহৎ উদ্যোগটি ভেস্তে যেতে বসার উপক্রম হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here