প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ রাজশাহীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীরা পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার বেলা ১১টার দিকে নগরের জিরো পয়েন্টে জড়ো হন। এ সময় তাদের প্রতীকী কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। দুপুরে রাজশাহী নগরের সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, ছাত্রলীগের কর্মীরা তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছেন। তবে মহানগর ছাত্রলীগ বলছে, তাদের কেউ এই হামলায় ছিলেন না। সাহেববাজার জিরো পয়েন্ট থেকে শিক্ষার্থীরা গণচিৎকার ও পদযাত্রা করতে চাইলে অনুমতি না থাকার কথা জানিয়ে প্রথমে পুলিশ বাধা দেয়। পরে সেখানেই শিক্ষার্থীরা সমাবেশ শেষে বেলা পৌনে একটার দিকে প্রতীকী অনশনে বসেন। পুলিশ তাদের ঘিরে ছিল। বেলা একটার দিকে সেখানে হামলার ঘটনা ঘটে।
গত ২১ আগস্ট সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীরা ১ সেপ্টেম্বরের আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। তা না হলে তখন থেকে প্রতীকী অনশন কর্মসূচি চালানোর ঘোষণা দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী আজ তারা কর্মসূচি পালন করতে আসেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাজশাহী নিউ গভর্নমেন্ট ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী নাদিম সিনা বলেন, তাদের এই কর্মসূচিতে শুরু থেকেই পুলিশের অসহযোগিতা ছিল।
তারা এ কারণে গণচিৎকার ও পদযাত্রা বের করতে পারেননি। পরে তারা বাধার মুখে সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে সমাবেশ করার চেষ্টা করেন। সেখানেও পুলিশের ভ্যান রাখা হয়। বিপুলসংখ্যক পুলিশও মোতায়েন ছিল। বেলা একটার দিকে তারা ওই জায়গায় বসে অনশন করছিলেন, এমন সময় পুলিশের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের কর্মীরা হামলা চালান। হামলায় তাদের অনেকেই আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে বিকেল পাঁচটার দিকে তারা সংবাদ সম্মেলন করবেন।
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে নগর ছাত্রলীগের সভাপতি সিয়াম আহমেদ বলেন, ঢাকায় তাদের কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠান ছিল গত ২৯ আগস্ট। তাদের নেতা-কর্মী অনেকে এখনো ঢাকাতেই আছেন। কিছু নেতা-কর্মী আজ ভোরে রাজশাহীতে চলে এসেছেন। এই হামলার সঙ্গে তাদের কেউ নেই। বরং নৈতিকভাবে তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার এই আন্দোলনকে সমর্থন করেন। যেখানে সবকিছুই খোলা রয়েছে, সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতে পারে না।
এর আগে সমাবেশে বক্তারা বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় জাতি মেধাশূন্য হয়ে পড়ছে। করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ বলা হলেও আসলে এর পেছনে রাজনীতি রয়েছে। আর এটি সরকারের একজন মন্ত্রীর কথায় স্পষ্ট হয়েছে বলেও তারা অভিযোগ করেন।
সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন রাকসুর সাবেক ভিপি রাগিব আহসান, অভিভাবক মাহমুদ জামাল কাদেরী প্রমুখ। রাজশাহীর বেসরকারি নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ইশতিয়াক আহমেদের সভাপতিত্বে ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহব্বত হোসেন মিলনের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন ছাত্রনেতা তামিম শিরাজী, শিক্ষার্থী আমানুল্লাহ খান, নাদিম সিনা, জান্নাতুল সাবিরাসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা।
হামলার বিষয়ে জানতে নগরের বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মনকে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।