ফরিদপুরে ৫ বছর ধরে মনিরুল কাজী চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি : ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় ময়না ইউনিয়ন বান্ধুগ্রামে প্রায় ৫ বছর ধরে মানবেতর জীবন যাপন করছে মো: মনিরুল কাজী (৩১) নামে এক যুবক ও তার পরিবার । হটাৎ একটা দুর্ঘটনায় মনিরুল কাজীর মাজার ও হাতের হাড় ভেঙ্গে যায়। অন্য দিকে বৃদ্ধ অসুস্থ পিতা টাকার অভাবে ছেলের চিকিৎসা করাতে পারছেন না।

বন্ধ রয়েছে চিকিৎসা। দু’বেলা দুমুঠো ভাত জোগাড় করা পিতার পক্ষে এখন অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরজমিনে গিয়ে জানাগেছে, মনিরুল কাজী নিজ বসতবাড়ির ছোট একটা ভাঙা ঘরে মানবেতর জীবন যাপন করছে। সংসারে অভাব-অনটন থাকায় চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না তার। এদিকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি দীর্ঘ সময় অসুস্থ থাকায় তার মা এবং বৃদ্ধ বাবা এখন অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে । বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের বান্ধুগ্রামের কাজী আবুল হোসেন ৩ ছেলে মেয়ের মধ্যে মনিরুল কাজী সবার বড়।

অন্য দুই বোনের বিয়ে হয়েছে। সে ছোট বেলা থেকেই পড়ালেখার পাশাপাশি সাংসারিক কাজে ব্যস্ত থাকতো। কিন্তু আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারনে পাশে শ্যামল সাহার ইটের ভাটাতে দিন হিসেবে শ্রমিকের কাজ করত। শ্রমিকের কাজ করতে গিয়ে ক্লিম থেকে পরে মাজার ও হাতের হাড় ভেঙ্গে যায়। সেই থেকে মনিরুল বিছানা পড়ে আছে। অল্প বয়সে সংসারের হাল ধরেতে গিয়ে তাকে পড়াশোনা ইতি টানতে হয় । এরপর দুর্ঘটনার পর স্ত্রী মনিরুল কাজীকে ফেলে রেখে সন্তান নিয়ে চলে যায়। আর ফিরে আসেনি মনিরুল এর কাছে।

মনিরুলের পিতা কাজী আবুল হোসেন জানান, দীর্ঘ ৫ বছর ধরে তাঁর সন্তান বিনা চিকিৎসায় পড়ে আছে । দুর্ঘটনার সময় ভাটার মালিক শ্যামল বাবু ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেন এবং বিভিন্ন সময় নগদ ১ লক্ষ টাকা দেন। ঢাকার একটা সমাজ সেবি সংগঠন সমাজ কল্যান আমরা ছেলের চিকিৎসা জন্য ৮০ হাজার টাকা দেয়।অন্য দিকে আমার কাছে যা ছিল সবই ব্যয় হয়েছে ছেলের চিকিৎসা করাতে। এখন আমি নিঃস্ব। বয়সের ভারে আমি চলতে পারি না।

এক সময় আমি ইট ভাঙ্গার কাজ করতাম, আমি এখন অসুস্থ আমাকে কেউ কাজে নেই না। চোখের সামনে বিনা চিকিৎসায় ছেলের মৃত্যু হবে এটা মানতে পারি না। তিনি আরও বলেন, এলাকায় মেম্বার বাচ্চু মোল্লা আমার ছেলেকে একটা প্রতিবন্ধী কার্ড করে দিয়েছে। কিন্তু তা দিয়ে কোন রকম চলে যাচ্ছে। মনিরুল কাজীর মা জানায়,পরের বাড়িতে কাজ করে স্বামী ও ছেলে মনিরুল কে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। পেট পুরে তিন বেলা খাবার খাওয়ার সামর্থ্য নেই। পরের কাজ করে স্বামীর সংসারের খরচ চালাতে হয় ।

কিন্তু করোনার কারনে তার তেমন কোন কাজ নেই। তাই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি দীর্ঘ সময় অসুস্থ স্বামী ও ছেলেকে নিয়ে এখন মানবেতর জীবন যাপন করছি। ময়না ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার বাচ্চু মোল্লা বলেন, ঘরে পড়া অসুস্থ মনিরুল ও তার পরিবারকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সাধ্য অনুযায়ি সহযোগিতা করা হয়। মেম্বার বাচ্চু মোল্লা আরও বলেন, সমাজের ধনীরা বা বৃত্তবানরা যদি এগিয়ে আসতো এবং সরকার থেকে যদি সাহায্য করতো তাহলে মনিরুল কাজী সহ বেঁচে যেত একটা পরিবার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here