না’গঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্টফিসে ভোগান্তির মূলে রয়েছে শক্তিশালী দালাল চক্র।

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নিজস্ব প্রতিবেদক: নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কার্যালয় বদলালেও বদলায়নি গ্রাহকদের ভোগান্তির চিত্র। এ ভোগান্তির মূলে রয়েছে শক্তিশালী দালাল চক্র। দালাল মিললে সহজেই মিলবে পাসপোর্ট। অন্যথায় সঠিক নিয়মে মিলবে দুঃসহ ভোগান্তি! এছাড়া জরুরী পাসপোর্টও মিলছেনা সঠিক সময়ে। জরুরী ক্ষেত্রে ৭ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট গ্রাহকের হাতে পৌছানোর কথা থাকলেও পুলিশ ভেরিফিকশেনেই কেটে যায় বহুদিন।

শুধু কী তাই? অদক্ষ কম্পিউটার অপারেটরদের দিয়ে তথ্য সংগ্রহ করানোর ফলে প্রায় সময়ই পাসপোর্টে উঠে আসছে ভুল তথ্য। ফলে অতিরিক্ত অর্থব্যয়ে পাসপোর্ট সংশোধন করতে হচ্ছে গ্রাহকদের। এতে সময়ও ব্যায় হচ্ছে অতিরিক্ত। এমন ভোগান্তি সত্যেও বর্তমানে প্রকাশ্যে এসেছে পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত স্টাফদের দুর্ব্যবহার। গ্রাহকদের সাথে অশোভন আচরণ করে থাকে অফিস সহকারী থেকে শুরু করে অফিসাররাও। সম্প্রতি আজমল নামে এক গ্রাহক অফিস সহকারী মহসিনের দূর্ব্যবহারের শিকার হয়। ধৈর্য্যর বাঁধ ভাঙ্গে আজমলের।

ত্যাক্ত হয়ে কাউন্টারের গ্লাসই ভেঙ্গে ফেলেন তিনি। এতে আহত হয় অফিস সহকারী। যদিও গ্রহাক আজমল বলছেন, এমন ঘটনার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না তিনি। স্টাফদের দূর্ব্যবহারেই চটেছিলেন। এতেই বাধে বিপত্তি। ঘটনার সূত্রপাত যেকারণেই হোক, আসামী হয়ে শ্রীঘরে যেতে হয়েছে গ্রাহককে।

অভিযোগ রয়েছে, নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে রয়েছে একটি শক্তিশালী দালাল চক্র। এই চক্রের মূল হোতা স্থানীয় কাউন্সিলরের ভাই আলমগীর। এর আগে র‌্যাবের সিনিয়র এএসপি আলেপ উদ্দিনের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয় পাসপোর্ট অফিসে। ওই অভিযানে দালাল চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। র‌্যাবের এই অভিযানের পর কিছুটা কমে ছিলো দালাল চক্রের দৌরাত্ম। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে তা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।

গ্রাহকদের অভিযোগ, দ্রুত পাসপোর্ট দেয়ার নাম করে দালালরা হাতিয়ে নেয় ২ গুণেরও বেশি অর্থ। প্রায় সময়ই টাকা হাতিয়ে নেয়ার পর আর খুঁজে পাওয়া যায়না দালালদের। ডেলিভারি স্লিপের ফটোকপি গ্রাহকের হাতে দিয়ে পরবর্তীতে মূল স্লিপের জন্য অধিক অর্থ দাবি করে কেউ কেউ। এরপর পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে দালালদের পেছনে ছুটতে হয় গ্রাহকদের।

গ্রহাকদের আরো অভিযোগ, দালালদের সাথে পাসপোর্ট অফিসের একশ্রেনীর অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে সক্ষতা রয়েছে। দালালদের প্রাপ্ত অর্থের একটি অংশ চলে যাচ্ছে অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীদের হাতে। আর তাই, এসব দালালদের বিরুদ্ধে কার্যকরী কোন উদ্যোগও নিতে দেখা যায়না সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে। এদিকে, ওই অসাধু কর্মকর্তারা সঠিক নিয়মে গ্রাহকদের সেবা দিচ্ছে না। নানা ধরনের বাহানায় অতিরিক্ত সময় অপচয় হয়ে থাকে। অতঃপর বাধ্য হয়েই উৎকোচ দিয়ে থাকেন গ্রাহকরা।

সাধারণ গ্রাহকেরা বলছেন, জরুরি পাসপোর্ট করতে ব্যাংকে যে টাকা জমা দেয়ার কথা রয়েছে আমরা তাই দিচ্ছি। জরুরি পাসপোর্ট পেতে টাকা দিতে হয় ৬ হাজার ৯ শত টাকা ভ্যাট সহ ৭ হাজার। ডেলিভারি দেয়ার কথা ৭ দিনে, কিন্তু সেই পাসপোর্ট ৯০ দিনেও পাওয়া যায় না।

এমনসব ভোগান্তির বিষয়ে জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন রিসিভ করেনি নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান। তবে, একই প্রসঙ্গে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের অফিসের কারো সাথে দালালদের সাথে সক্ষতা নেই। দালাল থাকলে তাই বাইরে, অফিসে নয়।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here