প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত দুই জনের সংস্পর্শে আসায় চারজন স্থানীয় ও একজন চীনা নাগরিককে কোয়ারেন্টাইনে (পর্যবেক্ষনে) রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ। তাদের নিজ বাড়িতেই বিশেষ ব্যবস্থায় তাদের রাখা হয়েছে। তারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত নয় বলেও জানিয়েছেন সিভিল সার্জন।
অন্যদিকে উচ্চমুল্যে মাস্ক বিক্রি করায় ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। গত কয়েকদিন ধরে নগরীতে ও আশপাশে ২০ থেকে ৩০ টাকা মুল্যের মাস্ক বিভিন্ন ফার্মেসীতে ও ভাসমান বিক্রেতারা ১২০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করতে থাকে। এটা রোধ করতে মঙ্গলাবার বিকেল তিনটায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মেহেদী হাসান ফারুক, আব্দুল মতিন খান ও নাসরিন সুলতানা নগরীর কালিরবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে ৯০ হাজার টাকা জরিমানা নগদ আদায় করেন। এসময় একজনকে এক মাসের জেলা দেয়া হয়।
নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মেহেদি হাসান ফারুক জানান, বিভিন্ন ফার্মেসী সার্জিক্যাল মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যাক্সিসোলের মুল্য বৃদ্ধি করেছে। এতে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরী হচ্ছে। আতঙ্ক নিরসনে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের নির্দেশে আমরা কালিরবাজারের পাইকারি ঔষুধের দোকানগুলিতে অভিযান চালাই। যারা বেশি মুল্যে মাস্ক বা উল্লেখিত সামগ্রী বিক্রি করেছে বলে প্রমান পেয়েছি তাদের জরিমানা করা হয়েছে। এসব জিনিস অধিক মুল্যে বিক্রি করবেন না এবং একটির বেশি বিক্রি করবেন না -এ মর্মে আমরা বেশকিছু দোকানের মুচলেকা পত্রও নিয়েছি। প্রতিটি দোকানে এসব সামগ্রীর মুল্য তালিকা ঝুলিয়ে দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কেউ তা না করলে আমরা আবারো ব্যবস্থা নিবো। আমাদের অভিযান অব্যহত থাকবে।
অভিযানে থাকা জেলা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক ইকবাল হোসেন জানান, বিশ্বজিৎ দাস নামের একজনের কাছে আমরা পরিচয় গোপন করে মাস্ক কিনতে যাই। তিনি উচ্চ মুল্যে আমাদের কাছে মাস্ক বিক্রিও করেন। এবং উচ্চ মুল্য দিলে আরো মাস্ক সরবরাহ করতে পারবেন বলে জানান। এজন্য তাকে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এক মাসের জেল প্রদান করেন।
সিভিল সার্জন ডা.ইমতিয়াজ বলেন, বিদেশ থেকে যারা দেশে ফেরেন তাদের ১৪ দিন স্বাভাবিক পর্যবেক্ষনে রাখা হয়। সে হিসেবে চীনা এক নাগরিককে পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে। এছাড়া আক্রান্ত দুইজনের পরিবারের চারজনকেও কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তারা কিন্তু এখনো করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত নয়। কোয়ারেন্টাইন মানে হচ্ছে, সন্দেহভাজনদের ১৪ দিন বদ্ধ ঘরে পর্যবেক্ষনে রাখা।
নারায়ণগঞ্জে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত দুইজন রোগী শনাক্তের পর প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তক্রমে জেলা মাল্টি সেক্টরাল কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিনকে সভাপতি এবং জেলা সিভিল সার্জনকে সদস্য সচিব করে এই কমিটি করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জে কোয়ান্টারাইনের জন্য প্রতিটি সরকারি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালে পাঁচ শয্যার কক্ষ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। করোনা আক্রান্ত কিংবা সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের চিকিৎসা প্রদানে শহরের পুরাতন কোর্ট এলাকায় নির্মিত চীফ জুডিশিয়াল কোর্ট (সিজেএম) ভবনে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।