প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জে ব্যবসার নামে সহজ সরল মানুষ ও বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে ব্যবসা ছেড়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে সজিব নামে এক যুবক। পাওনাদারসহ ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের টাকা দীর্ঘদিন ধরে পরিশোধ না করার কারণে ইতিমধ্যে ৩ ব্যবসায়ী সজিবের বিরুদ্ধে পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করেছেন। কিন্তু সজিব প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে উল্টো পাওনাদারদের বিভিন্ন ভাড়াটে লোক দিয়ে নানা প্রকার ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ জানান।
ঘটনার বিবরনে জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল চৌধুরীবাড়ি সৈয়দপাড়া এলাকার আবুল খন্দকারের বাড়ির ভাড়াটিয়া ফজলু মিযার ছেলে সজিব ঢাকার ইসলামপুরে কাপড়ের ব্যবসা করার সময়ে একাধিক ব্যবসায়ীর সাথে পরিচয় সূত্রে লাখ লাখ টাকা গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ব্যবসায়ীদের সে টাকা পরিশোধ করতে না পেরে শাখার ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার ২টি চেক প্রদান করে কিন্তু চেক নিয়ে ব্যাংকে গিয়ে দেখেন তার একাউন্টে কোন টাকা নেই। পরবর্তীতে সজিবের নামে জুনায়েদ, রিদিকা ফ্যাশন ও এবাদত মিয়া নামে তিন ব্যবসায়ী আদালতে ৩টি চেক জালিয়াতির মামলা করেন।
পরে সে তার ব্যাংক হিসাব বন্ধ করে দেয় বলে ভুক্তভোগীরা জানায়। সজিবের কাছে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী সব মিলিয়ে অন্তত অর্ধকোটি টাকা পাওনা রয়েছে। গত শনিবার ঢাকার ইসলামপুর থেকে পাওনাদার কয়েকজন ব্যবসায়ী সিদ্ধিরগঞ্জের চৌধুরীবাড়ি ব্যবসায়ী এসোসিয়েশনে এসে সজিবের প্রতারনার বিষয়টি খুলে বলেন এবং টাকা আদায়ের জন্য সার্বিক সহযোগিতা চান। ওই ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি যুবলীগ নেতা মহসিন ভুইয়াসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীর া ভুক্তভোগীদের শান্ত করে টাকা আদায়ের ব্যাপারে চেষ্টার আশ^াস দিয়ে তাদের বিদায় করে দেন। পরের দিন রবিবার এ বিষয়ে সজিবকে ব্যবসায়ী এসোসিয়েশনে থেকে ডেকে পাঠালে সে সরাসরি না এসে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বলেন রুবেলের কাছে আপনাদের জন্য ১০ হাজার টাকা পাঠিয়েছে ঢাকার ব্যবসায়ীদের বিদায় করার কারণে খুশি হয়ে।
কিন্তু রুবেলকে ডেকে পাঠানোর পর সে বলেন এ বিষয়ে কিছুই জানেন না এবং স জিব কোন টাকা দেয়নি। একই দিন সজিব ও রুবেলকে মুখোমুখি করা হলে সজিব রুবেলকে কোন টাকা দেয়নি বলে শিকার করে। এসময় সজিবের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বুলবুল নামে এক ব্যবসায়ী চড়থাপ্পর মারে। পরে সজিব চরথাপ্পর খেয়ে তার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা উৎকোচ চাওয়া হয়েছে দাবি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মহসিন ভুইয়া, বুলবুল, রুবেলসহ বেশ কয়েকজন যুবলীগ নেতা ও ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।এ ব্যাপারে নাসিক ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা বলেন, সজিব চড়থাপ্পর খেয়ে আমার কাছে এসেছিল। আমি পুরোপুর ঘটনা জানি না তাই সজিবকে বলেছি আইনের আশ্রয় নেয়ার জন্য।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ফারুক বলেন, সজিব যে অভিযোগ দায়ের করেছে এটা মামলা হওয়ার কিছুই নয়।চৌধুরীবাড়ি এলাকার পাওনাদার নারগিছ জানান, আমার কাছ থেকে সজিব ব্যবসার জন্য ৭০ হাজার টাকা নিয়ে আর ফেরত দেয়নি।দুলাল ও আলামিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সজিব প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে আমাদেরসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এখন সেই টাকা কাউকে ফের দিচ্ছে না। চৌধুরীবাড়ি পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: সামাদ মোল্লা বলেন, সজিব প্রতারনা করে সাধারন মানুষের ও বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর টাকা মেরে দিয়েছে। বিচারের নামে কেউ তার কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা চায়নি। আমিও সে সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম।
চৌধুরীবাড়ি ব্যবসায়ী এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি খায়রুল আলম বলেন, সজিব রুবেলের কাছে ১০ হাজার টাকা দিয়েছে এমন অভিযোগ মিথ্যে প্রমান হওয়ায় তখন স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতা ও ব্যবসায়ী বুলবুল উত্তেজিত হয়ে সজিবকে চড়থাপ্পর মারে। এ ছাড়া আর কোন ঘটনা ঘটেনি। এ ব্যাপারে সজিব জানায়, টাকা নিয়েছি তবে এত টাকা হবে না। ব্যবসায় ধরা খেয়েছি, হাতে টাকা এলে পাওনাদারদের টাকা পরিশোধ করে দিব।