প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ জেলা সংবাদদাতা: উজান থেকে পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে কুড়িগ্রামের ১৬টি নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিকেল পর্যন্ত দুধকুমার নদীর পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এছাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে তিস্তা ও ধরলার পানি। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঙ্গা ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন এবং উলিপুর উপজেলার থেতরাই ও বজরা ইউনিয়নে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
এদিকে ভাঙন প্রতিরোধে বজরা ইউনিয়নে ঠিকাদার নিয়োগ করা হলেও পানিবৃদ্ধির কারণে কাজ শুরু হয়নি। ফলে চলতি সপ্তাহে ৬টি বাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। হুমকিতে রয়েছে ১০টি বাড়ি এবং একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।বজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাইয়ুম সর্দার জানান, গত এক সপ্তাহে কালপানি বজরা ও সাধুয়াদামারহাট গ্রামের শাহজাদি, আশরাফুল, হান্নান, মুকুল, মজিদা ও রোসনার বাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে।
এতে আরও ১০টি বাড়ি এবং একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝুঁকিতে রয়েছে। ওই এলাকার সাতালষ্কার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আনোয়ারা জানান, কাল যে রাস্তা দিয়ে স্কুলে গেছি, আজ সেই জায়গা নদীগর্ভে চলে গেছে। যে কোনো সময় দুটি স্কুল নদীগর্ভে চলে যেতে পারে। সাধুয়াদামারহাট গ্রামের ফুলবাবু জানান, নদী তার ২ বিঘা জমি খেয়ে গেছে। তার মতো মোফাজ্জল ও আশরাফুলের বসতবাড়ি নদীতে চলে গেছে। সরকারিভাবে আমরা নদী ভাঙন রোধে কাজ চাই।
উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নয়ন কুমার সাহা বলেন, আমি ভাঙন কবলিত বজরা ও থেতরাই ইউনিয়ন পরিদর্শন করেছি। জনপ্রতিনিধিদের তালিকা তৈরির জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমাদের কাছে ৩২০টি শুকনো খাবার প্যাকেট রয়েছে। এছাড়া জিআর’র চাহিদা প্রদান করা হয়েছে। দুধকুমার নদীতে পানিবৃদ্ধির ফলে নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত এই নদীর পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
পানি বৃদ্ধির ফলে নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভের কাস ইউনিয়নের ফান্দের চরে ৪ থেকে ৫টি নিচু বাড়িতে পানি উঠেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। একইভাবে ওই উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের কুটি বামনডাঙ্গা চরে নিচু এলাকায় অবস্থিত দুটি বাড়িতে পানি উঠছে বলে স্থানীয় যুবক আশরাফুল ও কাদের জানিয়েছেন। নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিব্বির আহমেদ জানান, আমরা বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ-খবর নিচ্ছি।
এখন পর্যন্ত বাড়ি তলিয়ে যাওয়ার কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে কিছু নিচু বাড়ি জলবন্দী রয়েছে বলে জেনেছি। তিনি আরও জানান, যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল মতিন জানান, প্রস্তুতি হিসেবে আমাদের কাছে ২ হাজার ৫শ’ প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ৪৪০ মেট্রিক টন জিআর চাল মজুদ রয়েছে। ক্যাশে টাকা রয়েছে ১৪ লাখ।
তালিকা পেলেই আমরা সাথে সাথে উপজেলাগুলোতে বরাদ্দ দিয়ে দেব। এছাড়া প্রতি উপজেলায় ৩২০ প্যাকেট শুকনো খাবার সরবরাহ করা আছে।





