প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি: সিদ্ধিরগঞ্জে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ভূমিখেকু ফারুকগং। আদালতে মুচলেখা দিয়েও হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে বাদীকে মারধর ও জমিতে লাগানো সাইনবোর্ড ভাংচুর করার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক মো. রুবেল মিয়া সোমবার (২ মে) সকাল ১০ টায় সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
অভিযোগ উঠেছে, আটি ওয়াপদা কলোনিতে আব্দুল জলিলগংদের ৮১ দশমিক ৬ শতাংশ জমি দখলের পাঁয়তারা করছে ফারুকগং। জমির মালিকানা নিয়ে করা মামলা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থাপনা নির্মাণসহ শ্রেণি পরিবর্তন করতে স্থিতি অবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ক্ষমতার প্রভাবখাটিয়ে নাসিক ১ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আনোয়ার ইসলাম ও ফারুকগং জমিরঅংশিক দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেন।
তখন আব্দুল জলিল আদালতে পিটিশন মামলা করলে আদালতের নির্দেশে থানা পুলিশ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক কাউন্সিলর আনোয়ার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেলেও সক্রিয় থাকে ফারুক। চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি আব্দুল জলিল ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে আরেকটি মামলা করেন। এ মামলায় ২২ এপ্রিল বিবাদীরা আদালতে হাজির হয়ে বাদীকে হুমকি ধামকি দিবেনা মর্মে মুচলেখা দেয়। আদালতে মুচলেখা দিয়েও ২০ মে বিকেলে নালিশা জমিতে গিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনার লাগানো সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলে।
এসময় বাদী বাধা দিলে তাকে মারধর করে। এঘটনায় সাইলোগেইট এলাকার মৃত মহিউদ্দিনের ছেলে ফারুক, রিপন মিয়া, আটি ওয়াপদা কলোনির মৃত মুনছুর আলীর ছেলে খলিলুর রহমান, কামাল হোসেনের ছেলে সারোয়ার, মৃত মাঈনউদ্দিনের ছেলে আব্দুল হাই, মিজমিজির মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে আনোয়ার ইসলাম, মৃত নাজিরুল হকের ছেলে সাইদুল হক, আব্দুল মান্নানের ছেলে শাহাজালাল ওরফে সাজু ও মিজমিজি পূর্বপাড়ার মৃত দুদু মিয়ার ছেলে জামালের নাম উল্লেখ ও ১৫/২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি দিয়ে ২৭ মে নারায়ণগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে মামলা করেন আব্দুল জলিল।
আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেন। বাদী আব্দুল জলিল বলেন, আমার জমি সংক্রান্ত মামলা ও বিভিন্ন সময় হামলা মারধর ঘটনায় আদালতের নির্দেশে সরেজমিন তদন্ত করে জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন(পিবিআই) পুলিশ পরিদর্শক মো. এনামুল হক তদন্ত করেন। আমার আনিত অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে উল্লেখ করে গত বছরের ১ এপ্রিল তিনি প্রতিবেদন দাখিল করেন।
আমার একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিন পরিদর্শন করে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা পর্যালোচনা করে বিগত ২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বর তৎকালিন নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ মতিয়ার রহমান একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন পুলিশ সুপার বরাবর। প্রতিবেদনে নারায়ণগঞ্জ যুগ্ন জেলা জজ ১ম আদালতে করা (২৫-১০ নং) মামলা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নালিশী ভূমি দখল ও অবস্থানের বিষয়ে স্টেটাসকো(স্থিতিশীল সহাবস্থান) রক্ষা করতে পক্ষগণকেনির্দেশ প্রদান করা হয়।
পাশাপাশি বিজ্ঞ আদালতের রায় অনুযায়ী নালিশী জমিতে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। কিন্তু থানার তৎকালিন ওসি সরাফত উল্লাহ বিবাদী পক্ষ দ্বারা ম্যানেজ হয়ে কোন প্রদক্ষেপ নেননি। আব্দুল জলিলের অভিযোগ, গত বছরের ২৩ আক্টোবর সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুস সালামের উপস্থিতিতে এলাকায় একটি বৈঠক হয়।
আমি বাজার দরের চেয়ে কিছু কম মূল্যে এ জমি বিক্রি করতে রাজি হলে ২ নভেম্বর সন্ধ্যার পর থানায় বৈঠক বসার দিন ঠিক হয়। রহস্যজনক কারণে ফারুকগংবৈঠকে বসেনি। অনেক চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি ফারুকের সাথে। জানতে চাইলে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. রুবেল মিয়া বলেন, আদালতের নির্দেশে তদন্ত করা হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। দুপক্ষের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে খুব দ্রুত আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।





