প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ জিয়াউর রহমান জিয়া মহেশপুর থেকে ঃ সুমিষ্ট ফল আঙ্গুর চাষের অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে ঝিনাইদহের মহেশপুরে। মহেশপুরের মাটিতে উৎপাদিত আঙ্গুর অস্ট্রেলিয়াসহ অন্য যে কোনো দেশ থেকে আমদানিকৃত আঙ্গুরের চেয়ে মিষ্টি ও সুস্বাদু। মহেশপুর উপজেলার যুগীহুদা গ্রামের চাষি আব্দুর রশিদ আঙুর চাষে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন।
তার বাগান জুড়ে গাছে গাছে থোকা থোকা লাল, কালো ও সবুজ রঙের আঙুর ঝুলছে। দৃষ্টিনন্দন এই আঙুরের বাগান দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ আসছে। তারা অনুপ্রাণিতও হচ্ছেন। ইউটিউব দেখে ২০১৯ সালে ১০ কাঠা জমিতে ছমছম ও সুপার সনিকা জাতের ৭৫টি আঙুরের গাছ রোপণ করেন আব্দুর রশিদ। বর্তমানে তার ৩ বিঘা জমিতে ৭০০ আঙ্গুর গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছে থোকা থোকা ঝুলে আছে।
নতুন করে আরও ২ বিঘা জমিতে আঙ্গুর চাষ বাড়িয়েছেন এই সফল কৃষক। তার দেখাদেখি এখন অনেকে আঙুর চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। প্রতিদিন তার আঙুর চাষ দেখতে দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন। আঙ্গুর চাষি আব্দুর রশিদ জানান, প্রথমে আমার আঙ্গুর চাষ দেখে স্থানীয়রা বলতো এই মাটিতে আঙ্গুর হবে না হলেও প্রচুর টক হবে খাওয়া যাবে না। পাগল আঙ্গুর চাষি বলতো ,আমি তাদের কোন কথায় কান দিতাম না আজ তারাই আমাকে বাহবা দিচ্ছেন সফল আঙ্গুর চাষি হিসাবে।
তিনি আরও বলেন আমাদের মধ্যে একটা ধারণা আছে, দেশে উৎপাদিত আঙুর টক হয়। কিন্তু এই ধারণা সত্য নয়। তার বাগানে ৭ জাতের আঙুর হয়। কোনোটি লাল, কোনোটি কালো, আবার কোনোটি সবুজ। সবগুলোই সুমিষ্ট। এবার প্রচুর আঙুর ধরেছে গাছ গুলোতে। ভারে গাছ ঝুলে পড়ছে। ৭০০ গাছের প্রতিটি গাছে ২০ কেজি থেকে ২৫ কেজি পর্যন্ত ধরেছে। বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকারেরা এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। পাইকারি প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি করছেন।
আর প্রতিদিন ১৪-১৫ কেজি করে আঙুর বাগান দেখতে আসা লোকদের খাওয়া হয়ে থাকে। এবার প্রায় অর্ধো কোটি টাকার আঙ্গুরের চারাসহ আঙুর বিক্রি হবে বলে আশা করছেন আব্দুর রশিদ। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তার কাছ থেকে আঙ্গুরের চারা কিনতে লোকজন আসছে তার কাছে। তিনি আরও বলেন, দেশে আঙুর চাষের প্রসার ঘটালে বিদেশ থেকে আমদানির প্রয়োজন হবে না।
স্থানীয় ফারুক হোসেন জানান,প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম এই মাটিতে আঙ্গুর চাষ সম্ভব না কিন্তু আব্দুর রশিদ প্রমান করে দিলেন আমাদের দেশের মাটিতেও সুমিষ্ট আঙ্গুর চায় করা সম্ভব।সাইফুল ইসলাম বলেন,রশিদ ভাইয়ে আঙ্গুরের জন্য আমারদের এলাকার পরিচিতি বেড়েছে বিভিন্ন এলাকা থেকে আঙুর চাষ দেখতে দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন।দর্শনার্থী জালাল উদ্দিন বলেন,লোকমুখে ও ফেসবুকের মাধ্যমে তার আঙ্গুর বাগানে দেখে আজ চলে এলাম।
প্রতিটি গাছে থোকা থোকা আঙ্গুর ঝুলে আছে দেখে ভালো লাগলো যে আমাদের এলাকার মাটিতেও এত সুন্দর আঙ্গু চাষ করা সম্ভব। তিনি আরও বলেন আঙ্গুর এত সুমিষ্ট ফরমালিন মুক্ত টাটকা আঙ্গুর এর আগে কখনো খাওয়া হয়নি। মহেশপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, আব্দুর রশিদের আঙুরের বাগান ঘুরে ঘুরে আমি দেখেছি। প্রতিটি গাছে থোকা থোকা আঙ্গুর ঝুলে আছে,তাছাড়া বাজারের আঙুরের চেয়ে এ আঙুরের স্বাদ অনেক ভালো।





