প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও দুজন চিকিৎসা নেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে ভোর পর্যন্ত স্থানীয় যুবদলের দু’টি পক্ষের নেতা-কর্মীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীরাও অংশ নেন বলে জানা যায়।
নিহত যুবক মো. হাসিব (২৮) চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রয়াত আনোয়ার হোসেন মোল্লার ছেলে। নিহত হাসিব এক সময় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালালেও বর্তমানে বেকার ছিলেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হলেন- রাসেল (৩০) ও বশর (৩২)। তারা দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নিহতের বড়ভাই যুবদল কর্মী মো. বাবু বলেন, সংঘর্ষ চলাকালীন বুধবার রাত দুইটার দিকে হাসিব গুলিবিদ্ধ হন। মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত তিনটার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটার দিকে তারাবির নামাজের পর রবিন নামে এক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেন চনপাড়া সাংগঠনিক ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মনির দেওয়ানের অনুসারী লোকজন। তাকে স্থানীয় যুবদলের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। রবিনকে ছাড়িয়ে নিতে আসেন ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল করিম ও ২ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি গোলাম রাব্বানী।
এ নিয়ে উভয়পক্ষের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে তা দফায় দফায় সংঘর্ষে রূপ নেয়। স্থানীয় অন্তত দু’জন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তারাবির নামাজ শেষে হাতাহাতির ঘটনার পর দিকে উভয়পক্ষের লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র, টেঁটা, শাবল ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। ভোর পর্যন্ত দফায় দফায় এই সংঘর্ষ চলে। এই ঘটনায় উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। এ বিষয়ে যুবদল নেতা মনির হোসেন বলেন, “চনপাড়াকে মাদকমুক্ত করার চেষ্টা আমাদের রয়েছে। গতরাতে এক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে লোকজন যুবদলের কার্যালয়ে নিয়ে আসে।
পরে তাকে ছাড়িয়ে নিতে আমাদের উপর হামলা করেন আমাদের দলেরই রাব্বানী, করিম ও তাদের অনুসারীরা। আমরা নিজেরা বাঁচার জন্য কেবল তাদের প্রতিরোধ করেছি। কিন্তু আমরা কোনো আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করিনি।”তিনি আরও বলেন, প্রতিপক্ষের লোকজন আওয়ামী লীগের ‘সন্ত্রাসী বাহিনী’ নিয়ে তাদের উপরে হামলা করেছেন বলেও দাবি করেন যুবদলের এই নেতা। তবে, মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণে নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেন মনির। নিহত হাসিবকে নিজের কর্মী দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে আব্দুল করিম ও মো. রাব্বানীর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে তারা এলাকায় নেই। তাদের মুঠোফোনের নম্বরেও কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। নারায়ণগঞ্জ জেলার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (‘গ’ সার্কেল) মেহেদী ইসলাম বলেন, আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে গুলিবিদ্ধ একজন মারা গেছেন। বুধবার সকালে র্যাব ও পুলিশের সমন্বয়ে চনপাড়ায় যৌথ অভিযান চালানো হয়। তবে কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।