টানা ভারী বৃষ্টিতে কক্সবাজার শহরের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা পানির নীচে

0
টানা ভারী বৃষ্টিতে কক্সবাজার শহরের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা পানির নী

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ টানা ভারী বৃষ্টিতে কক্সবাজার শহরের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গিয়াছে। সৈকত এলাকার হোটেল-রিসোর্ট, কটেজ জোনে জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন পর্যটকেরা। পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেলে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েক হাজার পর্যটক আটকা পড়েছেন। এছাড়া সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে লাল পতাকা উড়িয়ে পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা হচ্ছে।

এছাড়া পানিবন্দি হয়ে পড়েছে টেকনাফ ও উখিয়ায় অন্তত ১০০ গ্রামের মানুষ। কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৭ ঘণ্টায় মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৫০১ মিলিমিটার। এর আগে ২০১৫ সালের ২৪ জুন এক দিনের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ছিল ৪৬৭ মিলিমিটার। এই ভারী বর্ষণ কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় কক্সবজারের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। প্রধান সড়কসহ শহরের ৫০টি উপসড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। পাহাড় ধসে কক্সবাজার সদরে এক পরিবারের তিনজন এবং উখিয়ায় একটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন, সদরের ডিককূল এলাকার মিজানুর রহমানের স্ত্রী আখি মনি (২১), তাদের দুই মেয়ে মিহা জান্নাত নাঈমা (৫) ও লতিফা ইসলাম (১), ক্যাম্পের ই-২ ব্লকের কবির আহমেদের ছেলে আব্দুর রহিম, আব্দুল হাফেজ ও আব্দুল ওয়াহেদ।

এছাড়া ট্রলার ডুবিতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। কক্সবাজার শহরের কলাতলী রোড, সুগন্ধা রোড, সিগাল রোড জলাবদ্ধতায় ঝিনুক মার্কেটের শতাধিক দোকান পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক পর্যটককে হাঁটু কোমর গভীর পানিতে রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। তবে তাদের বেশিরভাগই তাদের ঘরে অলস সময় কাটাচ্ছেন। আবার অনেকেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে ছুটছেন সাগরে। সাগরের লোনা জলে গা ভাসাচ্ছেন অনেকেই। পর্যটকরা জানান, সৈকতের বর্ষাকালীন সৌন্দর্য অন্যরকম।

আবার অনেকেই বৃষ্টি কারণে বিরক্তি প্রকাশ করতেও দেখা গেছে। কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, গত ৫০ বছরে শহরে এমন বন্যা দেখেননি। অপরিকল্পিতভাবে সড়ক উন্নয়ন, ড্রেনগুলো সঠিকভাবে পরিষ্কার না করা এবং পাহাড় কাটার কারণে এ ধরনের জলাবদ্ধতা হচ্ছে। এগুলো থেকে পরিত্রাণ না পেলে পর্যটকরা কক্সবাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে।

এদিকে, ভারি বৃষ্টিতে টেকনাফ ও উখিয়ার অন্তত ৮০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে টেকনাফের ৬০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। টেকনাফ সদর, হোয়াইক্যং, হ্নীলা, বাহারছাড়া ও সাবরাং ইউনিয়নের গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে। উখিয়ার রাজাপালং, জালিয়াপালং, হলদিয়াপালং ও পালংখালী ইউনিয়নের আর ২০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়া তথ্য জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আদনান চৌধুরী বলেন, ভারী বৃষ্টিতে টেকনাফের অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। অনেক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তাদের ত্রাণ তৎপরতা দেওয়া হচ্ছে। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিভীষণ কান্তি দাশ জানিয়েছেন, কক্সবাজারে টানা বৃষ্টিতে অনেক এলাকা পানির নিচে।

কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। এবং ঝিলংজায় পাহাড় ধসে নিহত তিনজনের পরিবারকে ৭৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থান থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে কাজ চলছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here