প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ মহেশপুর(ঝিনাইদহ)সংবাদদাতাঃ ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ না করেই কাগজে কলমে শতভাগ বাস্তবায়ন দেখানো হয়েছে। এছাড়া রয়েছে প্রকল্পের প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ না করা, নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ।
উপজেলা পরিষদ সুত্রে জানা গেছে, প্রতি অর্থ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয় সরকার। বরাদ্ধকৃত প্রকল্প বাস্তবায়িত হয় স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) মাধ্যমে। ৩০ শে জুনের মধ্যে এ সকল প্রকল্প গুলো শেষ হয়। প্রকল্পগুলোর মধ্যে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন, স্কুলে বেঞ্চ প্রদান ও স্কুলের উন্নয়ন, সেলাই মেশিন ও নলকূপ বিতরণ, কালভার্ট নির্মান, ড্রেন নির্মান,শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া এবং রাস্তা ফ্লাট সলিং করণ।
তথ্য প্রযুক্তি আইনে আবেদন করে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, একই প্রকল্প ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বিভিন্ন অর্থ বছরে দেওয়া হয়েছে। কোনটির নামে মাত্র কাজ হয়েছে আবার কোনটির অস্তিত্বই খুজে পাওয়া যায়নি। ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি এডিপির উন্নয়ন তহবিলে উপজেলার নাটিমা ইউনিয়নের নাটিমা গ্রাম হতে রুপদাহ অভিমুখে রুপাদহ মাঠে মগরেব আলীর জমির পাশের রাস্তায় ১টি ব্রিজ নির্মান প্রকল্পে ৪ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়।
২০২২-২০২৩ অর্থবছরের তালিকায়ও নাটিমা ইউনিয়নের নাটিমা গ্রাম হতে রুপদাহ অভিমুখে রুপাদহ মাঠে মগরেব আলীর জমির পাশের রাস্তায় ১টি ব্রিজ নির্মান প্রকল্পে ৪ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়। কিন্তুু একই প্রকলল্প দুই অর্থ বছরে দিয়েও ব্রিজ নির্মান না করে নানা অনিয়মে একটি কালভার্ট নির্মান করে প্রকল্পের ৪ লাখ টাকা আত্নসাৎ করা হয়েছে। এছাড়াও ২০২১-২০২২ ও ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে আদমপুর মল্লিকপাড়া তরিকুলের বাড়ী হতে বক্তারের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা ফ্লাট সলিং প্রকল্পে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হলেও তার কোন অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন বলেন,ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন তহবিলের ১ লাখ টাকা দিয়ে রাস্তাটি ফ্লাট সলিং করে দিয়েছি। তা ছাড়া কোন অর্থ বছরে এ রাস্তায় কোন কাজ হয়নি। সরজমিনে প্রকল্প স্থানে গিয়ে দেখা যায় ৪ লাখ টাকা বরাদ্ধে ব্রিজ নির্মানের পরিবর্তে নির্মান করা হয়েছে কালভার্ট বা ইউ ড্রেন। জমির মালিক মজেহার ও আলমগীর হোসেন জানান। চার-পাঁচ মাস আগে এই কলর্ভাটটি নির্মান করা হয়েছে। নিন্মমানের ইট,বালু-খোঁয়া আর কোন রকম গাথুনির ওপর স্লাব বসিয়ে দিয়ে কালভার্টটি তৈরির কাজ শেষ করা হয়েছে।
আমরা প্রতিবাদ করলে তারা বলেন যেভাবে করার কথা আমরা সেভাবে করেছি,আমাদের কথার কোন পাত্তা দিতো না। তারা আরও বলেন আমাদের চেয়ারম্যান কাশেম মাষ্টারকে বিষয়টিজানিয়েছিলাম। তিনি বলেন যে ভাবে করার নিয়ম তারা তো সে ভাবেই করবে, আপনারা শুধু দেখেন কাজটি হচ্ছে কিনা। কৃষক উজ্জল ও ইন্তাদুল বলেন, মাঠের পানি নিষ্কাশনের জন্য ৪-৫ মাস আগে ব্রিজের পরিবর্তে ৫০-৬০ হাজার টাকার কালভার্ট পেয়েছি,এটা দিয়ে মাঠের পানি বের হবে কিভাবে? পানির চাপ তো কালভার্ট নিতে পারবে না,এক বর্ষা পার হলেই নিচের মাটি সরে গিয়ে কালভার্ট ভেঙ্গে পরবে।
সিমেন্টের পরিমান কম দেওয়ায় গরুর গাড়ির চাকা উঠলেই এখনিই উঠে যাচ্ছে ডালাইয়ের খোঁয়া । উপজেলা প্রকৌশলী সৈয়দ শাহারিয়ার আকাশ জানান,গত দুই তিন বছর আগের প্রকল্প, টাকাও ছাড় হয়ে গেছে অনিয়ম হলেও এখন কিছু করার নাই।উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ময়জদ্দীন হামিদ জানান,আমরা শুধু প্রকল্প অনুমোদন করে দেই,বাকি সব কাজ করেন ইঞ্জিনিয়ার অফিস। কোন প্রকল্প অনিয়ম হলে কেউ অভিযোগ দিলে সেটা আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো।