মহেশপুর অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ের আলোর প্রকল্প

0
মহেশপুর অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ের আলোর প্রকল্প

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ মহেশপুর (ঝিনাইদহ) সংবাদদাতাঃ ঝিনাইদহের  উপজেলার বিভিন্ন সড়কের পাশে কিবা রাস্তার মোড়ে মোড়ে স্থাপন করা হয় ৫ কোটি ৬৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যায়ে সৌর সড়ক বাতি। বর্তমানে সেই সোলার প্যালেনের ৯০ শতাংশই এখন নষ্ট ও অকেজো হয়ে পড়ে আছে দীর্ঘ দিন ধরে।

অনেক জায়গায় সোলার লাইট স্থাপনের কয়েক মাসের মধ্যে তা দেখতে অনেকটা খেলনার লাইটের মত হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও সোলার আছে বাতি নেই,অনেক স্থানে ল্যামপোষ্ট ভেঙ্গে পরেছে। নিয়মতান্ত্রিক ভাবে এগুলো রক্ষনাবেক্ষন,সংস্কার বা দেখভালের কথা থাকলেও ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করার কারনেই আজ এগুলো নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে।

সড়ক গুলোতে নিম্নমানের সৌর প্যালেনসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশ সংযোজন করে বেশির ভাগ অর্থই নিন্মমানের সোলার কোম্পানী হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সৌর বাতিগুলো না জ্বলার কারণে অন্ধকারে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গ্রামীন জনপদের সাধারণ মানুষকে। উপজেলা

প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানাগেছে, দূর্যোগ ও ত্রান ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীন অবকাটামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির আওতায় টিআর কাবিখা ও বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় বিভিন্ন গ্রামে ১০০০ টি সোলার বাতি স্থাপন করা হয় ২০১৬/১৭, ২০১৭/১৮ ও ২০১৮/১৯ অর্থ বছরে। প্রতিটি সৌর বাতির জন্য খরচ হয় ৫৬ হাজার ৪’শ ৯০ টাকা। স্থাপন কালে প্রতিটি সৌর সড়ক বাতির ওয়ারেন্টি দেওয়া হয়লেছিলো ৩ বছর।

বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন স্থান,রাস্তা,মসজিদ,মন্দির,স্কুল,কলেজ ও প্রতিষ্ঠানের সামনে পথচারীদের সুবিধার্থে ২৫,৩০ও ৫০ ওয়ার্ডের
এ স্টিক সোলার গুলো বসানো হয়। এসব লাইট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লাগিয়ে যাওয়ার পর আর সংস্কার করা হয়নি। এদিকে সড়ক বাতিগুলো না জ্বলায় সরকারের সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয়রা।

সরজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, উপজেলার ১২ টি ইউনিয়ন এবং একটি পৌর এলাকার জনবহুল ও গুরুত্বপূর্ন স্থানে বসানো ল্যাম্পপোষ্টের লাইটগুলোর অধিকাংশ যেন এক একটি খেলনার মত দাড়িয়ে রয়েছে,সেগুলো দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে। সৌরবাতির খুঁটিগুলো দাঁড়িয়ে আছে,বাতি আছে আলো নেই। সন্ধ্যা হলে নেমে আসে ভুতুড়ে অন্ধকার।

আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জনগন। সড়কে বসানো এই বাতিগুলো না জ্বলার ফলে বাড়ছে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছে আলোর প্রকল্প। প্রকল্পের এমন দশা কে সরকারি অর্থের অপচয় বলে মনে করছে স্থানীয়রা। স্বরুপপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন,তার ইউনিয়নের সোলার প্যানেলে গুরুত্বপূর্ন ল্যাম্পপোস্টগুলোর অধিকাংশ বন্ধ হয়ে আছে। লাগানোর কিছুদিন পড় থেকে আর লাইটগুলো জ্বলছে না।

সরকারের এত টাকার সড়কবাতি ব্যবহারে কোন সুফল আসছে না। এসবিকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়রম্যান আরিফান হাসান চৌধুরী নুথান জানান,আমার ইউনিয়নের কয়েকটি বাজারসহ গুরুত্বপূর্ন সড়কে সোলার লাইট বসানো আছে। কিন্তু তার অধিকাংশই নষ্ট হয়ে গেছে,এখন আর জ্বলে না শুধু খুঁটিগুলো দাঁড়িয়ে আছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মফিজুর রহমান জানান,সোলার প্যানেলের ওপর ময়লাপড়া ও ছায়াযুক্ত স্থানে লাইট স্থাপন করায় ব্যাটারিতে চার্জ না হওয়ায় অনেক স্ট্রিট লাইট নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। কোনো অর্থ বরাদ্দ না থাকায় নষ্ট হওয়ায় লাইটগুলো মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না।

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুল হক আজা জানান, কম দামের সোলার প্যানেল বসালে তো নষ্ট হবেই। আজ শুধু পৌর এলাকা না মহেশপুরের অধিকাংশ সোলার প্যানেল গুলো নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। কে দেখবে বা কে মেরামত করবে আমরা তার কিছুই বলতে পারছিনা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here