মহেশপুরে ঈদকে ঘিরে কামার পল্লীতে নেই কোন ব্যস্ততা

0
মহেশপুরে ঈদকে ঘিরে কামার পল্লীতে নেই কোন ব্যস্ততা

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ জিয়াউর রহমান জিয়া,মহেশপুর ঃ কড়া নাড়ছে কোরবানির ঈদ। আগামী ১৭ জুন (সোমবার) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে
মুসলিম জাতির সব চেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঈদ উল আযহা। আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে অলস সময় পার করছে ঝিনাইদহের মহেশপুরের কামার শিল্পীরা। সারা বছর অলস সময় পার করলেও কোরবানীর মৌসুমে বেশ ব্যস্ততা বেড়ে যেতো কামার পাড়ায়।

দিনরাত সমান তালে লোহার টুং টাং শব্দে মুখরিত হয়ে উঠতো উপজেলার প্রতিটি কামার ঘরে। কেউ আসতো কোরবানী করার অন্যতম অনুসঙ্গ ধারালো ডাসা, ছুরি, বটি, হাসুয়াসহ বিভিন্ন অস্ত্র তৈরি করতে। আবার কেউবা আসতো এ সব সরঞ্জাম সান দিতে।কিন্তুু সময়ের পরিক্রমায় আর আধুনিক মেশিনে তৈরি সরঞ্জামে বাজার ছেয়ে যাওয়ায় কামারশিল্পে পড়েছে ভাটা। আর তার ফলে এবার এই উপজেলার কামারপল্লীতে নেই ঈদের আমেজ।

যদিও এক সময় কোরবানির ঈদের দুয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই হাতুড়ির টুং টাং শব্দে মুখরিত থাকতো মহেশপুরের কামারপাড়া গুলো। পেশায় ভাটা পড়ায় দিন দিন কামার শিল্পীরা বংশ পরম্পরায় পাওয়া পেশা ছেড়ে খুঁজে নিচ্ছেন অন্য পেশা। এতে এই শিল্পটি হারানোর মুখে পড়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কামার পাড়া ঘুরে কামার শিল্পীদের সঙ্গে আলাপকালে এসব চিত্র উঠে এসেছে।

উপজেলার বিভিন্ন কামার দোকান ঘুরে দেখা গেছে, কোরবানির ঈদের আর মাত্র সপ্তাহ খানেক বাকি থাকলেও কামার দোকান গুলোতে নেই ক্রেতাদের ভিড়। বছরে একবারই ভালো ব্যবসার আশায় বছর ধরে অপেক্ষায় থাকা কামার শিল্পীরা ক্রেতাদের আসার প্রহর গুনছেন। আশানুরূপ বিক্রি নেই বলে মন ভালো নেই কামার শিল্পীদের। মহেশপুর বাজারের কামার শিল্পী সাধন কর্মকার জানান, আধুনিক যন্ত্রপাতির দখলে বাজার হওয়ায় এখন আর কদর নেই কামারশিল্পীদের। সারাবছর যেমন তেমন এই ঈদেও তাদের হাতে তেমন কাজ নেই।

দিন দিনই তাদের ব্যবসার পরিসরটা ছোট হয়ে আসছে। মহেশপুর পৌর এলাকার চড়কতলা মোড়ের দিলিপ কামার বলেন, বংশ পরম্পরা ধরে রাখতেই এখনো এ পেশায় জড়িয়ে আছি। বাজারের আধুনিক পণ্যসামগ্রীর প্রসারে আমাদের তেমন বিক্রি নেই। আমি ছোটবেলায়ও দেখেছি, আমার বাপ-চাচারা এরকম ঈদ মৌসুমে শ্বাস ফলার ফুরসত পেত না। দিন-রাত টানা পরিশ্রম করেও ক্রেতার চাহিদা পূরণে হিমশিম খেতে হতো।

তিনি আরও বলেন,এখন কোরবানী ঈদের কয়েকদিন কাজের চাপ থাকলেও আর বাকি সময় গুলো অলস ভাবে কাটাতে হয়।
একই এলাকার রতন কামার বলেন,কয়লা,লোহার দাম বেড়েছে সে তুলনায় মুজুরী পাই না ,বাব দাদার পেশা তাই এ পেশা ছেড়ে দিতে পারছি না।মহেশপুর চড়কতলা বাজার কমিটির সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, এক সময় কোরবানির ঈদের আগের এই সময়টায় কামার দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যেত।

তবে দিন দিন আধুনিক মেশিনে তৈরি গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত পণ্য বাজার দখল করেনেওয়ায় কামারদের ব্যবসায় ধস নেমেছে। তবে পুরোনো যন্ত্রপাতি শাণ দিতে অনেকেই কামারদের কাছে আসছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here