প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ মহেশপুর (ঝিনাইদহ) সংবাদদাতাঃ ঝিনাইদহের মহেশপুরে স্ত্রী ধর্ষণের প্রতিশোধ নিতে শাহজাহান আলী ফকিরকে গলা
কেটে হত্যা করেছেন বলে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার প্রধান আসামী রাজু। সিনিয়র জুড়িশিয়ান ম্যাজিস্ট্রেট রিয়াদ হাসানের আদালতে এজবানবন্দি দেন তিনি।
আসামী রাজু যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার রাজাপুর গ্রামের জিয়ারুল ইসলামের ছেলে। জবানবন্দিতে আসামী রাজু বলেন, আমি পেশায় একজন দিনমজুর। আমার ৩ বৎসরের একটা কণ্যা সন্তান রয়েছে। পীর বাবা হওয়ার সুবাদে শাহজাহান ফকিরকে আমি দুদু বলে ডাকি। ভালো সম্পর্ক থাকায় মহেশপুরের বামনগাছার বেলেমাঠ গ্রামে তার বাড়িতে নিয়মিত যাতাযাত করতাম।
গত ৮ মে স্ত্রীকে নিয়ে শাহজাহান ফকিরের বাড়িতে বেড়াতে যাই। সেখানে ২/৩ দিন থাকার পর চলে আসতে চাইলে দাদু বলেন দাদী অসুস্থ তোর বউকে কয়েক দিনের জন্য রেখে যা আমার রান্না বান্না করে দিবে। তার কথা অনুযায়ী আমিও বউ বাচ্চাকে রেখে ঢাকায় চলে আসি। এরপর গত ১৫ মে রাত ১০ টার দিকে আমার বউএর ফোনে কল করি কিন্তু সে কল ধরেননি এরপর দাদুকে কল করি কিন্তু দাদুও কল ধরেননি।
রাত প্রায় ৩টার দিকে পুনরায় আমার বউ এর ফোনে কল করলে সে কাঁদতে কাঁদতে জানায় দাদু তাকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে। পরের দিন সকালে আমার বউ বাচ্চাকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। ঢাকা থেকে ফিরে আমি মামলা করতে চাইলে বউ নিষেধ করেন। বউ বলেন, মামলা করলে আমাদেই মান সম্মান যাবে। এর পর ২৮ মে (বুধবার) রাতে আমার চাচাতো ভাই রাসেলকে সাথে নিয়ে দাদুর বাড়িতে যাই। যদিও রাসেল এব্যাপারে কিছুই জানেন না।
চাচাতো ভাইয়ের ডিউটি থাকায় সে ৯টার দিকে বাড়িতে চলে যাই। পরে রাত ১২ টার দিকে আমি দাদুকে জিজ্ঞাসা করি তুমি আমার বউএর সাথে এমনটা করেছো কেন ? সে বলে (দাদু) কোন প্রমাণ নাই, তুই আমার কিছুই করতে পারবি না। এরপর রাত আড়াইটার দিকে ঘরে থাকা ছুরি দিয়ে আমি তার গলায় পোঁচ মেরে সেখান থেকে পালিয়ে যাই।
মহেশপুর থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) মাহবুবুর রহমান জানান, তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে হত্যা মামলার প্রধান আসামী রাজুকে বুধবার (৫মে) বিকালে উপজেলার খালিশপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে আটক করা হয়। বৃহস্পতিবার (৬মে) দুপুরে সিনিয়র জুড়িশিয়ান ম্যাজিস্ট্রেড রিয়াদ হাসানের আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দিতে আসামী রাজু শাহাজাহান ফকিরকে গলা কেটে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে।
উল্লেখ্যঃ গত (২৮ মে) বুধবার গভীর রাতে মহেশপুর উপজেলার মান্দারবাড়ীয়া ইউনিয়নের বেলেমাঠ গ্রামের মৃত আকালে মন্ডলের ছেলে শাহজাহান আলী ফকিরকে (৬৫) নিজ বাড়ীতে জবাই করে হত্যা করে। পরে বৃহস্পতিবার নিহত শাহজাহান ফকিরের মেয়ে রাফিজা খাতুন বাদি হয়ে রাজুকে প্রধান আসামী করে মহেশপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।