প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ বরগুনার তালতলীতে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে টানা বর্ষণ ও অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে রয়েছেন। সরকারি ও বেসরকারি ভাবে তেমন কোন উদ্যোগ না নেয়ায় খাদ্য সংকটে ভুগছে এরা। পুরো উপজেলা টানা ৭২ ঘণ্টারও বেশি সময় বিদ্যুৎবিহীন রয়েছে।
পল্লিবিদ্যুতের বিভিন্ন সঞ্চালন লাইনের উপরে ঘরবাড়ি ও গাছ পালা উপড়ে পড়লে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ। এক দিকে পানি বন্দি অন্য দিকে অন্ধকারে নিমজ্জিত হওয়ার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। ঘূর্ণিঝড় রিমালের ১৪ ঘণ্টার তাণ্ডবে বসতঘর গাছপালা ও মৎস্য ঘেরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে প্রায় সহস্রাধিক বসত ঘর সম্পূর্ণ ভেঙ্গে গেছে এবং প্রায় ঘরের চালের টিন উপড়ে গেছে। গাছপালা উপড়ে পরে বসত ঘর ভেঙ্গে গেছে।
গত তিনদিন ধরে উপজেলার সর্বত্র বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। উপজেলার চরাঞ্চল নিদ্রার চর, জায়াল ভাঙ্গা, সখিনা, ইদুপারা, নিশানবাড়িয়া ও চরপাড়া এলাকার অধিকাংশ মানুষই এখনো রান্না করার চুলা ধরাতে পারেনি। শুকনো খাবার খেয়ে দিন কাটাচ্ছে।রোববার দুপুর থেকে শুরু হওয়া জোয়ারে ও টানা বর্ষণের কারণে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন মানুষ। শনিবার রাতে বিদ্যুৎ যাওয়ার পর থেকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন রয়েছে।
বিদ্যুতের জন্য মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।পল্লী বিদ্যুৎ তালতলী কার্যলয়ের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার বলেন, পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অধীনে এ উপজেলায় ২৭ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছেন। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ৩০টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে। একাধিক ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়েছে। ৬ শতাধিক গাছ ভেঙে পড়ে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে। এর ফলে এ উপজেলায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বিদ্যুৎকর্মীরা দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে এসব লাইন মেরামত ও খুঁটি বসানোর কাজ শুরু করেছেন।
অপরদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে এ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে টানা বর্ষণের কারণে ৫০ থেকে ৬০ হাজার পানি বন্দী রয়েছেন। এসব এলাকার মানুষের বাড়ি-ঘর তলিয়ে গেছে। প্রায় বাড়িতে রান্না ঘর পরে গেছে। বসত ঘর তলিয়ে ঘরের ভিতর পানি ঢুকে পরেছে। হাস মুরগি ও গবাদি পশু নিয়ে চরম দুরাবস্থায় পরেছে মানুষ। এর কারণে এসব পানি বন্দি মানুষের খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সঙ্কট সহ মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কায় রয়েছে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত আনোয়ারা তুমপা বলেন, এই উপজেলায় ৭২ ঘণ্টারও বেশি সময় বিদুৎ সংযোগ নেই। অনেক জায়গায় গাছপালা উপড়ে পড়েছে। রেমালের প্রভাবে ক্ষতির পরিমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। অসংখ্য বসতঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। তিনি আরও বলেন পনি বন্দি মানুষের বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের ব্যবস্থা করা হবে।