চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের মতলব উত্তরের পূজামন্ডপ পরিদর্শন

0
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের মতলব উত্তরের পূজামন্ডপ পরিদর্শন

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ  খান মোহাম্মদ কামালঃচাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার সুলতানাবাদ ইউনিয়নের চরপাথালিয়া অতুল বেপারী বাড়ি দুর্গাপূজা মন্ডপ ও দূর্গাপুর ধীরেন্দ্র মাস্টার বাড়ি দুর্গাপূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেছেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান ও চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম। এসময় পূজার সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন এই দুই কর্মকর্তা।

শনিবার (২১ অক্টোবর) রাতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন।এসময় উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নইম পাটোয়ারী দুলাল, চাঁদপুর জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি সভাস চন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক রোটারিয়ান তমাল ঘোষ, চাঁদপুর জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বিনয় ভুষন মজুমদার, মতলব উত্তর থানার ওসি মোঃ মহিউদ্দিন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আল এমরান খান, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অজিত কুমার ঝন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বাড়ৈ, অতুল বেপারী বাড়ি দুর্গাপূজা মন্ডপ কমিটির সভাপতি প্রগতি মল্লিক, ধীরেন্দ্র মাস্টার বাড়ি দুর্গাপূজা মন্ডপ কমিটির সভাপতি পঙ্কজ সহ কর্মকর্তা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।

উপস্থাপনা করেন উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক শ্যামল চন্দ্র দাস।প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, এই যে দূর্গাপূজা উৎসব এটি একটি সার্বজনীন উৎসব। বাংলাদেশ হচ্ছে একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ এই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ হচ্ছে সেই বাংলাদেশ যেখানে মুসলিমরা নামাজ পড়বে, হিন্দুরা তাদের মন্দিরে পূজা করবে খৃস্টানরা গির্জায় গিয়ে প্রার্থনা করবে। যার যার ধর্ম সে সে সর্বোচ্চ মাত্রায় পালন করবেন। কিন্তু কেউ কাউকে বাধা দিবেন না। কিন্তু এর মধ্যে আবার অনেক সময় সমস্যায় পড়ে যাই কিছু দুষ্টু লোকজন আমাদের ঝামেলায় ফেলে দেয়। তাদেরকে শক্ত হাতে দমন করতে হবে।

তাদেরকে রোধ করতে হবে এর জন্য আমরা ও আমাদের নেতৃবৃন্দ আছি আপনাদের সাথে।তিনি আরো বলেন, পূজা নিরাপত্তায় আপনারা সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন এবং এ ব্যবস্থায় সর্বশেষ স্তর হচ্ছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। এই মতলব উত্তরের পূজা মন্ডপের নেতৃবৃন্দ যারা আছেন সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি যারা এই প্রত্যেক মন্দিরে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করেছেন। আমাদের জেলা পর্যায়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃ বৃন্দকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, আমাদেরকে সর্বাত্মক সহায়তা করার জন্য আরো ধন্যবাদ জানাচ্ছি সংসদ সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয় ও নেতৃবৃন্দদের। আমি আজকে মতলব উত্তর পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করতে এসেছি।

সবাই সব অ্যাঙ্গেল থেকে চেষ্টা করছি আমরা সবাই মিলে শুধু পূজা উৎসব নয় সকল উৎসব যেন সুষ্ঠুভাবে হয় এবং সব ধরনের সাম্প্রদায়িকতা যেন দূর হয় সে ক্ষেত্রে চেষ্টা করব। স্বেচ্ছাসেবক যারা আছেন তারা পালাক্রমে তাদের দায়িত্ব পালন করবেন। রাত একটা দেড়টার দিকে পূজা মন্ডপগুলোতে তেমন কেউ থাকেনা, সেক্ষেত্রে আমাদের সিরিয়াসলি বিষয়টা দেখতে হবে, আমরা বিশ্বাস করি যে কিছুই হবে না তারপরও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে এই মেসেজটা যেন সকল পূজা মন্ডপে দেওয়া হয়।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চাঁদপুর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পূজায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিয়েছি।

আমাদের যে কয়টি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মুহূর্তে দিয়ে থাকি তার মধ্যে দুর্গাপূজা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট। আমরা জেলা পুলিশের গত পরশুদিন ব্রিফিং অনুষ্ঠানটি করেছিলাম। সেখানে যারা সনাতন ধর্মীয় পুলিশ ছুটি চেয়েছে তাদের সবার ছুটি মঞ্জুর করেছি এবং সকল মুসলিম পুলিশ সদস্যদের ছুটি বাতিল করেছি। তারা কিন্তু এই ত্যাগ স্বীকারটি করেছেন পুরো জেলা সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। এবং আমরা এ বছর প্রতিটি মন্দিরে পুলিশ সদস্য মোতায়েন করেছি। পুরো জেলায় প্রতিটি মন্দিরে আমরা পুলিশ মোতায়েন করেছি। আপনাদের রাত জেগে তারা পাহারা দিচ্ছে।

আমি গতকাল রাতে রাত ৪ টা পর্যন্ত সজাগ থেকে আট উপজেলায় আটটি মন্দিরে ফোন দিয়ে খবর নিয়েছি যে, তারা সজাগ আছে কি না। আমি আটটি মন্দিরেই তাদের সজাগ পেয়েছি। এবং তারা যে দায়িত্ব পালন করছে সেটা আমি নিশ্চিত করেছি।তিনি আরো বলেন, কোন ষড়যন্ত্রকারী যেন অরাজকতার সৃষ্টি করতে না পারে সেটা সরকারি কর্মকর্তাদের পবিত্র ও অন্যতম দায়িত্ব বলে আমরা মনে করি। এবং সে দায়িত্বের অংশ হিসেবে সকলে তাদের নিজ নিজ ধর্মে যে আচার অনুষ্ঠানগুলো আছে সেটা তারা নির্বিঘ্নে, নিরাপদে এবং স্বাধীনভাবে যেন পূজা পালন করতে পারে এজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার সেগুলো নিশ্চিত করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুতো তারাই যারা অশান্তি ছড়িয়ে দিতে চায়, তাদের সংখ্যা কম আর আমরা সকলে বাঙালি আর আমরাই সংখ্যাঘরিষ্ঠ।এসপি বলেন, আপনারা যে উদাহরণ দিয়েছেন আজকে যে রহিম ভাই টাকা দেয় করিম ভাই পূজা করে, এটি বাংলাদেশের চেতনার মূলমন্ত্র। আমরা এভাবেই সকলে মিলে অনুষ্ঠানগুলো করব ও অংশগ্রহণ করতে চাই। শারদীয় দুর্গাপূজা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব কিন্তু অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে।

এটি একটি সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। এই উৎসবের সকল শ্রেণির পেশার মানুষেরা অংশগ্রহণ করে তাদের সার্বিক  নিরাপত্তায় আমরা সার্বক্ষণিক তাদের সাথে আছি এবং পাশে আছি।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here