আমতলীর মেধাবী কন্যা কনার চিকিৎসক হতে লেখাপাড়ার যাবতীয় দায়িত্ব নিলেন: ব্যবসায়ী মশিউর রহমান।

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ মু.আঃ.মোতালিব আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।। কেটে গেল আমতলীর মেধাবী কন্যা কনার স্বপ্ন পুরনের সকল বাঁধা। চিকিৎসক হিসেবে লেখাপড়ার দায়িত্ব নিলেন আওয়ামীলীগ কেন্দ্রিয় উপ-কমিটির সাবেক সহ সম্পাদক ব্যবসায়ী এসএম মশিউর রহমান শিহাব। স্বপ্ন পুরনের বাঁধা কেটে যাওয়ায় হাসির ঝিলিক ফুটেছে গর্বিত পিতা কবির হোসেন ও মা শিরিন সুলতানা সীমার।

বরগুনার আমতলী পৌর শহরের বকুলনেছা মহিলা কলেজ সড়কের দরিদ্র কবির হাওলাদার ও শিরিন সুলতানা সীমা দম্পতির দুই কন্যার একজন সামসুন নাহার কনা। অল্প বয়স থেকেই মেধাবী কনার লেখাপড়ার প্রতি অদম্য ইচ্ছা। সহায় সম্বলহীন কবির দম্পতি দিনমজুরী করে সংসার চালায়। শত কষ্টের মাঝের একমাত্র কন্যার লেখাপড়ার সকল ইচ্ছা পুরনে প্রতিজ্ঞ বাবা ও মা। কিন্তু তাদের প্রচেষ্টা বিফলে যায়নি। অল্প দিনের মধ্যেই ধরা দেয় কনার সফলতা। পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ -৫ পেয়ে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি লাভ করে। বেড়ে যায় কনার উচ্চ স্বপ্ন পুরনের অদম্য ইচ্ছা। ২০১৭ সালে আমতলী একে মডেল সরকারী হাই স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ -৫ পেয়ে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। সারা পড়ে যায় কনার জয়জয়কার অবস্থা।

কিন্তু কনা যতই স্বপ্ন পুরনে এগিয়ে যায় ততই অর্থাভাবের বাঁধা এসে সামনে দাড়ায়। কিন্তু কনাতো দমবার পাত্র নয়। ২০১৯ সালে ঢাকা বিএফ শাহীন কলেজে থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ -৫ পেয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ন হয়। স্বপ্নের উচ্চ সিড়ি কনাকে হাত ছানি দিয়ে ডাকছে। কিন্তু বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে অর্থ সংঙ্কট। বাবা কবির হাওলাদার দিন-রাত মাহেন্দ্র চালিয়ে খেয়ে না খেয়ে টাকা জমিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মেয়ের স্বপ্ন পুরনে। কনার স্বপ্নের উচ্চ শিখরে উঠতে এইচএসসি পরীক্ষার পরেই মেডিকেলে ভর্তি প্রস্তুতির জন্য একটি কোচিং সেন্টারে লেখাপড়া করেন। স্বপ্ন সত্যিই পুরণ হলে কনার। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ভর্তির সুযোগ পায় দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে। তার মেধাক্রম -২৮৫০। আগামী ২৮ অক্টোবর তার ভর্তির শেষ দিন।

কিন্তু অর্থাভাবে অনিশ্চিত হয়ে পরে কনার চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরন। মাহেন্দ্র চালক বাবার পক্ষে এতো টাকা খরয করে মেয়ের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন ফিফে হতে থাকে। এমনই সময় কনার চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ অনিশ্চিতের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। এ খবরটি আওয়ামীলীগ কেন্দ্রিয় উপ-কমিটির সাবেক সহ সম্পাদক বরগুনা জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ব্যবসায়ী এসএম মশিউর রহমান শিহাবের নজরে আসে। তাৎক্ষনিক তিনি কনার চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরনে যাবতীয় খরচ বহনের ঘোষনা দেন। দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য সোমবার তিনি সামসুন নাহার কনার ডাচ বাংলা ব্যাংকের একটি হিসাব নম্বরে পচিশ হাজার টাকা পাঠিয়ে দিয়েছেন। কেটে যায় কনার স্বপ্ন পুরনের সকাল প্রতিবন্ধকতা।

সামসুন নাহার কনা বলেন, ছোট বেলা থেকেই চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন ছিল আমার। বাঁধা হয়ে দাড়ায় বাবার অর্থ সংঙ্কট। কিন্তু বাবা ও মা খেয়ে না খেয়ে টাকা জমিয়ে আমার স্বপ্ন পূরনের জন্য চেষ্টা করেছেন। আমি ভালো চিকিৎসক হয়ে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করবো। আমি অর্থের অভাবটা বুঝেছি। কেউ জেনে অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসা মারা না যায়। এ বিষয়টি বিবেচনায় এনে মানুষের সেবা করবো।
কনার বাবা কবির হোসেন কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, সকল মানুষের ভালোবাসায় আমি পেরেছি আমার মেয়েকে স্বপ্নের উচ্চ সিড়িতে পৌছে দিতে।

মানুষ যদি সহযোগীতা না করতো তাহলে কোন দিনই সম্ভব হতো না আমার মেধাবী মেয়েকে এতো দুর নিয়ে আসতে। যখনই আমার মেয়ে সফলতা অর্জন করেছে তখনই কেউ না কেউ আমার পাশে এসে দাড়িয়েছে। তিনি আরো বলেন, সর্ব শেষ স্বপ্নের সিড়িতে উঠতে যখন আমি দিশেহারা তখনই আমার পাশে দাড়িয়েছেন এসএম মশিউর রহমান শিহাব। তিনি আমার মেয়ের চিকিৎসক হিসেবে লেখাপড়ার যাবতীয় দায়িত্ব নিয়েছেন। ইতিমধ্যে তিনি দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তির সমুদয় খরচ ব্যাংক হিসেবে পাঠিয়ে দিয়েছেন। সবাই আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন যেন ভালো চিকিৎসক হয়ে মানুষ ও দেশের সেবা করতে পারে।

আওয়ামীলীগ কেন্দ্রিয় উপ-কমিটির সাবেক সহ সম্পাদক বরগুনা জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ব্যবসায়ী এসএম মশিউর রহমান শিহাব বলেন, আমতলীর মেধাবী কন্যা সামসুন নাহার কনার চিকিৎসক হিসেবে লেখাপড়া অনিশ্চিতের খবরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারি। তাৎক্ষনিক কনার চিকিৎসক হিসেবে লেখাপাড়ার যাবতীয় দায়িত্ব আমি নিয়ে নেই। কনার লেখাপড়ার সমুদয় খরচ আমি বহন করবো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here