প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ কামরুজ্জামান শাহীন,ভোলা: বিয়ের দাবিতে ঢাকা থেকে ভোলার চরফ্যাশনে গিয়ে গত ৫ দিন যাবৎ এক প্রতারক প্রেমিকের বাড়িতে অনশন বসছেন ইডেল কলেজের সাবেক ছাত্রী সাদিয়া জান্নাত নামের এক প্রেমিকা। প্রেমিকার উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়েছেন প্রেমিক মিজানুর রহমান তৈয়ব।
জানা যায়, প্রেমিক মিজানুর রহমান তৈয়ব ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ওমরপুর ইউনিয়ন ১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোজাম্মেল হাওলাদারের ছেলে। তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা শেষ করে চাকরির জন্য ঢাকায় থাকতেন। চাকরির এক পরীক্ষার হলে এই ছাত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয় তার। পরবর্তীতে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। দীর্ঘদিন যাবৎ প্রেম ও পরে প্রেমিকাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়েছেন মিজান। তিনমাস আগে তিতাস গ্যাস কোম্পানিতে চাকরি হয় তার।
চাকরির পর থেকে প্রেমিকা সাদিয়া জান্নাতের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিন্ন করে তার মোবাইল নাম্বার, হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জার ব্লক করে দেয়। কোনোভাবে যোগাযোগ করতে না পেরে ওই যুবতী গত ১৭ এপ্রিল ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ওমরপুর ইউনিয়ন ১ নং ওয়াডে প্রেমিকের বাড়িতে এসে অনশন শুরু করেন। প্রেমিকা সাদিয়া জান্নাত বলেন, আমি অনার্স-মাস্টার্স পাস করে ঢাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করছি। মিজানের চাকরির আগে তার প্রতিমাসের খরচ আমার থেকে নিয়েছে।
আমি ওকে বিশ্বাস করে নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে ভালো রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় মিজান আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমাদের সম্পর্ক অস্বীকার করতেছে। যুবতী আরো বলেন, আমি গত ১২ এপ্রিল বিয়ের দাবিতে মিজানের বাড়ি এসে অনশনে বসেছি। স্থানীয় থানা প্রশাসন এবং চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় বৃহস্পতিবার সমঝোতার তারিখ থাকলেও সে চেষ্টা ব্যর্থ। তাই দ্বিতীয়বার বিয়ের দাবি নিয়ে অনশন করছি। আমাদের বিয়ে হবে, না হয় আমি লাশ হয়ে এই বাড়ি থেকে যাবো।
প্রেমিক মিজানের বাবা ও ভাই বলেন, আমরা মেয়েকে নিরাপদে আমাদের বাসায় রেখেছি। মিজান পালিয়ে আছে। তার সব মোবাইল নাম্বার বন্ধ করে রেখেছে।আশাকরি অল্প সময়ের মধ্যে তাকে এনে বিয়ের ব্যবস্থা করা হবে। এ বিষয়ে ওমরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে আমি খবর পেয়ে সেই বাড়িতে গিয়েছি। মেয়ে ও ছেলের পরিবারের বক্তব্য শুনেছি। মিজানকে এনে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করতে তার পরিবারকে কঠোরভাবে বলা হয়েছে।
চরফ্যাশন থাকার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নওরিন হক বিষয়টি মিমাংসার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দিয়েছেন। চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম অনশকারী সাদিয়া জান্নাতকে মিজানের বাবার জিম্মায় রেখেছেন। এদিকে এই ঘটনায় পুরো উপজেলা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।