প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ রাত পোহালেই বাঙালির প্রাণের উৎসব। পুরোনোকে বিদায় করে আসছে বাংলা নববর্ষ-১৪৩১ বঙ্গাব্দ। বর্ষবরণের মঙ্গল শোভাযাত্রা মূল আয়োজন শুরু হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা থেকে। ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (১৩ এপ্রিল) চারুকলা অনুষদে মঙ্গল শোভাযাত্রা উপলক্ষে রচিত পোস্টার নকশার প্রদর্শনী উদ্বোধনের পর জয়নুল গ্যালারিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল নববর্ষ উদ্যাপনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
সময় তিনি উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে বাংলা নববর্ষ-১৪৩১ উদ্যাপনে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। উপাচার্য বলেন, বর্ণাঢ্য কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ১৪ এপ্রিল (রবিবার) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা নববর্ষ-১৪৩১ উদ্যাপিত হবে। উৎসবমুখর পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নববর্ষ উদ্যাপনের সার্বিক প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। ‘আমরা তো তিমিরবিনাশী’ প্রতিপাদ্য নিয়ে রোববার সকাল সোয়া ৯টায় চারুকলা অনুষদ থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হবে।
শোভাযাত্রাটি শাহবাগ মোড় ও শিশুপার্ক সংলগ্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় শাহবাগ মোড় হয়ে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে গিয়ে শেষ হবে। পহেলা বৈশাখে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের মুখোশ পরা এবং ব্যাগ বহন করা যাবে না। তবে চারুকলা অনুষদ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত মুখোশ হাতে নিয়ে প্রদর্শন করা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভুভুজিলা বাঁশি বাজানো ও বিক্রি করা থেকে বিরত থাকার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। ইভটিজিংসহ সবধরনেরঅপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে মোবাইল কোর্টের ব্যবস্থা থাকবে।
মঙ্গল শোভাযাত্রায় বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা নিষিদ্ধ। ক্যাম্পাসে নববর্ষের সকল অনুষ্ঠান বিকেল পাঁচটার মধ্যে শেষ করতে হবে। নববর্ষ উদ্যাপনের জন্য সর্বসাধারণ রোববার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবেন। পাঁচটার পর কোনোভাবেই প্রবেশ করা যাবে না, শুধু বের হওয়া যাবে।আজ শনিবার সন্ধ্যা ৭টার পর ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে না। নববর্ষ উপলক্ষে রোববার ক্যাম্পাসে মোটরসাইকেলসহ সকল ধরনের যানবাহন চালানো সম্পূর্ণ নিষেধ।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বসবাসরত কোনো ব্যক্তি নিজস্ব গাড়ি নিয়ে যাতায়াতের জন্য নীলক্ষেত মোড় সংলগ্ন গেইট ও পলাশী মোড় সংলগ্ন গেইট ব্যবহার করতে পারবেন। সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণভাবে নববর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে রোববার ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সম্মুখস্থ রাজু ভাস্কর্যের পেছনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেইট বন্ধ থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আগত ব্যক্তিবর্গ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের জন্য চারুকলা অনুষদ সম্মুখস্থ ছবির হাটের গেইট, বাংলা একাডেমির সম্মুখস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেইট ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট সংলগ্ন গেইট ব্যবহার করতে পারবেন।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে প্রস্থানের পথ হিসেবে ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট সংলগ্ন গেইট, রমনা কালী মন্দির সংলগ্ন গেইট ও বাংলা একাডেমির সম্মুখস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেইট ব্যবহার করা যাবে। সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা ও আর্চওয়ে স্থাপন করা হয়েছে। মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ বর্ষবরণের অনুষ্ঠান পর্যবেক্ষণের জন্য ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সম্মুখে পুলিশ কন্ট্রোল রুম এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে।
জরুরি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য শহিদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টার এবং ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সম্মুখে অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হবে। হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল মাঠ সংলগ্ন এলাকা, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকা, দোয়েল চত্বরের আশে-পাশের এলাকা ও কার্জন হল এলাকায় মোবাইল পাবলিক টয়লেট স্থাপন করা হবে এবং খাবার পানি সরবরাহের ব্যবস্থা থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া এবং প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।