প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ এমপিও শিক্ষকদের বদলি নীতিমালার খসড়া প্রায় চূড়ান্ত করেছে শিক্ষা প্রশাসন। ফলে নিজ জেলায় বদলির সুযোগ পাবেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। আপাতত বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ)সুপারিশকৃত ১ লাখ ১৩ হাজারের মধ্যে বিভিন্ন স্কুল ও কলেজে কর্মরত শিক্ষকরা নিজ জেলায় বদলি হওয়ার সুযোগ পাবেন।
জানা গেছে, এনটিআরসিএর মাধ্যমে নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্ত ও ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি নিয়ে দ্বিতীয় কর্মশালা গতকাল বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মশালায় বদলির বিষয়ে কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কর্মশালায় বদলির ক্ষেত্রে সাতটি শর্তারোপ করার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর সাথে বৈঠকের পর এসব সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে।
কর্মশালা সূত্রে জানা গেছে, বদলির ক্ষেত্রে এনটিআরসিএর সুপারিশের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্তরা বিবেচিত হবেন। এক্ষেত্রে কমিটির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্তরা বদলির সুযোগ পাবেন না। অধিক সংখ্যক প্রার্থীর বদলির বিষয়টি বিবেচনা করা কঠিন হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বদলির শর্তাবলীর ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে নিয়োগের সুপারিশ পাওয়া শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ দুই বছর পূর্ণ হওয়ার পর তিনি বদলির আবেদন করতে পারবেন। এর আগে কেউ আবেদন করলে সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না।
চাকরিজীবনে কেবল একবারই বদলি হওয়ার সুযোগ থাকবে। বদলির কারণে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক শূন্যতা তৈরি করা যাবে না। শিক্ষকের পদ শূন্য না থাকলে বদলির সুযোগ দেয়া হবে না। এমনকি আবেদনই বিবেচনায় নেয়া হবে না। পারস্পরিক বদলির ক্ষেত্রে উভয়ের সম্মতিপত্র থাকতে হবে। দুইজনের সম্মতিপত্র জমা দেয়ার পর এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। তবে একজনের সম্মতিপত্রের ভিত্তিতে পারস্পরিক বদলি দেয়া হবে না। পারস্পরিক বদলির ক্ষেত্রে উভয়ের সম্মতিপত্র থাকতে হবে।
একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একই পদে একাধিক ব্যক্তি বদলির আবেদন করলে এনটিআরসিএ কর্তৃক প্রদত্ত মেধাতালিকা বিবেচনায় নেয়া হবেমেধাতালিকায় যে এগিয়ে থাকবে তাকেই বদলির সুযোগ দেয়া হবে। বদলি প্রক্রিয়া সফটওয়্যারের মাধ্যমে হবে। সফটওয়্যারের মাধ্যমেই অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করা হবে। তবে এজন্য নতুন করে সফটওয়্যার তৈরি করা হবে না। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বদলির জন্য যে সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে সেটি আপডেট করা হবে। এরপর ওই সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হবে।
স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের বদলির বিষয়টি দেখবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। আর মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বদলির বিষয়টি দেখবে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ। বদলির আবেদনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান কিংবা ম্যানেজিং কমিটির কোনো অনুমতি নিতে হবে না। শিক্ষকরা সরাসরি অনলাইনে আবেদনের সুযোগ পাবেন।বদলির আবেদন ১৬ অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
বদলির কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় যেন কোনো ক্ষতি না হয় সেজন্য নতুন করে এই সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।কর্মশালা সূত্রে জানা গেছে, নারী শিক্ষকদের বদলির বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। বদলির ক্ষেত্রে কর্মরত শিক্ষকের নিজ জেলার ঠিকানা, নারী শিক্ষকদের স্বামীর কর্মস্থল, স্বামীর স্থায়ী ঠিকানার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
বর্তমানে কর্মরত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শিক্ষকদের নিজ জেলার দূরত্বও বদলির ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেয়া হবে। এছাড়া বদলির ক্ষেত্রে শিক্ষক নিবন্ধনের ব্যাচ বিবেচনায় নেয়া হবে বলে জানা গেছে।