প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ খান মোঃ রফিকুল ইসলাম বিশেষ প্রতিনিধি: পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারন বিষাক্ত কালোধোয়া। সেই বিষাক্ত ধোয়ার প্রধান কারন ইটভাটা।ইটভাটা থেকে নিঃসৃত বিষাক্ত কালো ধোয়ায় থাকে শিষা নামের এক উপাদান। যাহা মানবদেহের ফুসফুসের ক্যন্সার, এ্যাজমা,হাপানি, শ্বাসকষ্ট কস্ট সহ নানাবিধ মরনব্যধিতে আক্রমন করে। বিষেশ করে এই কালোধোয়ায় বেশী আক্রন্ত হয় শিশু এবং বয়স্করা।এজন্যই সরকার ইটভাটাকে বন্ধ করার আপ্রান চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কিছু অসাধু চক্রের কারনে সরকার এর পরিকল্পনা ব্যহত হচ্ছে।তারা তাদের স্বার্থ হাসিল এর জন্য এই ভাটা গুলোকে বন্ধ করার কোন চেস্টা করছে না।
গত ৭ ফেব্রুয়ারী বুধবার নারায়নগঞ্জের বন্দর থানার ফুনকুল, বারপাড়া, দাসেরগাঁও ও লক্ষণখোলা এলাকার ৪০/৫০ টি ইট ভাটার মধ্যে মাত্র ১৯ টি অবৈধ ইট ভাটাকে অর্থ দণ্ড করে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালনায় মোবাইল কোর্ট। উক্ত অভিযানে পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট কাজী তামজিদ অভিযান পরিচালনা করেন সকাল ১১ টা থেকে বিকাল পাচটা ত্রিশ মিনিট পর্যন্ত। এছাড়া ও আরো তিনটি অনুমোদনহীন ইটভাটার কাগজ তাদের হাতে ছিল।
সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল এখন বিকাল পাচটা ত্রিশ মিনিট হয়ে গিয়াছে আর কতক্ষন আমরা অপেক্ষা করব? জবাবে ম্যজিস্টেট মহদয় বলেন জরিমানার টাকার জন্য আমরা প্রয়োজনে রাত পর্যন্ত ওপেক্ষা করব এটা মোবাইল কোর্ট। সাংবাদিকগন ব্রিফিং চেয়ে বিদায় চাইলে তিনি রাজী হয়ে ব্রীফ দিয়ে স্থান ত্যাগ করে তাদের নিজর্স্ব অফিসে চলে যান। তবে সাংবাদিকগন সহ অনেকের ই মনে এই প্রশ্ন, অনুপস্থিত ঐ তিনটির জরিমানা কোন কৌশলে আদায় করবে? ইট ভাটায় ২০১৯ সাল থেকে কোন ছাড় পত্র দিচ্ছে না পরিবেশ সহ সকল প্রশাসনিক অধিদপ্তর।
ছাড়পত্র হীন ভাবে কিভাবে পরিচালিত হচ্ছে এই সকল ইট ভাটা।যদিও তাদের অনুমতি দিচ্ছে না তাহলে সেখানে আবার ভ্রাম্যমান আদালত মোবাইল কোর্ট এসে জরিমানা করাটা একটা হ্যাস্যকর বিষয় মনে হচ্ছে অনেকেরই।সরকারীভাবে বন্ধ ঘোষনা করার কথা থাকলেও চলছে সকল ইটভাটা। নস্ট হচ্ছে পরিবেশ, ভোক্তা পাচ্ছে না সঠীক মাপের ইট,ব্যবহৃত হচ্ছেনা মান সম্মত মাটি।ফসলী জমি থেকে তুলে আনছে মাটি।এত কিছুর পড়েও পরিবেশ অধিদপ্তর এর কর্মকর্তা গন এসে বছরে দুই বার জরিমানা করে যাচ্ছে।ইট ভাটার মালিক গন জরিমানা দিয়েও স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ইট ভাটার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
ঐ দিন মদিনা ব্রিকস্ এ বসে যখন ১৫ টি ভাটার মালিক কে জরিমানার টাকা নিয়ে আসতে বলে তারা তারা খুব আনন্দের সাথে টাকা নিয়ে আসে। তার কারন সরেজমিনে গিয়ে যে চারটি ভাটায় নামমাত্র ভাংঙ্গার নাটক করছে তাদের কাছ থেকে ৬ লক্ষ করে জরিমানা করে আর যাহারা মদিনা ব্রিকস্ এ টাকা নিয়ে আসছে তাদের জরিমানা অর্ধেক করায় তাদের মুখে যেন ঈদের আনন্দ বইছে।ইটভাটার আশেপাশের জনগনের কাছে জানা যায় এখানে স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসা কাছাকাছি থাকতেও নিয়মিত চলছে ইটভাটা।
ভ্রাম্যমান আদালত মোবাইল কোর্ট ১৯ টি ইটভাটার মধ্যে চার টি ইটভাটায় উপস্থিত হয়ে লোক দেখানো নাকি মিডিয়া কর্মীদের দেখানোর নামে কোন রকম নাম মাত্র চুল্লী ভাংচুর করার নাটক করে। তারা মিডিয়ার বা গনমাধ্যম কর্মীদের মোবাইল কোর্টের সাথে থাকতে বলে। তাই প্রায় ২০ জনের অধিক মিডিয়া কর্মী উপস্থিত ছিল।যাহাদের দুপুরে না খেয়ে তাদের কার্যক্রম ক্যমেরা বন্দী করছেন। পরের দিন প্রতি মিডিয়াকর্মীকে ৫০০ টাকা করে খরচ বাবদ প্রধান করে কিসের স্বাক্ষী হিসেবে রাখতে চায়? অবৈধ ভাটাগুলোকে বৈধ করার নাকি ৭০ লক্ষ টাকাকে বৈধ করার? মোবাইল কোর্ট টিম মিডিয়াকর্মীদের জন্য ৮ হাজার টাকা রেখে বাকি ৬২ হাজার টাকা সরকারী খাতে জমা হয়েছে কিনা এই প্রশ্নের উকি দিচ্ছে মিডিয়াকর্মীদের মনে।
যতটুকু ভাংচুর করার অভিনয় তারা করে দেখাল তাতে ভাটা একদিনের জন্য ও কার্যক্রম বন্ধ থাকার অবকাশ নেই। তাহলে কেন ব্যবহার করছে ভেকু?এমন কি, যে ইটভাটায় ম্যজিস্ট্রেট সহ তার টিম ভোজের আপ্যায়ন এর জন্য অবস্থান করছিল সেই মদিনা ইটভাটায় ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত থাকতেই তাদের ইট তৈরির কার্যক্রম চলমান থাকে। তাহলে জরিমানার টাকা দিয়েই কি বৈধতার সনদ দিল মোবাইল কোর্ট?সব মিলিয়ে ১৯ টি ইট ভাটার মালিক কে, দর কশাকশি করে সর্বমোট ৭০ লক্ষ টাকা জরিমানা করেন।
এমনও দেখা যায় ভাটার মালিকদের দেখানো যায়গা থেকে ভেকু দিয়ে কোন রকম দেয়ালের উপর দু একটা ডু মারে। এই কার্যক্রমে মোবাইল কোর্টের মত কোন আভাস পাওয়া যায়নি বলে মনে করে স্থানীয় বাসিন্দারা।শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অতি নিকটে থাকা ভাই ভাই ইট ভাটা সহ আরো ডজন খানেক ইটভাটা থাকলেও সেখানে তারা অভিযান পরিচালনা করেননি।
অথচ ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩ ও সংশোধনী আইন ২০১৯ অনুযায় লাইসেন্স স্থগিত ও বাতিল করন: জেলা প্রশাসন লাইসেন্সের কোন শর্ত লংঘন, এই আইনের অধীনে কোন অপরাধ সংগঠন কিংবা স্থগিত, ইট ভাটার কারনে তৎসংলগ্ন এলাকায় পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য হুমকির সম্মুখীন হলে জেলা প্রশাসন উপরোক্ত কারণে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সের কার্যকারিতা অনধিক বা ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করে বা অভিযুক্ত ইট ভাটার মালিক কে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে যথাযথ শুনানির পূর্বক লাইসেন্স বাতিল বা ইটভাটা কার্যক্রম বন্ধ করিবার জন্য আদেশ জারি করতে পারবেন।উল্লেখিত আইনের প্রয়োগ নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়নি।
সচেতন মহলের প্রশ্ন ? পরিবেশ দূষণের মতো একটা মারাত্মক অপরাধের জন্য আর্থিক দন্ড নিয়ে কিভাবে কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে পারেন? সরকার বারবার বন্ধ করতে বললেও কিভাবে ভাটার কার্যক্রম চলে? আবার তার উপর ভেকু দেখিয়ে জরিমানা করে? তাহলে কি ভাটার মালিক গন অনেক প্রভাবশালী যে সরকারী আইন তোয়াক্কা করেনা? তাহলে কি ভাটা দিয়ে জরিমানার কৌশল দেখিয়ে বিভিন্ন দপ্তরের অবৈধ টাকা ইনকামের একটা রাস্তা তৈরি করা? জরিমানা নিয়ে কি সকল ইটভাটাকে চলমান রাখার অনুমতি পত্রদিয়ে গেল?অত্র এলাকায় জনগন বলেন,প্রতিটি ইট ভাটায় বছরের ৬ মাস চালু থাকে তাতে দুইবারে জরিমানা ৬+৬=১২ লক্ষ টাকা হয়।
তাহলে মাসে ২ লক্ষ টাকা করে গড়ে জরিমানা হচ্ছে।কোন কোন ইট ভাটায় এর বেশীও জরিমানা হতে দেখাযাচ্ছে। তাহলে যদি ৩০ দিনে ২ লক্ষ টাকা এর মানে প্রতিদিন ৬৬৬৬ টাকা জরিমানা বাবদ তাদের জমা রাখতে হয়। এই টাকা টা যে কোন উপায় ভোক্তাদের কাছ থেকে উসুল করে।যাতে করে ভোক্তা সঠীক মুল্যে সঠীক ইট পাচ্ছে না। এলাকাবাসীর দাবী সরকার যেন এর সঠীক পরিকল্পনা করে একটা ব্যবস্থা গ্রহন করেন।