প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ মো: মাহফুজুর রহমান ( গৌরীপুর) ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : গৌরীপুর উপজেলার ২ নম্বর গৌরীপুর সদর ইউনিয়নে টিসিবির পণ্য বিক্রয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কার্ড থাকলেও পণ্য পায়নি প্রায় দুইশত সুবিধাভোগী। কারণ জানতে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও ডিলারদের নিজ কার্যালয়ে আজ (বৃহস্পতিবার) তলব করেছেন ইউএনও।
জানা যায়, গত বুধবার সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত টিসিবির দুইজন ডিলার এ ইউনিয়নের এক হাজার ৫২০ জন কার্ডদারীর কাছে ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রয়ের কথা থাকলেও প্রায় দুইশত কার্ডদারীকে বাকী রেখেই ৪টার পূর্বে চলে যায় ডিলারের ট্রাক। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে দুই কেজি করে সয়াবিন তেল, মুসুরির ডাল ও পাঁচ কেজি চাল। যার সরকার নির্ধারিত মূল্য ৪৭০ টাকা। টিসিবির ডিলার মেসার্স আলী এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স সোয়াদ এন্টারপ্রাইজ বলছে, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অতিরিক্ত কার্ড ও স্লিপ বিতরণের কারণে পণ্যের ঘাটতি হয়েছে।
এছাড়া মাঝে মাঝে চেয়ারম্যানের লোকজন এসে কার্ড ছাড়াই নিয়ে যায় পণ্য। সুবিধাভোগীরা জানান, এ ইউনিয়নে টিসিবির পণ্য বিক্রয় ও বিতরণে শুরু থেকেই অনিয়ম চলে আসছে। সরকার নির্ধারিত স্থান হাটশিরা মাদ্রাসা সংলগ্ন মোড়, বোরহান উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গজন্দর মোড় বাদ দিয়ে বিধি বহির্ভূতভাবে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বিতরণ ও বিক্রয় হচ্ছে টিসিবির ন্যায্য মূল্যের পণ্য। এতে গ্রামের দুরদুরান্তের দরিদ্র মানুষেরা টিসিবির পণ্য নিতে আসতে একদিকে যেমন সমস্যা হচ্ছে, তেমনি তাদের যাতায়াত খরচও হচ্ছে বেশি।
কোণাপাড়া গ্রামের আব্দুল হেকিম, কার্ড নং ১৬১, শালীহর গ্রামের মাঈন উদ্দিন, কার্ড নং ২৪, গাভীশিমুল গ্রামের মোছা: ডলি আক্তার, কার্ড নং ১৯৭, দৌলতপুর গ্রামের শামসুন্নাহার বেগম, কার্ড নং ১১৩৪ আজকের পত্রিকাকে জানান- তাঁরা দুপুর ২.৩০ মিনিট থেকে ৩.১৫ মিনিটের মধ্যে টিসিবির পণ্য নিতে গৌরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ট্রাকের কাছে এসেছেন। শুরুতে ডিলার বার বার বলেছে, যাদের কার্ড আছে তারা সবাই পণ্য পাবেন, কিন্তু কিছুক্ষণ বিক্রয়ের পর জানায় মাল (পণ্য) শেষ, আর কাউকে দেয়া হবে না, এই বলে তারা চলে যায়।
এ ব্যাপারে ২ নম্বর গৌরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হযরত আলী অতিরিক্ত কার্ড ও স্লিপ বিতরণের বিষয়টি অস্বীকার করে জানান- কার্ড দেখে দেখে ডিলাররা পণ্য বিক্রি করার কথা। কেন কম পরলো এটা তাঁরা জানে। মেসার্স আলী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারি মোঃ আলী হায়দার জানান- গৌরীপুর সদর ইউনিয়নে ৭৬০ জন্য কার্ডদারীর কাছে পণ্য বিক্রয়ের অনুমতি পেয়েছেন তিনি। পূর্বনির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী তিনি বুধবার সকাল থেকে ৭৬০ জন কার্ডদারীর কাছে পণ্য বিক্রয় করেছেন।
এসময় কোন ঝামেলাও হয়নি। মেসার্স সোয়াদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোঃ কামরুল ইসলাম জানান, তিনিও গৌরীপুর ইউনিয়নে ৭৬০টি কার্ডের বিপরীতে টিসিবির পণ্য বিক্রির অনুমতি পেয়েছেন। ঘটনার দিন ৪টার আগেই তাঁর বিক্রি শেষ হয়ে যায়, তাই ট্রাক নিয়ে চলে গেছেন। কার্ডদারীরা কেন পণ্য পায়নি, এর জবাবে তিনি বলেন- ইউপি চেয়ারম্যান অতিরিক্ত কার্ড বিতরণ করেছেন, মাঝে মাঝে স্লিপও পাঠান এজন্যই পণ্যের ঘাটতি হয়েছে।
গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নাহিদুল করিম জানান- টিসিবির বিষয়টি জানতে পেরেছি, আজ (বৃহস্পতিবার) ইউপি চেয়ারম্যান ও ডিলারদের অফিসে তলব করা হয়েছে। তদন্তপূর্বক এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে