প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ স্টাফ রির্পোটার: ৫ লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবীতে স্ত্রীকে মারধরের ঘটনায় ফতুল্লা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের করা মামলার আসামী যৌতুক লোভী সারফিন (৩১)কে ধরছে না ফতুল্লা থানা পুলিশ। গত ৮ অক্টোবর নির্যাতনের শিকার হাজীগঞ্জ গোপটা এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রশিদের মেয়ে রাজিয়া আক্তার রিয়া (২৩) বাদী হয়ে তার স্বামী সারফিনের বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
যার নাম্বার ২৬। মামলায় স্বামী সারফিন ছাড়াও শ^শুর সাহাবুদ্দিন আহম্মেদ, শ^াশুড়ী রীনা বেগম ও মুক্তিকে আসামী করা হয়েছে। এরা সকলেই মাসদাইর এনায়েতনগর এলাকার বাসিন্দা। একদিকে মামলা দায়েরের এক সপ্তাহ হয়ে গেলেও আসামীদের গ্রেফতার করছেনা ফতুল্লা থানা পুলিশ। অপরদিকে স্বামী সারফিন ও তার পিতা-মাতা, আত্নীয়রা মামলা তুলে নিতে বাদী রিয়াকে অব্যাহত হুমকী প্রদান করছে বলে অভিযোগ করেছে রিয়া। যার ফলে সে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে অভিযোগ। এ ব্যাপারে নারায়নগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার রাসেলের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী রিয়া ও তার পরিবার।
মামলা সুত্রে জানা যায়, গত ১৪ আগষ্ট, ২০২০ সালে ইসলাসী শরিয়ত মতে মাসদাইর এনায়েতনগর এলাকার বাসিন্দা সাহাবুদ্দিন আহম্মেদের ছেলে আসামী সারফিনের সাথে বিবাহ হয় হাজীগঞ্জ গোপটা এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রশিদের মেয়ে রাজিয়া আক্তার রিয়ার সাথে। বিবাহের পর তাদের গর্ভে তাফসির আহম্দে নামে ১২ মাসের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিবাহের পর থেকে আসামী যৌতুক লোভী সারফিন তার পিতা-মাতার ইন্ধনে ও পরামর্শে ভুক্তভোগী রিয়ার থেকে বিভিন্ন সময় যৌতুক দাবী করে আসছিলো।
এজন্য স্ত্রী রিয়াকে শারিরীক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো। অথচ সারফিন তার স্ত্রীকে ঠিক মতো ভরন পোষন দিতো না। স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে রিয়া তার পিতা মাতার কাছ থেকে ৩ ভরি স্বর্নালংকার, নগদ ৫লক্ষ টাকা, ৩০ হাজার টাকা মুল্যের একটি অপপো মোবাইল ফোন, ৯০ হাজার টাকা মুল্যের একটি স্যামস্যাং এলইডি টিভিসহ ৩লক্ষ ১০ হাজার টাকা মুল্যের ফার্নিচার স্বামীর বাড়িতে প্রদান করা হয়।
অথচ যৌতুক লোভী স্বামী সারফিন ও তার পিতা-মাতা এতো কিছু পেয়েও লোভ কমেনি। এরপর আাবার মোটর সাইকেল ক্রয় করার জন্য রিয়া ও তার পরিবারের কাছে ৫লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে। এই টাকা রিয়ার পিতা-মাতা দিতে অস্বীকার করলে সারফিন ও তার পিতা-মাতা রিয়ার উপর আবারো অত্যাচার শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে স্বামী সারফিন ও তার পিতা-মাতা মিলে মোটর সাইকেলের টাকার জন্য রিয়াকে মারধর করে নিলাফুলা জখম করে। রিয়ার ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে তাকে অসুস্থ্য অবস্থায় খানপুর ৩’শ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী রিয়া জানায়, তার স্বামী সারফিন প্রায় টাকার জন্য তাকে মারধর করতো। সর্বশেষ মোটর সাইকেলের টাকার জন্য তাকে মারধর করে। তাদের একমাত্র ছেলে তাফসির ও তাকে ভরনপোষন দেয়না। অবশেষে নিরুপায় হয়ে তিনি মামলা করতে বাধ্য হন। এদিকে মামলা করার এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও আসামীদের ফতুল্লা থানা পুলিশ গ্রেফতার করছে না বলে ভুক্তভোগী রিয়া ও তার পরিবারের অভিযোগ। অপরদিকে মামলা করায় রিয়া ও তার পরিবারকে মামলা তুলে নিতে অব্যাহত হুমকী প্রদান করছে যৌতুক লোভী আসামী সারফিন ও তার পরিবার।
মামলার জামিন নিতে চালাচ্ছে জোর তৎপর। পুলিশ কী তাহলে আসামীদের জামিনে সুযোগ করে দিচ্ছে বলে ভুক্তভোগী জানায়। এ ব্যাপারে মামলার আইও সাব-ইন্সপেক্টর রফিকুল ইসলামের সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি জানান, তিনি জরুরী কাজে বাহিরে আছেন। বিষয়টি পরবর্তীতে ফোন দিয়ে জানাবেন। এরফলে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে রিয়ার পরিবার। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।