প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আপনাকে আর কয়েকদিন মাত্র অপেক্ষা করতে হবে। মানুষের ক্ষোভ কত তীব্র হতে পারে প্রধানমন্ত্রী সেটা আপনার দেখার সময় হয়েছে।
তিনি বলেন যদি আমাদের আল্লাহর ওপর বিশ্বাস থাকে তাহলে আপনার শেষ রক্ষা হওয়ার কথা না। নমরুদরা কখনো জিতে নাই। ফেরাউন কখনো জিতে নাই। হিটলারের অবশেষে তার লাশটাও পাওয়া যায়নি। আপনি (শেখ হাসিনা) মনে করেছেন সবাই নীরব-নিস্তব্ধ কিন্তু মানুষের হৃদয়ে কান্না বয়ে যাচ্ছে। এই কান্না যখন আগ্নেয় পাথরের মত হবে, সেই আগুনে আপনার সরকার পুড়ে ছারখার হয়ে যাবে।
শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় ঢাকাস্থ ফেনী জেলা জাতীয়তাবাদী পরিষদ আয়োজিত বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।রিজভী বলেন কোনো অন্যায়ের কাছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কখনো মাথা নত করেননি তিনি কখনো দেশ ছেড়ে যাননি। শেখ হাসিনা গিয়েছিল। তারপরে তিনি মইনুদ্দিন ফখরুদ্দিনকে বললেন, বেগম খালেদা জিয়া দেশে রয়েছে আমিও যাব।
তারপরে তিনি তাদের সাথে মাস্টারপ্ল্যান করে ক্ষমতায় আসলেন। এরপরে শুরু হয়েছে একটু একটু করে আমাদের সার্বভৌমত্ব দুর্বল করার চক্রান্ত।তিনি বলেন ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তলে তলে সব ঠিক করেছেন দিল্লি ও তাদের পাশে আছে। কিন্তু দেশের জনগণ তাদের পাশে নাই প্রকারান্তে এটাও তারা বলেছেন যে, যারা তাদেরকে পছন্দ করে না তাদেরকেও তলে তলে ম্যানেজ করেছে।এটা থেকে প্রমাণিত হয়, দেশের জনগণ তাদের সাথে নেই। তারা চেষ্টা করছে নিজেদেরকে টিকিয়ে রাখার জন্য।
তাদের গণতন্ত্র হত্যা দুঃশাসন জোর করে ক্ষমতা দখল এগুলোর জন্য পৃথিবীর গণতান্ত্রকামী দেশগুলো যারা সমালোচনা করছেন তাদেরকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু সবাই তো ম্যানেজ হবে না।আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য বিএনপির এই নেতা বলেন আপনারা যদি জনগণের পক্ষে থাকতেন তাহলে তলে তলে ম্যানেজ করার কথা বলতেন না। আপনারা এত ম্যানেজ করছেন সুষ্ঠু নির্বাচনের ম্যানেজ করছেন না কেন? একটা সুষ্ঠু নির্বাচন দেওয়ার জন্য আপনি পদত্যাগ করবেন এটা দেশের মানুষ বিশ্বাস করে। একটা নিরপেক্ষ সরকার দিন।
আমরা তো বলছি না বিএনপির মনোনীত কোনো প্রার্থীকে দিন। যিনি কোনো দলের পক্ষপাতিত্ব করবেন না। সবাই যাকে পছন্দ করে বিশ্বাস করবে তাকে দিন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিতে শেখ হাসিনারা এত বাধছে কেন? তলে তলে সব ম্যানেজ করছেন। জনগণকে ম্যানেজ করার জন্য নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিচ্ছেন না কেন? তিনি বলেন এখানে কারণ রয়েছে। তিনি যে অন্যায় অপরাধ করেছেন তার জন্য তিনি মনে করছেন একটা বড় বিস্ফোরণ ঘটবে।
এই কারণেই যেনতেনভাবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, রাষ্ট্রশক্তিকে হাতের কব্জায় নিয়ে তিনি জনগণকে কাবু করার চেষ্টা করছেন। তিনি জনগণের সর্বভৌমত্ব হরণ করেছেন। জনগণের স্বাধীনতাকে হরণ করেছেন সব সাজিয়ে নিয়ে। নিজেকে নিশ্চিন্তে তার ক্ষমতায় কেউ হাত দিতে পারবে না। জনগণ থাকলো কি থাকলো না। সুষ্ঠু ভোটের দরকার নেই। পুলিশ, র্যাব, অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সব সংস্থা আমি সাজিয়েছি। অতএব আমাকে কেউ স্পর্শ করতে পারবে না।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষ্য এ রকম। আপনার বাবার বেলায়ও এ রকম হয়েছে। সব রাজনৈতিক দল বন্ধ। সব পত্রিকা বন্ধ তারপর সিরাজ শিকদারকে হত্যা করে সংসদে দাঁড়িয়ে বললেন কোথায় সিরাজ শিকদার। তার মানে তার প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ নাই। সিরাজ শিকদার ছিল। সেও নাই কথাটা তো তাই দাঁড়ায়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।রিজভী আরও বলেন ১৯৭৫ সালের মর্মান্তিক যে হত্যাকাণ্ড আমি ব্যক্তিগতভাবেও দুঃখ প্রকাশ করি। কিন্তু নিজেকে সম্রাট মনে করলে।
নিজের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী নাই মনে করলে আল্লাহর তরফ থেকে অনেক কিছুই হয়। আপনি প্রধানমন্ত্রীও তাই মনে করছেন। যে বেশি কথা বলল তাকে ধরে নিয়ে যাও। এ্যানী কথা বলল তাকে ধরে নিয়ে গেল। শারীরিক নির্যাতন করেছে। তাকে গায়েবি মামলা দিচ্ছে। সুষ্ঠু ভোটের কোনো বালাই নাই। তারপরেও কি আপনার শেষ রক্ষা হবে? এ সময় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রেহেনা আক্তার রানু ও আবু তালেব উপস্থিত ছিলেন।