প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ কামরুজ্জামান হারুন:মাইজভান্ডার দরবার শরীফের আধ্যাত্মিক সাধক হযরত গাউছুল আজম মাওলানা সৈয়দ গোলামুর রহমান প্রকাশ বাবা ভান্ডারীর ১৬১তম (৩ দিন ব্যাপী) খোশরোজ শরীফ অনুষ্ঠিত হয়েছে।আনজুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভান্ডারীয়ার উদ্যোগে লাখো ভক্ত-জনতার অংশগ্রহণে ও দেশবাসীর ওপর আল্লাহর রহমত ও নিপীড়িত মানবতার মুক্তির কামনায় আখেরি মুনাজাতের মাধ্যমে খোশরোজ শরীফ সম্পন্ন হয়।
১৪ অক্টোবর শনিবার চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি মাইজভান্ডার দরবার শরীফে ১৬১তম খোশরোজ শরীফের আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন, মাইজভান্ডার দরবার শরীফের বর্তমান ইমাম, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) ও লিবারেল ইসলামিক জোটের চেয়ারম্যান হযরত শাহসূফী ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী মাইজভাণ্ডারী। আগত ভক্ত ও আশেকানরা মাইজভান্ডার দরবারে এসে সারিবদ্ধভাবে দরবারের আওলাদে পাকগণের সাথে সাক্ষাত করেন। ভক্তরা মাইজভান্ডার শরীফের সকল রওজায় জেয়ারতের মাধ্যমে নিজ নিজ মনোবাসনা পূরনের জন্য কোরআন তেলোয়াত, জিকির আজকার করে মহান রাব্বুল আলামীনের দরবারে ফরিয়াদে মশগুল ছিলেন।
খোশরোজ শরীফ উপলক্ষে আয়োজিত মাহফিলে আখেরি মুনাজাতের পূর্বে সভাপতির বক্তব্যে হযরত শাহসূফী ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী ওয়াল হোসাইনী আল মাইজভাণ্ডারী বলেছেন, ইসলামের সূফিবাদি দর্শন চর্চার উৎকৃষ্ট স্থান হচ্ছে মাইজভাণ্ডার শরিফ। সূফিসাধকরা কখনো মানুষে-মানুষে কোনো প্রভেদ-বিভাজনকে প্রশ্রয় দেন না। তেমনি গাউছুল আ’যম হযরত সৈয়দ গোলামুর রহমান বাবাভাণ্ডারী (ক.) মানুষে-মানুষে ঐক্য-সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন গড়ার দিক নির্দেশনাই দিয়ে গেছেন। মূলত হযরত গাউছুল আজম শাহসূফী সৈয়দ গোলামুর রহমান বাবাভান্ডারী (ক.) ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাতিঘর।
তিনি আজকের সহিংস অশান্ত বিশ্বে শান্তি ওজননিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে হযরত বাবাভাণ্ডারী (ক.) ও মাইজভাণ্ডারী মহাত্মাদের প্রদর্শিত বিশ্বশান্তির রূপরেখা অনুসরণের আহ্বান জানান।এ সময় তিনি বক্তব্যে ফিলিস্তিনে বর্তমান ইসরাইলি হামলা প্রসঙ্গ টেনে বলেন, অবৈধ দখলদার দস্যু ইসরাইলি বাহিনী ১৯৪৮ সাল থেকেই ফিলিস্তিনের মুসলমানদের আবাসন ভূমি জবর দখল করে তাদের ওপর ব্যাপকভাবে জুলুম-নির্যাতন ও দখলদারিত্ব চালিয়ে আসছে। দীর্ঘ ৭৫ বছর ধরে ইসরাইলিরা ফিলিস্তিনে বর্বর গণহত্যা ও সন্ত্রাস চালাচ্ছে। ফিলিস্তিনের নিরীহ জনগণের ওপর এভাবে অব্যাহতভাবে হামলা চালিয়ে বর্তমান ইসরাইলি সরকার মধ্যপ্রাচ্যের নব্য সন্ত্রাসবাদী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
সন্ত্রাসী ইসরাইলি হামলা বিশ্বের মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিতে হবে। তিনি বলেন, যে ধর্মেরই হোক না কেন আমরা সবসময় সব ধরনের নারী ও শিশু হত্যার বিরুদ্ধে। বিএসপি চেয়ারম্যান বলেন, সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, ইসরাইলের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান বাইডেন প্রশাসনের যুক্তিহীন পক্ষপাতিত্ব। মূলত মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের মদদেই বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের মতামত উপেক্ষা করে ফিলিস্তিনের জনগণের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিকে স্তব্ধ করে দিতে চাইছে। এই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ অস্ত্র দিয়ে, অর্থ দিয়ে, কূটনৈতিক সাহায্য দিয়ে ইসরাইলি বাহিনীর এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে টিকিয়ে রেখেছে। অথচ তারাই কথায় কথায় বিশ্ববাসীকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সবক দেয়।
তিনি আরো বলেন, জাতিসঙ্ঘসহ সব আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে ইসরাইলিরা অব্যাহতভাবে আন্তর্জাতিক আইনকানুন, রীতিনীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করে আসছে। বিশ্বের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশ এবং জাতিসঙ্ঘ দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর আগ্রাসন থামাতে বারবার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে বিশ্ববাসীর কাছে এ কথা দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ফিলিস্তিন সমস্যার কোনো সমাধান হবে না। তাই ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ীভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা পালন করার জন্য ওআইসি, জাতিসঙ্ঘ, শান্তিকামী গণতান্ত্রিক বিশ্ব ও মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আমি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, শাহ্জাদা সৈয়দ মাশুক-এ-মইনুদ্দীন আল্-হাসানী, শাহ্জাদা সৈয়দ হাসনাইন-এ-মইনুদ্দীন আল্-হাসানী, হযরত সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্টের মহাসচিব এডভোকেট কাজী মহসীন চৌধুরী।আন্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়ার মহাসচিব খলিফা শাহ মো: আলমগীর খাঁন, ঘিলাতলা দরবারশরীফের সাজ্জাদানশীন মাওলানা বাকী বিল্লাহ আল আজহারী, মাওলানা রুহুল আমীন ভূঁইয়া চাঁদপুরী, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির দপ্তর সম্পাদক মো: ইব্রাহিম মিয়া , প্রচার সম্পাদক চৌধুরী মোঃ হোসেন, অধ্যক্ষ আল্লামা গোলাম মুহাম্মদ খান সিরাজী, আমতল সিদ্দিকীয়া মইনীয়া সুন্নীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা বাকের আনসারী, মুফতী মাওলানা মাকসুদুর রহমান, খলিফা মাওলানা হাসান , হাফেজ খাজা বাহাউদ্দীন , শায়ের মাওলানা মনছুর আলী, হাফেজ মাওলানা কেরামত আলী প্রমুখ।