মতলব উত্তরে ভগবান শ্রী কৃৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

0
মতলব উত্তরে ভগবান শ্রী কৃৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ খান মোহাম্মদ কামালঃ চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় ধর্মীয় নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পরমেশ্বর ভগবান শ্রী কৃৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমী। বুধবার ৬ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার সময় জন্মাষ্টমী উৎসব উপলক্ষে উপজেলা পরিষদ থেকে একটি ধর্মীয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি উপজেলার প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

ভক্তরা রাধা কৃষ্ণের যুগল মূর্তি ও কংস সেজে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ কুদ্দুস ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল হাসান। এ ছাড়াও শোভাযাত্রায় হিন্দুধর্মাবল্বী নারী-পুরুষনা অংশ নেন। র‌্যালি শেষে উপজেলা পরিষদ মায়া বীর বিক্রম অডিটোরিয়ামে জন্মাষ্টমী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক বিমল চন্দ্র দাস এর সভাপতিত্বে ও জন্মাষ্টমী উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্যামল চন্দ্র দাস এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ কুদ্দুস। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল হাসান। এতে আরো বক্তব্য রাখেন, মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মহিউদ্দিন, মতলব উত্তর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান মিয়া, উপজেলা পূজাউদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি রাদেশ্যম রায়,চাঁদপুর জেলা ব্রাহ্মন সম্প্রদায়ের সাংগঠনিক সম্পাদক বলাম গোস্বামী প্রমূখ।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ কুদ্দুস বলেছেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ তার অগণিত প্রমাণ রয়েছে। বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ ও অসাম্প্রদায়িক দেশ; এদেশে সব ধর্মের মানুষ নিজেদের নাগরিক অধিকারসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন যা রাষ্ট্র নিশ্চিত করেছে। ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারনেই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নিরাপদে তাদের ধর্মীয় উৎসব পালন করতে পারছে। “ধর্ম যার যার উৎসব সবার”।

বাংলাদেশে বরাবরের মতো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চলমান রয়েছে। একবারও সেই অবস্থান থেকে মতো বিচ্যুতি হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মানুষ যার যার ধর্ম পালন করতে পারছে। প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় রাষ্ট্র পরিচালনার সঙ্গে সব ধর্মের মানুষের সম্প্রীতির মাধ্যমে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সহ সকল ধর্মের মানুষ মিলে মিশে ঐক্যবদ্ধ ভাবে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। কোনো অশুভ শক্তি যাতে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে না পারে সেদিকে সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

সব ধর্মের মূল বাণী মানুষের কল্যাণ উল্লেখ করে উপজেলা চেয়ারম্যান এমএ কুদ্দুস বলেন, আদিকাল থেকেই এ দেশে প্রতিটি ধর্মীয় উৎসব সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হয়ে আসছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের সব ধর্মের মানুষকে একসূত্রে গাঁথার চেষ্টা করে গেছেন অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনই ছিল তার উদ্দেশ্য। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাও সম্প্রীতির বন্ধনে দেশকে বেঁধে রেখেছেন।

উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ কুদ্দুস বলেন,একমাত্র আওয়ামীলীগের সরকারের আমলেই সনাতন ধর্মালম্বীরা ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসবের মধ্যদিয়ে শুভ জন্মাষ্টমী ও শারদয়ি দূর্গাপূজা উৎসবমূখর ও আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপন করতে পেরেছেন। শেখ হাসিনার সরকারে থাকলে আপনারা ভালো থাকবেন,কাজেই সামনের জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে পূনরায় প্রধানমন্ত্রী করতে হবে। সেজন্য সবাইকে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে হবে।বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ কুদ্দুস আরও বলেন,ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আমরা বাংলাদেশিরা এমনি জাতি, যারা সব ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার লোকজন প্রাণান্ত অংশ গ্রহণ করি এবং উৎসবকে সফল করি।

আমাদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই। কখনও ছিল না, আশা করি থাকবেও না। কারণ জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে দেশের সকল ধর্মের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন সেই ৭১’র স্বাধিকার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। নয় মাস যুদ্ধ করে এই দেশ মাতৃকাকে পাকিস্তানী বাহিনীর হাত থেকে স্বাধীন করেছিলেন। যেহেতু পূর্বেও কোনোরূপ ভেদাভেদ ছিল না, আজও নেই, আগামীতেও সৃষ্টি হবে না।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একতাবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ভয় পেলে চলবে না। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন করে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখতে হবে।প্রসঙ্গত আজ বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) সনাতন ধর্মালম্বীদের ভগবান শ্রী কৃৃষ্ণের জন্মতিথি। শাস্ত্র মতে ভগবান শ্রী কৃৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করে ছিলেন ভাদ্র্র মাসের কৃৃষ্ণ পক্ষের অষ্টম তিথিতে।

তার এই জন্মতিথিকে জন্মাষ্টমী হিসাবে উদযাপন করা হয়।তারই ধারাবাহিকতায় সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায়ও বাংলাদেশ জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ মতলব উত্তর উপজেলা শাখার সনাতন ধর্মালম্বীরা ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসবের মধ্যদিয়ে শুভ জন্মাষ্টমী উদযাপন করে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here