প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ খান মোহাম্মদ কামাল ঃ রক্তাক্ত ২১ আগস্ট। ১৯ বছর আগে ২০০৪ সালের এই দিনে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ
কেঁপে উঠেছিলো মুহর্মুহ গ্রেনেড বিস্ফোরণে। মানুষের আর্তনাত আর ছুটাছুটিতে সেখানে তৈরি হয়েছিলো বিভীষিকাময় পরিস্থিতিআওয়ামীলীগের
সমাবেশে নারকীয় গ্রেনেড হামলায় ঝরে যায় চাঁদপুরের মতলব উত্তরের মোহনপুর ইউনিয়নের পাঁচআনী গ্রামের ঢালাই শ্রমিক আতিকসহ ২৪টি তাজা প্রাণ।
আহত হন দলীয় ৫ শতাধিক নেতাকর্মী। অল্পের জন্য রক্ষা পান দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। সেদিন দলীয় সভঅনেত্রী শেখ হাসিনাকে মানবঢাল তৈরি করে রক্ষা করেছিলেন তখনকার সভা সঞ্চালনাকারী ঢাকা মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান
আওয়ামীলীগের সভাপতিমন্ডলির সদস্য সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রমসহ দলীয় নেতৃবৃন্দ। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত মতলবের আতিকের সন্তানের চাকুরির আকুতি নিহত আতিকের স্ত্রী লাইলী বেগমের।
নিহত আতিকের বাড়ি চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার উত্তর পাঁচআনি গ্রামে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিউনিতে গ্রেনেড হামলাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন নিহত স্ত্রী লাইলী বেগম। চার সন্তান নিয়ে দুঃখে কষ্টে সংসার চালাচ্ছেন আতিকের বিধবা স্ত্রী লাইলী বেগম (৫৫)। বড় মেয়ে তানিয়া আক্তারের (২৬) আর্থিক দৈন্যদশার জন্য এইচএসসি পাসের পর লেখাপড়া থেমে যায়। ফলে ৬ বছর আগে তার বিয়ে হয়ে যায়।
বড় ছেলে মিথুন (২৪) নারায়নগঞ্জে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরীরত, স্ত্রীকে নিয়ে সেখানেই বসবাস করেন। মেজ ছেলে মিন্টু (২৩) ও ছোট ছেলে শাকিব (১৯) জীবিকার তাগিদে কোম্পানীতে চাকুরী করেন। ২০ আগস্ট রবিবার দুপুরে সরেজমিন আতিকের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, চৌ-চালা ঘরে তার স্ত্রী লাইলী বেগম চার সন্তান নিয়ে কষ্টে সংসার চালাচ্ছেন। লাইলী জানান, ২১ আগস্ট আসলেই সাংবাদিকরা খোঁজ-খবর নেন। এ ছাড়া আর কেউ এই পরিবারের খোঁজ খবর নেন না।
আতিকুর রহমানের মেয়ে তানিয়া আক্তার বলেন, আমাদের একটি চাকরির প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী যদি আমাদের ভাইবোনের চাকরির ব্যবস্থা করতেন তাহলে আমরা একটু স্বচ্ছলভাবে জীবনযাপন করতে পারতাম। স্ত্রী লাইলী বেগম জানান, প্রধধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম ১ লাখ, তারপর সঞ্চয়পত্র ১০ লাখ, এফডিআর-এর জন্য ২০ লাখ এবং নগদ ৫ লাখ টাকা দিয়েছিলেন।
এ ছাড়া আর কোনো সাহায্য আমরা পাইনি। লাইলী বেগম আরো বলেন, আমার স্বামীর হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানাই। আর যেন কোন স্ত্রী তার স্বামীকে অল্প বয়সে হারাতে না হয়। আতিকের মা খোরশিদা বেগম জানান, ১৬ বছর যাবত ছেলের জন্য কেঁদে কেঁদে বুক ভাসিয়ে দিয়েছে। ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলার সাথে জড়িতদের ফাঁসির দাবি জানাই।
আমার সন্তানের হত্যাকারীদের ফাঁসি দেখে যেন যেতে পারি। উল্লেখ্য, আতিকুর রহমান ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে ঢালাই শ্রমিকের কাজ করতেন। আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে সেদিন বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের জনসভায় তিনি যোগদান করেছিলেন। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সেদিন তাকে জীবন দিতে হয়েছিল ঘাতকদের গ্রেনেড হামলায়।