মতলব উত্তরে ভয়াভহ লোডশেডিং ও প্রচন্ড তাপদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন

0
মতলব উত্তরে ভয়াভহ লোডশেডিং ও প্রচন্ড তাপদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ খান মোহাম্মদ কামালঃ চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় গত কয়েকদিনের প্রচন্ড তাপদাহ ও লোডশেডিং এ জনজীবন বিপর্যস্থ ও দুর্বিষহ হয়ে ওঠেছে। হুমকির মুখে রয়েছে শিশু স্বাস্থ্য। ক্ষতিগ্রস্তÍ হচ্ছে কৃষক ও শিক্ষার্থীরা এবং উৎপাদন মুখী কল-কারখানার মালিকরা। পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হওয়ার কারণে লোডশেডিং এর প্রভাব বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

তীব্র্র গরমে পুড়ছে জনপদ, মাঠ-ঘাট ও শষ্যের ক্ষেত। কোথাও স্বস্তির বাতাস নেই। সর্বত্র গরম আর গরম, কখনও প্রচন্ড, আবার কখনও ভ্যাপসা গরম। বৈশাখ শেষ, জ্যৈষ্ঠ মাসও শেষের পথে তবুও বৃষ্টির দেখা নেই। ভ্যাপসা গরমের তান্ডব চলছে জনপদে, সূর্যের প্রখরতা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুপুর হতে না হতেই সড়ক বাজারে লোক কমে যাচ্ছে। একটু প্রশান্তির জন্য গাছতলায় ঠাই নিচ্ছে মানুষ। অসহনীয় তাপ, রৌদ্রযন্ত্রনা সেই সাথে পানি সঙ্কটে জনজীবনকে আরও এক ধাপ বিপর্যয়ের মুখে নিক্ষিপ্ত করছে।

প্রাকৃতিক গরমের সাথে যোগ হয়েছে লোডশেডিং। লোডশেডিং এর কারণে লেখাপড়া করতে পারছে না শিক্ষার্থীর। হাসপাতালগুলোতে অসুস্থ রোগীরা কাতরাচ্ছে। বিপর্যস্ত জনজীবনের পাশাপাশি উৎপাদন কমে যাচ্ছে কলকারখানা গুলোতে। অনাবৃষ্টি এবং লোডশেডিং এ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ইরিধানের চাষ, ফসলের মাঠ ফেটে চৌচির, বীজতলা শুকিয়ে যাচ্ছে। বীজতলা সেচের মাধ্যমে উর্বর রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। ফলে কৃষকের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। অধিকাংশ এলাকায় পানির স্তর নিচে নেমে গেছে।

গরমে কেবলমাত্র জনজীবনেই অস্থিরতা আনছে না, নানান ধরনের গরমজনিত এবং পানি বাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যেখানে বেশি ক্ষতিগ্রস্তÍ হচ্ছে শিশুরা। শিশুদের একটু আরাম দেয়ার জন্য একটু ছায়াতল ঠান্ডা জায়গা খুজছে অভিভাবকরা। এদিকে বাজারে দেখা মিলছে না চার্জার ফ্যান ও সৌর বিদ্যুতের । অতি গরম হিটস্টোকের কারণ হিসেবে জানান দিচ্ছেন চিকিৎসকরা, আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বৃষ্টিপাত হলে তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে।

আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য আগামী দিনগুলোতে অধিক পরিমাণ তাপদাহ আসছে, তাপদাহ জনজীবনের দুরবস্থার সব ক্ষেত্রই বিস্তৃত করেছে। তাপদাহ আর রৌদ্রের প্রখরতা হতে মুক্ত থাকতে হিটস্ট্রাক, পানিবাহিত ও গরম জনিত রোগের কবল হতে মুক্ত রাখতে সূর্যের প্রখরতা ভেদ করে বাইরে নয়, ঘাম ঝরানো নয়, সহনীয় ঠান্ডা আবহাওয়ায় নিজেকে সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন আবহাওয়াবিদ এবং চিকিৎসকগণ।
উপজেলার মালাইর কান্দি গ্রামের সোহেল রানা ও ঠাকুরচর গ্রামের আবুল কালাম জানান, গত কয়েকদিন ধরে শোডশেডিং আর গরমের কারণে ঘুমাতে পারছেন না। ছোট দুই সন্তানকে নিয়ে খোলা আকাশের নিচেই বসে থাকতে হয় আমাদের।

কারেন্ট যাওয়া-আসার মধ্যে থাকছে। তিনি বলেন, একবার কারেন্ট গেলে দেড় ঘণ্টা খবর নেই। আসলে আবার ৪০ মিনিট থাকছে। গড়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৩ ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। এভাবে থাকা খুব কঠিন। আদুরভিটি গ্রামের বাসিন্দা ইলিকট্রনিক্স মেকার আবুল কালাম জানান, আমি কারেন্টের ওয়ারিং কাজ করি।

কিন্তু লোডশেডিংয়ের কারণে তার কাজেও সমস্যা হচ্ছে।কমিউটার দোকানদার সুমর শিকদার জানান, এখন লোডশেডিং অত্যাচারের পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। একবার কারেন্ট এসে ফ্যান চালু না হতেই আবার চলে যাচ্ছে। কম্পিউটারে কাজ শুরুই করা যাচ্ছে না। লোডশেডিং দেখে মনে হচ্ছে আমরা ২০ বছর পিছিয়ে গেছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here