মতলব উত্তরের এখলাছপুর মানিক ঘোষের বাড়িতে শীতলা পূজা অনুষ্ঠিত

0
মতলব উত্তরের এখলাছপুর মানিক ঘোষের বাড়িতে শীতলা পূজা অনুষ্ঠিত

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ  খান মোহাম্মদ কামাল ঃ পুরোহিতের মন্ত্রপাঠ, ঢাকের বাদ্য ও কামার ঘণ্টাসহ নানা আয়োজনে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার এখলাছপুর লঞ্চঘাট সংলঘ্ন মানিক ঘোষের বাড়ির মন্দিরে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শীতলাপূজা পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার ( ১৩ মে) বিকেল ৪ টার সময় মতলব উত্তর উপজেলার এখলাছপুর লঞ্চঘাট সংলঘ্ন মানিক ঘোষের বাড়িতে মানিক ঘোষের উদ্যোগে উৎসবমূখর পরিবেশে মা শীতলা পূজা পালন করা হয়। শীতলাতলা পূজা মন্দির কমিটির সভাপতি মানিক ঘোষ এর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় শত শত ভক্তবৃন্দ পূজা উপস্থিতিতে মিলন মেলায় পরিণত করে। শত শত ভক্তের উলুধ্বনি আর পদচারণায় মুখরিত হয় পুরো ঘোষ বাড়ি।

শীতলাতলা পূজা মন্দির কমিটির সভাপতি মানিক ঘোষ সকল ভক্তবৃন্দদেরকে স্বাগত জানান। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,প্রদিপ ঘোষ,মানব ঘোষ, রঞ্জন ঘোষ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও শীতলাতলা পূজা উৎসব অনুষ্ঠানে ঠাকুরকর্তা নারায়ন চন্দ্র চক্রবতিসহ সনাতনধর্মীয় নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধসহ সকল শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিদের পাশা-পাশি অন্যান্য ধর্মের মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।

মানিক ঘোষ জানান,প্রতি বছর চৈত্র ও বৈশাখ মাসে এ শীতলা পূজা উৎসব পালন করে থাকেন হিন্দু সম্প্রদায়ের ভক্তরা। এ পূজাকে ঘিরে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভক্তরা উপোস থেকে সন্ধ্যার পর উপোস ভাঙ্গেন। এটি দেবী শীতলাকে উৎসর্গ করা হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি উৎসব। কাঁচা, আধপাকা বেল, মৌসুমি ফলমূলসহ নানান খাবার ও পূজার উপকরণ লাগে। পুরোহিত অন্যান্য শাস্ত্রীয় পূজার মতোই মন্ত্রপাঠ ও হোম যজ্ঞ করে শীতলা পূজা করেন।পূজা শেষে হোম যজ্ঞের কালি ও ঘি একত্রে মিশিয়ে সবার মাথা-কপালে লাগানো হয়।

প্রসাদ ও শীতলার লুট দেওয়া হয়। তিনি আরও জানান, আয়োজিত হয় রোগমুক্তি ও সমাজের সুস্বাস্থ্য প্রার্থনায়। প্রার্থনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনাসহসহ দেশের সুখ,শান্তি, উন্নতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।  শীতলা পূজাপালনকারীদের মতে, আদ্যাশক্তি দেবী দুর্গার অবতার হিসাবে, তিনি পক্স, ঘা, ত্বক সম্পর্কি প্রভৃতি রোগ নিরাময় করেন এবং পিশাচ এর হাত থেকেও রক্ষা করেন।

মানুষের হাম-বসন্ত-পাতলা পায়খানা ও জ্বর হলে এগায়ে গুটি বের হলে,সর্দি লাগলে, পাতলা পায়খানা করলে শীতলা পূজার মানসি (মানত) করা হয়। মানুষের হাম-গুটিবসন্ত এসব থেকে পরিত্রানের লক্ষ্যে এ পূজা পালন করে থাকেন। বিশ্বাস করা হয় শীতল অষ্টমীতে কোনও ভক্ত যদি সমস্ত নিয়মকানুনমেনে নিষ্ঠা করে দেবী শীতলার পুজো করেন, তাহলে সমস্ত সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে এবং সংসারে কোনও রোগ ভোগে থাকে না।দোলযাত্রার পরবর্তী অষ্টমী তিথিতে দেবী শীতলার আরাধনা করা হয়।

হিন্দু ধর্মের বিশ্বাসানুসারে এই দেবীর প্রভাবেই মানুষ বসন্ত, প্রভৃতি চর্মরোগাক্রান্ত হয়। এই কারণেই গ্রাম বাংলায় বসন্ত রোগ মায়ের দয়া নামে অভিহিত হয়ে থাকে। ভক্তদের বিশ্বাস কলস থেকে তিনি আরোগ্য সূধা দান করেন এবং ঝাড়ু দ্বারা রোগাক্রান্তদের কষ্ট লাঘব করেন।

শীতলাপূজা পূজা করতে আসা ভক্ত গীতা রানী ঘোষের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, এই পুজার জন্য আমরা সারা বছর অপেক্ষা করে থাকি।এই পুজাতে এখলাছপুরের ও আসে পাশের এলাকার ভক্তবৃন্দ উপস্থিত হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here