প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ : নারায়ণগঞ্জ শ্রমিকের প্রাণের শহর। প্রতি ঈদে প্রায় সময়ই আমরা লক্ষ্য করি নারায়ণগঞ্জের কিছু গার্মেন্টস মালিক শ্রমিকের বেতন ঈদ বোনাস না দিয়ে উধাও হয়ে যায়। গত ঈদের আগের ঈদে উধাও হয়ে যায় কটন পাওয়ার লিঃ এর মালিক লোকমান হাকিম এখনও পর্যন্ত তিনি উধাও রয়েছে , পুলিশ প্রশাসন তাকে খুঁজে পায়নি।
শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে ঈদের পূর্ব বিবৃতি গণমাধ্যমে জানান শ্রমিক জাগ্ররণ মঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম গোলক। তিনি জানান, গত বছর ঈদে বিএস গার্মেন্টস এর মালিককে খুঁজে বের করতে পারলেও শ্রমিক এখনও তার কাছে টাকা পায়। এবার ঈদে বেশ কিছু সুনামধন্য গার্মেন্টস এর মালিক শ্রমিক ছাঁটাই করছে ঈদের আগে। অনেককেই জোড় করে কৌশলে রিজাইন পেপারে সই করিয়ে নিয়ে প্রাপ্য পাওনা টাকা পরিশোধ করেনি।
বিবৃতিতে তিনি আরও জানান, আদমজী ইপিজেডের রয়েছে নানা সমস্যা। তারা নানা ভাবে একই কায়দায় শ্রমিক নির্যাতন করে। শ্রমিক ছাঁটাই করে সেক্সোয়াল হেরেজমেন্ট করে। স্ক্যনডেক্স নিট ওয়ার লিঃ এর শ্রমিকরা প্রায় ১০ মাস ধরে আন্দোলন করছে এখনও তাদের প্রাপ্য পাওনা টাকা পায় নি। ঈদের আগে তারা তাদের প্রাপ্য পাওনা টাকা পাবে কিনা তাও অনিশ্চিত। যদি ঈদের আগে তারা তাদের প্রাপ্য পাওনা টাকা বেতন বোনাস না পায়, তাহলে তাদের পথে বসতে হবে।
তাদের পক্ষে উদ্যোগ নেওয়ার কেউ, বেপজা বড় বড় কথা বলে। আজ নানা কাল, কাল না পরশু স্ক্যানডেক্স এর শ্রমিকদের ঘুরাচ্ছে। ফলে আদমজী শ্রমিক অঞ্চলে যে কোন সময় শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি হতে পারে। তাছাড়া কোন কারণ ছাড়াই যেভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে লাগামহীন পাগলা ঘোড়ার মতো সরকার মন্ত্রীরা যতই বলছে কিছুই হবেনা। কিছুই হবেনা, কিছুই হতেও বেশি সময়ও লাগবে না। পাঁচ বছরে বাসা ভাড়া ঘর ভাড়া সহ জিনিস পত্রের দাম হাজার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
অথচ গার্মেন্টস শ্রমিক সহ নৌ শ্রমিক, রি-রোলিং মিলের শ্রমিক, চা শ্রমিক নির্মাণ শ্রমিক সহ অন্যান্য সকল সেক্টরের শ্রমিকদের ১ টাকাও বাড়েনি। তাছাড়াও বেপজার কাউন্সিলার ইফতেখার ক্যানডেক্স নীট লিঃ এর শ্রমিকরা তাদের পাওনা টাকা কবে দিবে জানতে বেপজায় গেলে শ্রমিকদের সাথে খারাপ আচরন করে। বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন বার বার শ্রমিকের মজুরী বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন করে শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরী বৃদ্ধি করা হয়নি। মজুরী বোর্ড গঠন করা হলেও আগামী ৬ মাসের মধ্যে শ্রমিকের মজুরী বৃদ্ধি করা হবে কিনা তাও অনিশ্চিত।
সরকারি শ্রমিক সংগঠন ও সহ ৭ টি সংগঠন মিলে সম্বলিত শ্রমিক সংগঠন (স্কপ) যৌথভাবে সম্বলিত মিলে ২৩ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরী ঘোষণা জানালেও সরকার পক্ষ এখন পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। অন্যদিকে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান ২০ রমজানের মধ্যে প্রায় সকল শ্রমিকদের বেতন- বোনাস সহ পাওনাদি দিয়ে দেওয়ার আহবান করেন। অথচ ৯০ শতাংশ মালিক তার কথা আমলে নেয়নি।
শ্রমিকের বেতন বোনাস পরিশোধ করেনি। ফলে যে কোন সময় শ্রমিক অসন্তোষ তৈরি হলেও শ্রমিক নেতৃত্ব দায়ী থাকবে না। তাই যথাযথ প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে সকল মালিক যেন শ্রমিকের পূর্ণ বেতন ও ঈদ বোনাস যাতে পরিশোধ করে সে দিকে নজরদারি বাড়াতে। সবাইকে অগ্রিম ঈদের শুভেচ্ছা।