প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ জেলা সংবাদদাতা:আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার হচ্ছিল কুমিল্লায় যুবদলের বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা ও ইফতার মাহফিলে। এতে বাধা দেয় পুলিশ। এসময় পুলিশের সাথে বিএনপি-যুবদল-ছাত্রদল নেতৃবৃন্দের বাকবিতণ্ডা ও ধাক্কাধাক্কি হয়। এরই মধ্যে দুইতিন মিনিটে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রেখে ভিডিও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন তারেক রহমান। মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে কুমিল্লা টাউন হলে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অন্তত ২২ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান।
জানা গেছে, যুবদলের কুমিল্লা বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি বরকত উল্লা বুলু। প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু। প্রতিনিধি সভা চলাকালে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে লন্ডন থেকে স্কাইপে সংযুক্ত হয়ে নেতৃবৃন্দের বক্তব্য শুনতে শুরু করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমান। এরপর ঘোষণা করা হয় বক্তব্য রাখবেন তারেক রহমান।
ঘোষণার সাথে সাথেই টাউন হলে সঙ্গীয় ফোর্সসহ প্রবেশ করেন কান্দিরপাড় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ তপন বাগচি। এসময় তিনি অনুষ্ঠানস্থলে গিয়ে স্কাইপ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বলেন। তখন উপস্থিত নেতাকর্মীরা হুলস্থল শুরু করেন। প্রায় ৫ মিনিট বাকবিতণ্ডা ও ধাক্কাধাক্কির পর পুলিশ সদস্যরা সেখান থেকে সরে গেলে বক্তব্য শুরু করেন তারেক রহমান। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কামরান হোসেনসহ পুলিশ সদস্যরা সেখানে প্রবেশ করেন। ফের শুরু হয় হুলস্থুল।
এভাবে কিছুক্ষণ চলার পর তারেক রহমান তার বক্তব্য শেষ করে স্কাইপ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। এরপর সেখান থেকে চলে আসেন পুলিশ কর্মকর্তাগণ। পরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, পুলিশ দিয়ে বাধা দিয়ে আন্দোলন থামিয়ে রাখা যাবে না। আমরা এখানে ছোট্ট পরিশরে ইফতার আয়োজন করেছি, এতেও বাধা দিচ্ছেন। আগামী রমজানে তারেক রহমান দেশবাসীকে সাথে নিয়ে ইফতার করবেন বলেও জানান তিনি। রাতে এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান বলেন, তারা (টাউন হলে উপস্থিত বিএনপির নেতাকর্মীরা) পুলিশকে নিয়ে কটূক্তি করেছে।
পুলিশের সাথে বাগবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়েছে। পরে সেখান থেকে ২২ জনকে আটক করা হয়েছে।এর আগে প্রতিনিধি সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুবদলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন,সহ-সভাপতি জকির সিদ্দিকী,গোলাম মোস্তফা সাগর মোহসিন মোল্লা, যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া,বিল্লাল হোসেন তারেক,বিএনপির কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক এবং কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির আহবায়ক উদবাতুল বারী আবু, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হাজী জসিম উদ্দিন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এ বিষয়ে কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব ইউসুফ মোল্লা টিপু বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে নেতা-কর্মীদের বক্তব্য শেষ হলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন। তখন পুলিশ সভাস্থলে ঢুকে এলইডি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দেয়। পুলিশ ও নেতা-কর্মীদের মধ্যে চলে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। এরই মধ্যে তারেক রহমান পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে তাঁর বক্তব্য সম্পন্ন করেন। পরে আমাদের ২২ জন নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে কুমিল্লা মহানগর যুবদলের সহ সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আলম, লালমাই উপজেলা যুবদল নেতা কবির হোসেন, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি শরীফ সওদাগর, কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদল নেতা অনি,কাফি,অর্ণব, শরিফ, রবি, প্রীতম, মেহেদী, নাঙ্গলকোট উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম, যুগ্ন আহবায়ক ওমর ফারুক সবুজসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৪ জন রয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।