প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ সিদ্ধিরগঞ্জ পুলস্থিত শুকুর সুপার মার্কেটের নীচ তলায় দীর্ঘদিন যাবৎ মোহাম্মদীয়া হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট নামে হোটেল ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল মোঃ আব্দুল আউয়াল। ব্যবসায়ী আব্দুল আউয়াল হোটেল ভাড়া,গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ দূর্নীতি, বিলসহ ২৫ লক্ষাধিক টাকা বকেয়া রেখে গা ঢাকা দিয়েছে। এরই মাঝে আব্দুল আউয়াল গোপনে এলাকায় এসে উক্ত হোটেলের তিতাস গ্যাস সংযোগ লাইনটি অবৈধভাবে অন্যত্র বিক্রির চেষ্টা করেছিল।
এ ঘটনায় মার্কেটের মালিক তিতাস কর্তৃপক্ষ ও থানাসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। জানা যায়, নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার আলাদিনগরের মৃত আঃ সোবহানের ছেলে আব্দুল আউয়াল। সে সিদ্ধিরগঞ্জপুল এলাকায় অবস্থিত শুকুর সুপার মার্কেটের নিচ তালায় ৩টি দোকান নবায়ন চুক্তির মাধ্যমে ৪ বছরের নতুন মেয়াদে ভাড়া নিয়ে জানুয়ারী ২০১৮ইং থেকে “মোহাম্মদীয় হোটেল এন্ড রেষ্টুরেন্ট” ব্যবসা চালিয়ে যেতে থাকে । অত্র হোটেলে পূর্ব থেকেই তিতাস গ্যাস ও বিদ্যুত সংযোগ স্থাপিত ছিল।
শুরুতে আব্দুল আউয়াল ব্যবসা পরিচালনাসহ সব বিল বকেয়া ভাড়া পরিশোধ করলেও ২০২০ইং সাল থেকে বিভিন্ন অজুহাতে প্রায় দেড় বৎসরের ভাড়া, অন্যান্য বিল বকেয়া রাখে। এ বিষয়ে গত ২০২১ এর ৫ জানুয়ারীতে তাকে ভাড়াসহ যাবতীয় বকেয়া পরিশোধের জন্য নোটিশ দেয় মার্কেট কর্তৃপক্ষ। এর কোন জবাব না দিয়ে বিপুল পরিমান টাকা বকেয়া রেখে হোটেল বন্ধ রাখে আব্দুল আউয়াল। এর পূর্বেও সে আরো দুই বার আত্মগোপনে থাকলেও ফিরে আসে।
এসময় আব্দুল আউয়ালের আবেদন নিবেদনের কারণে মানবিক দিক বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষ পূণরায় তাকে ব্যবসার করার সুযোগ দেয়। এ সুযোগে ব্যবসা পরিচালনার করতে থাকা অবস্থায় তাকে বার বার তাগাদা দেয়া সত্ত্ব্ওে ভাড়াসহ অন্যন্য বকেয়া বৃদ্ধি পেতে থাকে। পুনরায় সে নভেম্বর ২০২১ইং মার্কেটের মালিক বা অন্য কাউকে কিছু না জানিয়ে দোকান তালাবদ্ধ করে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যায়। পাশাপাশি সমুদয় ভাড়া ও বিপুল পরিমান টাকা বকেয়া রেখে যায়। এরপর থেকে পলাতক আব্দুল আউয়ালের সাথে বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছে কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু সে ফিরে আসে নাই। দীর্ঘ প্রায় এক বৎসর মার্কেটস্থিত হোটেল রেস্টুরেন্টটি বন্ধ থাকায় মার্কেটের সুনাম নষ্ট হতে থাকে বিধায় মার্কেটের মালিক ব্যবসা চালু করার জন্য তাকে বার বার তাগাদা দেয়। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় হোটেলের মাসিক ভাড়ার পাশাপাশি তিতাস গ্যাস ও বিদ্যুতের বিল ও অন্যান্য বকেয়া অনাদায়কৃত থেকে যায়। সর্বশেষ হোটেলের সব ধরনের বকেয়ার পরিমান প্রায় ২৫ লাখ টাকার অধিক হয়। এই বিপুল পরিমান বকেয়া টাকা পরিশোধের জন্য হোটেল ব্যবসায়ী আব্দুল আউয়ালকে নোটিশ করা হলেও সে কর্ণপাত করেনি।এরই মাঝে আত্মগোপন অবস্থায় আব্দুল আউয়াল সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় এসে মিথ্যা তথ্য দিয়ে স্থানীয় দুস্কৃতিকারীদের সহায়তায় হোটেলের গ্যাস সংযোগটি কেটে নিয়ে যায়।
পরবর্তীত এ বিষয়ে মালিক আনোয়ার হোসেন গত বছর নভেম্বরে তিতাস গ্যাস, নারায়ণগঞ্জ কর্তৃপক্ষের বরাবর একটি আবেদন করেন। মার্কেটের মালিক আনোয়ার হোসেন জানান, মোহাম্মদীয়া হোটেলের আব্দুল আউয়াল দীর্ঘ প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে হোটেল কার্য্যকালীন অনাদায়ী ভাড়া, পূর্ব বকেয়া ও অন্যান্য দেনাসহ প্রায় ১৮ লাখ টাকা, গ্যাস বিল সাড়ে ৫ লাখ টাকা ও বিদ্যুৎ বিল প্রায় ২ লাখ টাকাসহ মোট ২৫ লাখ টাকা বকেয়া রেখে পালিয়ে যায়।
এছাড়াও বর্তমানে গ্যাস বিল বকেয়া থাকায় লাইন সচল রাখতে অতিরিক্ত টাকা খরচ হয়েছে। তিনি আরও জানান, চুক্তি মতে- আব্দুল আউয়াল হোটেল ভাড়া নেয়ার পর ছেড়ে দিলে সে কোন অবস্থায় অন্যত্র গ্যাস, বিদ্যুৎ সংযোগ বিক্রি কিংবা হস্তান্তর করতে পারবে না শর্তে আবদ্ধ রয়েছে। আমাদের সাথে করা ভাড়াটিয়া চুক্তিপত্র অনুযায়ী তৃতীয় পক্ষের নিকট গ্যাস, বিদ্যুৎ হস্তান্তর করতে পারবে না।
তারপরও সে গোপনে এলাকায় এসে দৃস্কৃ তিকারীদের সাথে আতাত করে গ্যাস সংযোগটি কেটে নিয়ে যায় যা আইনত দন্ডনীয়। আমি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছি। বকেয়া আদায়, গ্যাস –বিদ্যুতের সংযোগসহ সকল বিষয় দ্রুতই সুরাহা হবে বলে তিনি আশা করছেন।