প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিনা বাধায় অবৈধভাবে চলছে লেগুনা। হাইকোর্টের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রুট পারমিট ও ফিটনেসবিহীন লক্কর-ঝক্কর লেগুনা চাঁদা দিয়ে চলছে বেপরোয়াভাবে। হাইওয়ে পুলিশ হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কার্যকরী কোন প্রদক্ষেপ নিচ্ছেন না। ফলে নিয়ন্ত্রনহীনভাবে লেগুনা চলাচল করায় মহাসড়কে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। প্রাণ হারাচ্ছে যাত্রী ও পথচারীরা।
জানা গেছে, মহাসড়কে লেগুনা ও থ্রি-হুলার চলাচলে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। হাইওয়ে পুলিশ হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে উদাসীন থাকায় বেপরোয়াভাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নির্বিঘেœ চলছে লেগুনা। শিমরাইল মোড় হাজী আহসান উল্লাহ সুপার মার্কেটের সামনে মহাসড়কে বানিয়েছে লেগুনা স্ট্যান্ড। সঙ্গবদ্ধ একটি চাঁদাবাজ চক্র নিয়ন্ত্রন করছে লেগুনা। সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড় থেকে সাইনবোর্ড হয়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত চলছে যাত্রীবাগী এসব গাড়ি। অথচ এসব লেগুনা গাড়ির কোন রুট পারমিট নেই। ফিটনেস নেই।
চালকদের নেই লাইসেন্স। অধিকাংশ চালক শিশু। হাইওয়ে পুলিশের নাকের ডগায় দিয়ে শিশু চালকরা মহাসড়কে বিনা বাধায় নিশ্চিন্তে চালাচ্ছে লেগুনা। নিয়ন্ত্রনহীন এসব লেগুনার কারণে প্রতিনিয়তই মহাসড়কে ঘটছে দুর্ঘটনা। প্রয়োজনের তাগিদে শিশু চালকদের হাতে জীবন বাজি রেখে লেগুনায় চড়ছে যাত্রীরা। লেগুনা মালিক সূত্রে জানা গেছে, মহাসড়কে গাড়ি চালাতে হচ্ছে তিন ভাগে চাঁদা দিয়ে। সিদ্ধিরগঞ্জ ও যাত্রাবাড়িতে পৃথকভাবে চাঁদা দিতে হয়। গাড়ি প্রতি দৈনিক জিপি চাঁদা ৪৫০ টাকা, লাইনম্যান দিনে ৭০ টাকা, রাতে ৫০ টাকা।
চাঁদা আদায় করার জন্য যাত্রাবাড়িতে দুইজন লোক রয়েছে। এছাড়াও ষ্টিকার লাগানোর জন্য গাড়িপ্রতি মাসিক চাঁদা দিতে হয় এক হাজার টাকা। শিমরাইল এক্সপ্রেস লিমিটেড (এস,ই,এল) নামক কোম্পানির ব্যানারে গাড়ি চললেও নিয়ন্ত্রন করে যাত্রাবাড়ি ও সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার সঙ্গবদ্ধ একটি চক্র। কাগজে কলমে না থাকলেও চাঁদাবাজরা লেগুনা মালিক সমিতি করেছে। তবে সমিতির বেশিরভাগ সদস্যের গাড়ি নেই।
এক বছর আগে কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও চাঁদার টাকার ভাগ বন্টন বিরোধে নতুন করে আর কমিটি হচ্ছেনা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গাড়ি চালক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দৈনিক ৫৭০ টাকা চাঁদা, ১ হাজার টাকা মালিক জমা ও প্রায় দেড় হাজার টাকা তেল খরচ দেওয়ার পর কোন দিন শূন্য পকেটে বাসায় যেতে হয়। সারাদিন ও গভীর রাত পর্যন্ত গাড়ি চালিয়ে যা কামাই সবই চলে যায় চাঁদা ,তেল ও মালিক জামায়। বাজার ভাল হলে সাত আটশ টাকা পাই।
শিমরাইল এক্সপ্রেস লিমিটেডের এমডি হাসানুজ্জামান পরশ বলেন, মোট দেড়শতাধিক গাড়ি চলে। সিদ্ধিরগঞ্জে কোন চাঁদাবাজি হয়না। যাত্রাবাড়িতে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে।সমিতির সভাপতি পলাশের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।তবে সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ মোল্লা বলেন, প্রশাসনের লোকের গাড়ি রয়েছে। তারা চাঁদা দেয়না। জিপি দেয় অর্ধেক। সব ঠিকটাক করেই লাইন চালাচ্ছি।
সমিতির কেষিয়ার সাঈদ বলেন, চাঁদা ছাড়া কোন পরিবহন চলে না। সবাইকে ম্যানেজ করেই পরিবহন লাইন চালাতে হয়। সিদ্ধিরগঞ্জের দায়িত্বে থাকা হাইওয়ে পুলিশের টিআই (প্রশাসন) সরফুদ্দিন বলেন, মহাসড়কে লেগুনা চলাচলের বৈধতা নেই। প্রতিনিয়তই লেগুনা গাড়ি আটক ও রেকার করা হচ্ছে। লেগুনা বন্ধে দ্রæত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।