শাল্লায় মরণফাঁদে চাকুয়া-মিলনবাজার রাস্তা : প্রায় ৩ হাজার মানুষের যাতায়াতে চরম র্দূভোগ

0
শাল্লায় মরণফাঁদে চাকুয়া-মিলনবাজার রাস্তা : প্রায় ৩ হাজার মানুষের যাতায়াতে চরম র্দূভোগ

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি হাওরের জেলা সুনামগঞ্জের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন উপজেলা হচ্ছে শাল্লা উপজেলাটি। দীর্ঘ প্রায় দেড়দশক ধরে সংস্কারের অভাবে সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা উপজেলার ২নং হবিবপুর ইউনিয়নের চাকুয়া গ্রাম থেকে মিলনবাজার পর্যন্ত সংযোগকারী একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি বর্তমানে স্থানীয়দের জন্য ‘মরণফাঁদ’-এ পরিণত হয়েছে।

প্রায় ১৩০০ মিটার (১.৩ কিলোমিটার) দীর্ঘ এই সংযোগ সড়কটির চরম বেহাল দশার কারণে গ্রামের প্রায় তিনহাজার মানুষের দৈনন্দিন জীবন, অর্থনীতি, শিক্ষা এবং জরুরী স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই রাস্তাটি সংস্কার বা পাকাকরণ না হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। হবিবপুর ইউনিয়নের চাকুয়া গ্রামটি একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, যেখানে আনুমানিক তিনহাজার লোকের বসবাস। তাদের দৈনন্দিন কাজ, কৃষিপণ্য পরিবহন, শিক্ষা এবং জরুরী স্বাস্থ্যসেবার জন্য মিলনবাজারই একমাত্র ভরসা।

মিলনবাজার হয়েই সিএনজি ও অটোরিকসাযোগে দিরাই অথবা নৌকাযোগে উপজেলা সদর শাল্লায় যেতে হয়। কিন্তু গ্রামের এই ১৩০০ মিটার রাস্তাটি বর্তমানে সম্পূর্ণভাবে চলাচলের অনুপযোগী। রাস্তার ব্লকগুলো স্থানে স্থানে সরে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত আর অসংখ্য ছোট-বড় খানাখন্দ ও গভীর হয়ে যাওয়াতে অনেক সময় ছোটবড় র্দূঘটনা যেন সাধারন মাুনষের পিছু ছাড়ছে না। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই এসব গর্তে জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় কাদা-জল পেরিয়ে হেঁটে চলাচল করাও অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগীরা জানান, এই রাস্তাটির করুণ দশার কারণে গ্রামে যানবাহন প্রবেশ করতে চাইছে না। কোনো যানবাহন প্রবেশ করলেও প্রায়শই দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে গ্রামের অর্থনীতিতে; কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে পারছেন না। এ ব্যাপারে গ্রামের বাসিন্দা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সাংবাদিক প্রীতম দাস বলেন, “রাস্তাটির জীর্ণ দশার কারণে কৃষকসহ সাধারন মানুষজন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। অন্যদিকে, অসুস্থ রোগীদের দ্রæত হাসপাতালে বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে চরম র্দূভোগ পোহাতে হচ্ছে। এই ১৩০০ মিটার পথটুকু আমাদের জন্য এখন অভিশাপ।

” এ ব্যাপারে চাকুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসীম কুমার সিংহ বলেন, রাস্তার ব্লক সরে গিয়ে অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হওয়াতে সামান্য বৃষ্টিতে জল জমে পিচ্ছিল হয়, যার ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়ার সময় নিয়মত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,, সড়কটি ২০১০ সালে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও)-এর উদ্যোগে বøকের মাধ্যমে রাস্তাটির নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়েছিল। কিন্ত সেই নির্মাণের পর দীর্ঘ ১৫ বছর পেরিয়ে গেলেও রাস্তাটিতে আর কোনো ধরনের সরকারি বা প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার বা মেরামতের কাজ করা হয়নি।

এ ব্যাপারে গ্রামের সাবেক মেম্বার অধীর চন্দ্র দাস জানান, বিগত বছরে সবাই মিলে নিজ অর্থায়নে কিছু ব্লক বসিয়ে সাময়িকভাবে রাস্তাটি মেরামতের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্ত নিম্নমানের কাজের ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই মাটি সরে গিয়ে পুনরায় রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য সুনীল চন্দ্র দাস সমস্যার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখতে অবিলম্বে এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কার করা প্রয়োজন।

তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জরুরী ভিত্তিতে রাস্তাটি পাকাকরণের মাধ্যমে জনর্দূভোগ লাগবে কার্যকরী পদক্ষেপ নিবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ ব্যাপারে শাল্লা উপজেলা স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিইডি) প্রকৌশলী আরিফ উল্লা খান বলেন, “যে প্রকল্প থেকে ব্লকের রাস্তা দেওয়া হয়েছিল সেটা শেষ হয়ে গেছে। তবে নতুন করে প্রকল্প আসছে। তখন উপজেলার যে কয়টি বøাকের রাস্তা আছে, সেগুলো পাকাকরণ করা হবে।”

এদিকে চাকুয়া গ্রামের এই বিশাল জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা স্বাভাবিক ও গতিশীল রাখতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এবং উপজেলা প্রশাসনের প্রতি গ্রামবাসী অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন। কুলেন্দু শেখর দাস সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি ০২.১১.১৫

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here