প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি: স্বারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ
প্রশাসন তদন্ত করে আওয়ামী লীগের তকমা লাগিয়ে বিলুপ্ত সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভার সাবেক প্রশাসক আব্দুল মতিন প্রধানকে কেউ যেন হেয়প্রতিপন্ন ও হয়রানী করতে না পারে এমন নির্দেশনা দিয়েছিলেন। তবু ঘটনার ১৩ মাস পর বিএনপির সাবেক এ নেতাকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত মো. সজিব হত্যা মামলার আসামি করার অভিযোগ উঠেছে।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২১ জুলাই সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাংরোড এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয় মো. সজিব(১৭)। এ ঘটনায় নিহতের পিতা মো. সালাউদ্দিন বাদী হয়ে ৪৫ জন এজাহার নামীয় ও ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলায় আব্দুল মতিন প্রধানকে করা হয়েছে ৪ নং আসামি। সিদ্ধিরগঞ্জ বাজার পূর্ব কলাবাগ এলাকার মৃত মো. কাইজ উদ্দিনের ছেলে আব্দুল মতিন প্রধান(৭০) প্রায় দেড়যুগ ধরে বসবাস করেন ঢাকার বিজয় নগর এলাকায়।
বিজয় নগরে থ্রিষ্টার হোটেল ৭১ সহ একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক তিনি। স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে গঠিত কৃষক লীগের কোষাধ্যক্ষ আব্দুল মতিন প্রধান ও সিনিয়র সহসভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন দলত্যাগ করে ২০০১ সালে বিএনপিতে যোগদেন। একই বছর গিয়াস উদ্দিন বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০২ সালে আব্দুল মতিন প্রধান হন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির স্বাস্থ বিষয়ক সম্পাদক। পরে ২০১১ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জ মহানগর কৃষক দলের আহ্বায়ক হন।
বিএনপি সরকার আমলে গঠিত সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক করা হয় আব্দুল মতিন প্রধানকে। একটানা ৭ বছর প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০১৩ সালে আব্দুল মতিন প্রধান সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক পদ পান। বিএনপির সক্রিয় নেতা হিসেবে দলের চেয়ারপার্সেন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে একাধিকবার সাক্ষাত করেন তিনি। বিনা প্রতিদ্বদ্ধিতায় ১০১৪ সালে শামীম ওসমান আওয়ামী লীগের এমপি হওয়ার পর বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর শুরু হয় অত্যাচার নির্যাতন আর হামলা মামলা।
ফলে বহু বিএনপি নেতা দলীয় কাজ থেকে বিরত হয়ে পড়েন। অনেকই গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে দল ত্যাগের ঘোষণা দেন।তেমনি একজন ভুক্তভোগী মতিন প্রধান। শামীম ওসমানের ভয়ে বিএনপি ছাড়লেও তিনি আওয়ামী লীগের কোন কমিটির পদ নেননি। আব্দুল মতিন প্রধান বলেন, ৫ আগস্ট দেশের পটপরিবর্তনের পর একটি মহল আওয়ামী লীগ তকমা লাগিয়ে আমাকে হত্যা মামলায় জড়ানো ষড়যন্ত্র ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করে।
তখন আমি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে একটি লিখিত আবেদ করি। তার প্রেক্ষিতে আমার বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য গত ১৬ মার্চ জননিরাপত্তা বিভাগের আইন-২ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মো. আব্দুল হাই স্বাক্ষরিত একটি পত্র পাঠানো হয় পুলিশ মহাপরিদর্শক ও নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের কাছে। পরে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসিনুজ্জামান আমার বিষয়ে তদন্ত করে ৪ মে প্রতিবেদ দাখিল করেন।
প্রতিবেদনে আমাকে আওয়ামী লীগের তকমা লাগিয়ে কেউ যেন হেয়প্রতিপন্ন ও অযতা হয়রানী করতে না পারে সে মর্মে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য বলা হয়। তবু একটি মহল স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে আমাকে হত্যা মামলায় জড়িয়েছে। জানতে চাইলে মামলার বাদী সালাউদ্দিন বলেন, আব্দুল মতিন প্রধানকে আমি চিনিনা। মামলার আসামি কাদের করা হয়েছে তাও জানিনা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা আমাকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে নিয়ে স্বাক্ষর করতে বলেছে আমি তাদের কথামত স্বাক্ষর করেছি। তারা করা জানতে চাইলে তিনি তাদের নাম বলতে পারেন নি। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহিনূর আলম বলেন, আদালত থেকে মামলার এজাহার প্রেরণ করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে ৪ সেপ্টেম্বর মামলা নথিভুক্ত করি।





