প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ জিয়াউর রহমান জিয়া,মহেশপুর (ঝিনাইদহ) থেকে ঃ চিকিৎসকের অভাবে খুড়িয়ে চলা মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিজের সুবিধামত ডিউটি করেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার সুলতান আহম্মেদ। শুধুমাত্র কাগজে কলমে আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিসেবে নাম থাকলেও ডিউটিরত সময়ে তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাওয়া যায় না।
সপ্তাহের ৩/৪ দিন সকালে শুধুমাত্র ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে দুপুরে ২টার আগে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে বেরিয়ে যান তিনি। এরপর বিকাল পাঁচটা থেকে কালীগঞ্জ শহরের দারুস শেফা পাইভেট হাসপাতালে নিয়মিত রোগী দেখেন। এদিকে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসারের জায়গায় উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসাররা রাত-দিনে ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
বিভিন্ন সুত্রে জানাগেছে, আবাসিক মেডিকেল অফিসারের পদে থাকা সুলতান আহম্মেদের নিজ গ্রামের বাড়ি মহেশপুর শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটারের দুরুত্ব। পদে তিনি আবাসিক মেডিকেল অফিসার হলেও সরকারী কোন কোয়াটার কিংবা মহেশপুর শহরের কোথাও থাকেন না তিনি। ডিউটি থাকা দিন গুলোর সকালে শুধুমাত্র ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা ও উন্নতি হওয়া রোগীদের ছাড়পত্র দিয়েই ডিউটি শেষ করেন তিনি। এরপর ফিরে যান নিজ বাড়ী কালীগঞ্জে।
কাগজে কলমে তিনি মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডিউটিতে থাকলেও তিনি স্বশরীরে কালীগঞ্জ শহরের দারুস শেফা পাইভেট হাসপাতালে নিয়মিত পাঁচটার পর থেকে রোগী দেখেন। সরজমিনে গত বোরবার রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় কাগজে কলমে আজকের ডিউটিরত মেডিকেল অফিসারের তালিকায় আরএমও সুলতান আহম্মেদের নাম। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোথাও তিনি নেই। ইমারজেন্সিতে সুলতান আহম্মেদের খোজ করলে জানা যাই তিনি কালীগঞ্জের নিজ বাড়ীতে আছেন।
নাম প্রকাশে অনুচ্ছুক এক উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার বলেন, মেডিকেল অফিসারা বেশি ভাগ সময় ডিউটি করেন না। যার ফলে ঝুঁকি নিয়ে আমাদেরকে সকল ধরনের ইমারজেন্সি রোগীদের চিকিৎসা দিতে হয়। মারামারি রোগীদের নোট লেখার কথা মেডিকেল অফিসারদের কিন্তু তারা না থাকায় সেগুলো আমাদেরকে লিখতে হয়। রোববার রাতে ইমারজেন্সিতে সেবা দেওয়া উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডাঃ মামুন হোসেন বলেন, রাতে মেডিকেল অফিসারের তালিকায় আরএমও সুলতান আহম্মেদ ছিলেন।তবে তিনি অনকলে ছিলেন।
সোমবার দুপুরে আরএমও সুলতান আহম্মেদ মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি জানান, এই মাত্র ডিউটি শেষ করে বের হয়েছি। গতকাল রাতে আপনার ডিউটি থাকলেও আপনি উপস্থিত ছিলেন না এছাড়াও আপনি ৩৫ কিলো মিটার দূর থেকে কিভাবে অনকলে চিকিৎসা দেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি অনকলে ছিলাম না। রাতে অনকলে ছিলেন ডাঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন। তবে তালিকায় আপনার নাম কেন জানতে চাইলে তিনি ফোনটি কেটে দেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ হেদায়েত বিন সেতু বলেন, মেডিকেল অফিসার কম থাকায় আর এমও সুলতান আহম্মেদের দিয়ে রোস্টার ডিউটি করানো হচ্ছে। ডিউটি শেষ করে তিনি কালীগঞ্জের নিজ বাড়ীতে থেকে অনকলে রয়েছেন। ৩৫ কিলোমিটার দূর খেকে তিনি অনকলে থাকলে ইমারজেন্সি রোগীদের কি কোন লাভ হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিককে আগামীকাল অফিসে আসতে বলেন।
এছাড়াও উিউটির তালিকায় নাম থাকা একজন আবাসিক মেডিকেল অফিসার কিভাবে ৩৫ কিলো মিটার দূরে বাড়িতে অবস্থায় করেন এ প্রশ্নের কোন সদউত্তর দিতে পারেননি তিনি।





