প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ মতলব উত্তর (চাঁদপুর) প্রতিনিধি: চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ফতেহপুর পশ্চিম ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সফল সাধারণ সম্পাদক ও ২০১৮ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. ছলিম উল্লাহ (লাভলু) হত্যাকাণ্ডের প্রায় তিন বছর পার হলেও বিচার কার্যক্রম এখনো পুরোপুরি শুরুই হয়নি। কারন তিন বছরেও চার্জশিট দাখিল করা সম্ভব হয়নি।
এ অবস্থায় নিহতের ছেলে মো. লাবিব আরেফিন প্রধান এক আবেগঘন ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ তুলেছেন, বাবার হত্যার সাথে জড়িতরা এখন বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের পদ-পদবীর জন্য লবিং করছে। নিহত মো. ছলিম উল্লাহ (লাভলু) ছেলে লাবিব আরেফিন প্রধান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক পোস্টে লিখেছেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ও তাদের মদদে, তথাকথিত ভোটবিহীন জনপ্রতিনিধিদের কাছের লোক এবং বর্তমানে বিএনপি পরিচয় দেওয়া সন্ত্রাসীরা ২০২২ সালের ২ নভেম্বর রাতের আঁধারে আমার বাবাকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
সেই খুনিরা ও তাদের পরিবারের কিছু সদস্য এখন বিএনপির পদ-পদবি পাওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ করছে। তারা যদি পদে আসে, তাহলে আমি এবং এলাকার অন্যান্য বিএনপি পরিবারের সদস্যরা লজ্জা বোধ করব। তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, খুনি ও চাঁদাবাজ পরিবার ব্যতীত এই ইউনিয়নে শত শত সৎ ও ভালো পরিবারের সদস্য আছে। তাই খুনিদের পদ-পদবি, মিছিল, মিটিং ও সভা-সমাবেশে সুযোগ দিয়ে বিএনপিকে কলুষিত করা উচিত নয়।
লাবিব আরেফিন প্রধান তার পোস্টে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা বিশেষজ্ঞ, চাঁদপুর-২ আসনের নেতা আলহাজ্ব ড. মুহাম্মদ জালাল উদ্দিনসহ উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। ২০২২ সালের ২ নভেম্বর সকালে ফতেহপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মান্দাতলী গ্রামের ইটের রাস্তার পাশ থেকে মো. ছলিম উল্লাহ (লাভলু)-এর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। লাভলু মান্দারতলী গ্রামের আমির হোসেন মাস্টারের ছেলে।
ঘটনার পর এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং হত্যার বিচার দাবিতে একাধিক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ ঘটনায় মামলা হলেও পুলিশ তিন বছরেও আদালতে চার্জশিট দাখিল করতে পারেনি। ফলে দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি, যা ভুক্তভোগী পরিবারের ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, যাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা ছিল এই হত্যায়, তারা রাজনৈতিক ছত্রছায়া পেয়ে যাচ্ছে। এখন তারা বিএনপির বিভিন্ন পদ-পদবি লাভের জন্য সক্রিয় হয়েছে, যা কেবল নিহত পরিবারের জন্য নয়, বরং সমগ্র বিএনপি সমর্থক জনতার কাছে উদ্বেগজনক।
বর্তমান পরিস্থিতি তথ্য জানতে মামলার বাদী ও নিহত লাভলু মেম্বারের ভাই আহসান হাবীব নান্টু বলেন, তৎকালীন সরকারের আমলে স্থানীয় এমপির হস্তক্ষেপে মামলাটি তদন্তে কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়। আমরা পরে আদালতে আবেদন করে মামলাটি তদন্তের জন্য আবেদন করলে আদালত মামলাটি পিবিআই তে ন্যস্থ করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ পরিদর্শক (পিবিআই) মোঃ শাহজাহান বলেন, এই মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। তবে উল্লেখযোগ্য কিছু এখনো বের করা সম্ভব হয়নি।
এলাকার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হলে বিএনপির স্থানীয় সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং সাধারণ মানুষের আস্থা কমে যেতে পারে।





