ঘুষবাণিজ্যের অভিযোগে সিদ্ধিরগঞ্জে ভূমি জরিপ কর্মকর্তা অবরুদ্ধ

0
ঘুষবাণিজ্যের অভিযোগে সিদ্ধিরগঞ্জে ভূমি জরিপ কর্মকর্তা অবরুদ্ধ

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ভূমি জরিপ করতে ঘুষবাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে জরিপ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। ঘুষ ছাড়া ভূমি জরিপ করতে কাগজপত্র ত্রুটিসহ বিভিন্ন অজুহাত উত্থাপন করায় বুধবার (২৩ জুলাই) বিকেল ৩ টায় হীরাঝিল এলাকায় গিয়াস উদ্দিন ইসলামীক মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে নারায়ণগঞ্জ সদরের সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার মো. মোহসিন আলী ও সার্ভেয়ার মো. নজরুল ইসলামকে অবরুদ্ধ করে রাখেন ছাত্র-জনতা।

এ সময় জনরোষে পালিয়ে যায় অন্য জরিপ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। বিকেল ৬ টায় অবরুদ্ধ ২ কর্মকর্তাকে উদ্ধার করেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ। অভিযোগ জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার গত ১৫ দিন ধরে চলছে ভূমি জরিপের কাজ। প্রতিটি ওয়ার্ডে ৯ জন করে টিম গঠন করে করা হচ্ছে ভূমি জরিপ। ভূমি জরিপ করতে জরিপ কর্মকর্তারা ভূমি মালিকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের অর্থ। জমির পরিমাণ অনুযায়ী অর্থ দাবি করেন জরিপ কর্মকর্তারা। তাদের দাবিকৃত অর্থ না দিলে জমির কাগজপত্র ত্রুটি ও নানান অজুহাতে হয়রানি করেন। এতে সৃষ্টি হয় ক্ষোভ।

হীরাঝিল এলাকায় গিয়াস উদ্দিন ইসলামীক মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবনির্মিত একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় আস্থায়ী ক্যাম্প বানিয়ে ২ নং আটী মৌজার ভূমি জরিপ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন একটি টিম। এ টিমের কর্মকর্তারা শুরু করেন ব্যাপক ঘুষবাণিজ্য। বিষয়টি জানতে পেরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকার নেতারা ক্যাম্পে গিয়ে ঘুষবাণিজ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ক্যাম্পের কর্মকর্তা কর্মচারী ও তাদের নিয়োজিত দালালরা যে যার মত দৌড়ে পালিয়ে যায়।

এ খবর পেয়ে ছুটে আসেন নারায়ণগঞ্জ সদরের সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার মো. মোহসিন আলী ও সার্ভেয়ার মো. নজরুল ইসলাম। তখন ছাত্র-জনতা তাদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। হীরাঝিল এলাকার বাসিন্দা মোতাহার হোসেন বলেন, “আমার বাড়ির জরিপ করতে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছে জরিপ কর্মকর্তারা।” শাহজালাল নামে আরেকজন বাড়ির মালিক বলেন, “তার কাছ থেকেও নিয়েছেন ৩০ হাজার টাকা।” কামাল মিয়া নামে একজন বলেন, “আমার কাছে ২০ হাজার টাকা চেয়েছিল, আমি ১০ হাজার টাকা দিতে চাইলেও তারা রাজি হয়নি। তাই আমি টাকা না দিয়ে চলে যাই। ফলে আমার জায়গা জরিপ করেনি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক মেহরাব হোসেন প্রভাত বলেন, “জরিপ কর্মকর্তাদের ঘুষবাণিজ্যের অভিযোগ পেয়ে আমরা ক্যাম্পে আসি। এ সময় জরিপ করতে আসা জমির মালিকরা ঘুষবাণিজ্যের কথা বলা শুরু করলে জরিপ কর্মকর্তারা যে যার মত দৌড়ে পালিয়ে যায়। তখন সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার মো. মোহসিন আলী ও সার্ভেয়ার মো. নজরুল ইসলামকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।

জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ সদরের সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার মো. মোহসিন আলী বলেন, “আমি ঘুষবাণিজ্য করিনি। খবর পেয়ে আমি এসেছি। আমার অজান্তে কোন কর্মকর্তা কর্মচারীরা ঘুষ নিয়ে থাকলে তা ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব না। সামনে আর যেন কেউ কোন জমির মালিকের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিতে না পারে সে দিকে নজর রাখা হবে।

এদিকে খবর পেয়ে বিকেল সাড়ে ৫ টায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি (অপারেশন) ফারুক ও উপ-পরিদর্শক ওয়াসিম আকরাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে ভূক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে অবরুদ্ধ ওই ২ কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। জানতে চাইলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি অপারেশন ফারুক বলেন, “অভিযুক্তদের কাছ থেকে ঘুষের কোন টাকা পাওয়া যায়নি। তারা পরে এসে অবরুদ্ধ হয়েছিলেন।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here