প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নিজস্ব প্রতিবেদকঃ “বৈষম্যের ঠাঁই নাই, নিয়োগবিধি সংশোধন চাই” এই স্লোগানকে সামনে রেখে নিয়োগবিধি সংশোধন, বেতন গ্রেড, টেকনিক্যাল পদমর্যাদাসহ ৬ দফা দাবিতে ‘বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন’-এর কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারা দেশের ন্যায় চাঁদপুরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন স্বাস্থ্য সহকারী ও স্বাস্থ্য পরিদর্শক এবং সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শকরা।
বৈরি আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত চাঁদপুর জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় প্রাঙ্গণে চাঁদপুর জেলা স্বাস্থ্য সহকারী অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে জেলার ৮ উপজেলার ও স্বাস্থ্য পরিদর্শক এবং সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শকরা অংশ নেন। এসময় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা হাতে প্ল্যাকার্ড ও হলুদ রংংের ব্যানার নিয়ে তাদের দাবির পক্ষে স্লোগান দেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে চাঁদপুর জেলা স্বাস্থ্য সহকারী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবি আদায়ের চেষ্টা করছি। দাবি আদায় না হওয়ায় এবার আমরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। যদি দ্রুত দাবি পূরণ না হয়, তাহলে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে ইপিআইসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেবো।বক্তারা আরও বলেন, “স্বাস্থ্য সহকারীরা দেশের প্রান্তি—ক পর্যায়ে জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে থাকলেও তারা উপযুক্ত স্বীকৃতি ও সম্মান থেকে বঞ্চিত।
নিয়োগবিধিতে বৈষম্য, বেতন কাঠামো ও পদমর্যাদায় অসামঞ্জস্য দূর না হলে আমরা কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবো।অবস্থান কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন চাঁদপুর জেলা হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আরিফ মোহাম্মদ রুহুল ইসলাম।এ সময় বক্তব্য রাখেন সাবেক সভাপতি মাসুদুর রহমান, সহ-সভাপতি গোলাম কিবরিয়া স্বপন, মোঃ ওমর ফারুক, মোঃ জসীমউদ্দীন, ইউসুফ পাটওয়ারী, মাসুদ আলম, আলমগীর কবির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার, সাইফুল ইসলাম, ইয়াছিন মোল্লা, গাজী মোঃ খোরশেদ আলম, ফরহাদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক জসিমউদ্দীন , দপ্তর সম্পাদক গিয়াসউদ্দিন মজুমদার, অর্থ সম্পাদক বি. এম. রোকনুল ইসলাম, মহিলা সম্পাদক রাবেয়া আক্তার, সহ-মহিলা সম্পাদক তাহমিনা ও ইয়াছিন আক্তার।
এছাড়াও কর্মসূচিতে জেলার প্রচার সম্পাদক অজিত চন্দ্র দাস, সম্মানিত সদস্য মতলব উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ, কবির হোসেন মোল্লা, কবির হোসেন, জেলার যুগ্ম-সম্পাদক মঞ্জুর আলম,মতলব উত্তরের সাংগঠনিক সম্পাদক আঃ লতিফ,অর্থ সম্পাদক মোঃ ফারুক হোসেন, মোঃ আনোয়ার হোসেন, বিমল চন্দ্র দাস,রহিমা খানম, রুমিয়া আক্তার, উম্মে সালমা, মেহেদী হাসান,শাহনাজ আক্তার, সারোয়ার হোসেন, মুরাদ, দেলোয়ার, সঞ্জয়সহ জেলার সকল স্বাস্থ্য সহকারী, স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে চাঁদপুর জেলা স্বাস্থ্য সহকারী অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে এ কর্মসূচি হয়। স্বাস্থ্য সহকারীরা দীর্ঘদিন বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।তাদের অন্য দাবির মধ্যে রয়েছে-পদোন্নতির ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে উচ্চতর গ্রেড নিশ্চিত করা, সব স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শককে প্রশিক্ষণ ছাড়াই স্নাতক স্কেলে অন্ত—র্ভুক্ত করা, বেতন স্কেল পুননির্ধারণের সময় প্রাপ্ত টাইম স্কেল বা উচ্চতর স্কেল সংযুক্ত করা এবং ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা সম্পন্নকারীদের স্নাতক সমমানের স্বীকৃতি দেওয়া, সকল পর্যায়ে ন্যায্য পদোন্নতি ও স্বীকৃতি নিশ্চিত ।
বক্তারা বলেন সারা দেশের বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৬ হাজারের বেশি স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য পরিদর্শক কাজ করছেন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর রোগ প্রতিরোধে কাজ করেন তারা।এছাড়াও রোগ থেকে মুক্তির উপায়, নতুন রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানো এবং পরামর্শ দিয়ে থাকেন।তারা সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) বাস্তবায়ন, ১৫-৪৯ বছর বয়সি নারীদের টিটি/টিডি টিকা দেওয়া, গর্ভবতী মা ও শিশুদের সেবা দেওয়া, প্রসব-পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সেবা দিয়ে থাকেন।
বক্তারা আরও বলেন, স্বাস্থ্য সহকারীরা অপ্রতুল সুযোগ-সুবিধা ও সীমিত জনবল নিয়েও দেশের প্রত্যান্ত অঞ্চলে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। চার দশকের বেশি সময় তারা প্রথম সারির যোদ্ধা হিসাবে জনগণের স্বাস্থ্যসেবায় রয়েছেন। তারা করনাকালীন সময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সারা দেশে প্রান্তিক জনগোষ্টিকে করোনা ভ্যাকসিন টিকা দিয়ে করোনা যোদ্ধা ছিলেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আজ পর্যন্ত তাদের পদে কোনো পরিবর্তন হয়নি। বেতন কাঠামোয় রয়েছে চরম বৈষম্য।
তাই স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবি মেনে নিতে সংশ্লষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানান তারা। নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, দাবিগুলো দ্রুতত বাস্তবায়ন না হলে পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। বলেন, দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে পরবর্তীতে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে ইপিআইসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে।





