ভারতের নদীর পানি নিয়ে পাকিস্তানকে বড় ধরনের হুঁশিয়ারি দিলেন: নরেন্দ্র মোদি

0
ভারতের নদীর পানি নিয়ে পাকিস্তানকে বড় ধরনের হুঁশিয়ারি দিলেন: নরেন্দ্র মোদি

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ কাশ্মিরে প্রাণঘাতী হামলার ঘটনার পর সিন্ধু নদ পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করার এক মাস পেরোতেই পাকিস্তানকে বড় ধরনের হুঁশিয়ারি দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি জানিয়েছেন, যেসব নদীর ওপর ভারতের অধিকার রয়েছে, সেসব নদী থেকে পাকিস্তান পানি পাবে না।গত ২২ এপ্রিল কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন।

নিহতদের বেশিরভাগই হিন্দু পর্যটক ছিলেন। ওই হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেয় নয়াদিল্লি। ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত সিন্ধু নদ পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিতসহ একাধিক পদক্ষেপ নেয় ভারত। কাশ্মিরে ওই হামলার পেছনে পাকিস্তানের মদত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ভারত। যদিও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে। এর পর থেকে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র সামরিক উত্তেজনা তৈরি হয়।

পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় (১০ মে) উভয় দেশ একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছে। এরই মধ্যে ভারতের রাজস্থান রাজ্যে এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, “প্রতিটি সন্ত্রাসী হামলার জন্য পাকিস্তানকে চড়া মূল্য দিতে হবে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এবং অর্থনীতি—দুটিই এই মূল্য দেবে। সিন্ধু নদ চুক্তির আওতায় ভারত থেকে প্রবাহিত তিনটি নদীর মাধ্যমে পাকিস্তানের কৃষি খাতে ৮০ শতাংশের মতো পানি সরবরাহ হয়। তবে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, চুক্তি স্থগিতের তাৎক্ষণিক কোনো প্রভাব পড়বে না।

এদিকে যুদ্ধবিরতির পর থেকে সীমান্তে আপাতত শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ডাচ সংবাদমাধ্যম এনওএসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “বর্তমানে সীমান্তে গোলাগুলি বন্ধ রয়েছে এবং চুক্তি অনুযায়ী সৈন্যদের পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। তবে সামরিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বার্তা স্পষ্ট—যদি আবারও এমন হামলা হয়, তার জবাব দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, “সন্ত্রাসীরা যদি পাকিস্তানে থাকে, তাহলে সেখানে গিয়েই তাদের ওপর হামলা চালানো হবে। তবে মোদি ও জয়শঙ্করের বক্তব্যের বিষয়ে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানের পর ভারত ও পাকিস্তান স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। স্বাধীনতার পর থেকেই মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মির নিয়ে দেশ দুটির মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ইতিপূর্বে দুইবার যুদ্ধে জড়িয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। কাশ্মিরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের লড়াইয়ে পাকিস্তান সহায়তা করছে বলে ভারতের অভিযোগ রয়েছে। তবে ইসলামাবাদ এসব অভিযোগ বরাবরের মতো অস্বীকার করে আসছে। এপ্রিলের হামলার পর থেকে দুই দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ নিয়েছে। স্থগিত করা হয়েছে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বন্ধ হয়েছে সীমান্ত ও ভিসা কার্যক্রম।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here