মহেশপুরে বিদেশি ফুল জারবেরা চাষে প্রবাস ফেরত নুহু মিয়ার সাফল্য

0
মহেশপুরে বিদেশি ফুল জারবেরা চাষে প্রবাস ফেরত নুহু মিয়ার সাফল্য

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ জিয়াউর রহমান জিয়া,মহেশপুর থেকে ঃ বিদেশি ফুল জারবেরা চাষ করে প্রথম বছরেই বাজিমাত করেছেন প্রবাস ফেরত নুহু নামের এক ফুলচাষি। ৩ বিঘা জমিতে বিদেশি ফুল জারবেরার চাষ করে এলাকায় রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছেন তিনি। ঝিনাইদহরে মহেশপুর পৌর এলাকার পাতিবিলা চড়কতলা মাঠে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে জারবেরার চাষ শুরু করেছেন তিনি।

টিস্যু কালচারের মাধ্যমে তৈরি করা ১২ হাজার চারা ভারতের পুনে থেকে আমদানি করে চাষ শুরু করেন । এই অজো পাড়াগাঁয়ের জারবেরা এখন ঢাকা, খুলনা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন শহরে যাচ্ছে। বর্তমানে ৩ বিঘা জমিতে লাল, সাদা, হলুদ, পিংক, ম্যাজেন্টা, কমলা, গোলাপি রঙের জারবেরা ফুল শোভা পাচ্ছে। চারা রোপণের তিন মাসের মধ্যেই সফলতা পেয়েছেন এই ফুলচাষি। দুই দিন পর পর ২হাজার থেকে ২৫শ’ ফুল তুলে ঢাকার শাহবাগে এই ফুল বিক্রি করছেন।

প্রতিটি স্টিক ১০-১৫ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে জারবেরা চাষে লাভের মুখ দেখবেন বলে আশা চাষির ।  ফুল চাষি নুহু মিয়া জানান, বিদেশ থেকে দেশে এসে কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। পরে আমার শশুরের পরামর্শে এই চাষ শুরু করি। আমার শশুর এই কাজের সাথে অনেক বছর ধরে জরিত। প্রথমে খরচের কথা শুনে ঘাবরে গেলেও তার কথা মত এই ফুল চাষ শুরু করি। তিনি সব কিছু দেখা শোনা করেন। আব্দুর রাজ্জাক (নুহু মিয়ার শশুর) জানান, ফুল চাষের সাথে প্রায় ১০ বছর ধরে জরিত।

জারবেরা একটি ইউরোপীয় ফুল। ভারতের পুনে থেকে আমদানি করে চাষ শুর করেছেন তিনি। ফুলের খেতের উপর ছাউনি দিতে একই দেশ থেকে আমদানি করা হয় বিশেষ ধরনের পলিথিন। রোপনের তিন মাস পর গাছে ফুল আসতে শুরু করে। একটি গাছ একাধারে ৩ থেকে ৫ বছর ফুল দেয়। একই সময় একটি গাছে ২০ থেকে ২৫টি ফুল পাওয়া যায়। তিনি আরও জানান, জারবেরা চাষ অত্যন্ত ব্যয়বহুল।

প্রথমে খরচের কথা শুনে মেয়ে জামাই ঘাবরে যায়। আমার সাহসে সে এই ফুল চাষে সম্মত হয়। ৩ বিঘা জমিতে ১২হাজার জারবেরার চারা রয়েছে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে প্রায় ২৬ লাখ টাকা। বর্তমানে প্রতিটি গাছেই ফুল ফুটতে শুরু করেছে । প্রাকৃতিক দূর্য়োগ আর আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আশা করা যায় ২ বছরেই খরচের টাকা উঠে যাবে।  কয়েক জন কৃষি কর্মকর্তা জানান, জারবেরা ফুল গাছ থেকে তোলার ১০-১৫ দিন এবং গাছে থাকা অবস্থায় ৩০-৪৫ দিন সতেজ থাকে। ফলে এর চাহিদা অনেক।

\এই ফুলের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো সারা বছর ধরে এই ফুল ফোটে। তবে এপ্রিল-মে মাস হলো এই ফুলের ভরা মৌসুম। সব ধরনের জলবায়ুতে এরা বেঁচে থাকে। তবে উজ্জ্বল রোদের সঙ্গেই এদের সখ্য বেশি। বাংলাদেশে শীত এবং শীতের শেষ ভাগে জারবেরার ফলন ভালো হয়। পলি সেড করে চাষ করলে সারা বছর ধরেই ভালো ফলন হয় বলে জানান এসব কৃষি কর্মকর্তারা।

স্থানীয় আয়নাল আলী জানান, এই প্রথম আমাদের এলাকায় বনিজ্যিক ভাবে বিদেশি ফুল চাষ হচ্ছে। প্রথমে ভেবে ছিলাম এটা টাকা খরচ করে বাঁশখুটি দিয়ে ঘর বানিয়ে কি চাষ করবে। পরে জানতে পারলাম ফুল চাষ করবে,বর্তমাকে তার জমিতে প্রতি গাছে বিভিন্ন রঙ্গের ফুর ফুটতে শুরু করেছ।

উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হাচান আলী জানান, জারবেরা ফুল চাষের জন্য এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া বেশ উপযোগী। বছরের যেকোনো সময় এর চাষ করা যায়। শীত মৌসুমে এর উৎপাদন বেশি হয়। এছাড়া দেশের বাজারে এই ফুলের দাম ও চাহিদা অনেক বেশি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here