দেড় বছরে তিনদফা ভাঙ্গলো কপোতাক্ষ পাড়ের জেলা সড়কটি

0
দেড় বছরে তিনদফা ভাঙ্গলো কপোতাক্ষ পাড়ের জেলা সড়কটি

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ জিয়াউর রহমান জিয়া,মহেশপুর (ঝিনাইদহ)সংবাদদাতাঃ কপোতাক্ষ নদের ধার ঘেষে যাওয়া মহেশপুর – ৈবা ভায়া জিন্নানগর সড়কের মহেশপুর পৌরসভার সামনে ১০২ মিটারের ভাঙ্গন ঠেকাতে মাত্র ৩ মাস পূর্বে ব্যয় করা হয়েছে ৩২ লাখ টাকা। কিন্তু কোনো কাজে আসেনি। চলতি সপ্তাহের বৃষ্ঠিতে আবারো ধসে পড়েছে সড়কটি। এরও এক বছর পূর্বে প্যালাসাইটিং বসিয়ে আরেক দফা চেষ্টা করা হয়েছিল, সেটাও কোনো কাজে আসেনি।

বছর যেতে না যেতেই ধস নামে সড়কের ওই অংশের। স্থানীয়রা জানান, সংষ্কার কাজ হয় কিন্তু তার মান সঠিক থাকে না। যে কারনে ২-৪ মাস যেতে না যেতেই ভেঙ্গে যায় গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি। আর সড়ক বিভাগের দাবি বছর দুই বছর পূর্বে নদী খননের সময় তলদেশ থেকে মাটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এখন তারা যেভাবেই চেষ্টা করুন না কেন কোনো কাজে আসছে না। তবে তারা এবার শক্ত ভাবে বাঁধ দিয়ে সড়ক সংষ্কার করবেন বলে আশা করছেন।

এদিকে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার ব্যস্ততম সড়ক এভাবে ভেঙ্গে পড়ে থাকায় যানবাহন চলাচলে মারাত্বক ক্ষতি হচ্ছে। বড় বড় গাড়িগুলো প্রচন্ড ভীড় পেরিয়ে উপজেলা শহরের ভিতর দিয়ে যেতে বাধ্য  হচ্ছে। আর ছোট ছোট যানবাহনগুলো ভাঙ্গনের পাশ দিয়ে ঝুকি নিয়ে চলাচল করছে। স্থানীয়রা আরো জানান, ঝিনাইদহ জেলার সীমান্তবর্তী একটি উপজেলা মহেশপুর। ভারত সীমান্তের উপজেলা হওয়ায় এটির গুরুত্ব অনেক।

এই উপজেলার মানুষের চলচলের জন্য প্রধান সড়ক হিসেবে কালীগঞ্জ-জীবননগর সড়কের খালিশপুর থেকে বেরিয়ে মহেশপুরের একমাত্র ব্যস্ত তম সড়ক এটি। এটি  খালিশপুর থেকে কপোতাক্ষ নদ এর ধার দিয়ে মহেশপুর শহর পেরিয়ে দত্তনগর হয়ে জীন্নানগর পেরিয়ে যাদবপুর গেছে। সড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাধীন। ইতিপূর্বে সড়কটি খুবই খারাপ ছিল। চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়ায় এলাকাবাসি দাবি জানিয়ে আসছিল মেরামতের। ২০২০-২১ অর্থ বছরে ৩৯ কোটি টাকা ব্যায়ে ওই সড়কটির সাড়ে ৪৮ কিলোমিটার সংষ্কার কাজ করা হয়। যার মহেশপুর শহরের কিছু রয়েছে কপোতাক্ষ নদ এর ধার ঘেষে।

এই সংষ্কারের পর মহেশপুরবাসি ভালোভাবে চলাচল করে আসছিলেন। এই অবস্থায় গত ২৩ সালের শেষ দিকে সড়কটির মহেশপুর শহরের মহেশপুর পৌরসভা ভবনের পাশে কপোতাক্ষ নদ এর ধারে ধস দেখা দেয়। ওই স্থানের ১০২ মিটার জায়গার পিচ-পাথর বসে যেতে শুরু করে। এরপর দেখা দেয় ভাঙ্গন। অল্পদিনের মধ্যে সড়কটির উত্তর পাস ধসে কপোতাক্ষ নদ এর মধ্যে চয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান ও জামিরুল ইসলাম জানান, এই ভাঙ্গন অবস্থায় তারা ঝুকি নিয়ে চলাচল করছিলেন। এরপর সড়ক বিভাগ থেকে একদফা সংষ্কার করা হয়। কিন্তু সেটা বেশি দিন টেকেনি।

সংষ্কার কাজের ৮ থেকে ৯ মাস পরই আবারো ধস দেখা দেয়। এই অবস্থায় চলতি বছরের জুন মাসের দিকে দ্বিতীয় দফা সংষ্কার কাজ করেন। এবার মাত্র তিন মাস যেতে না যেতেই গত দুই সপ্তাহ হলো তৃতীয় দফা ধস নেমেছে। এবার সড়কটির অর্ধেক অংশের বেশি নদ এর মধ্যে চলে গেছে। কর্তৃপক্ষ এক সপ্তাহ হলো বালি দিয়ে গর্ত াটের চেষ্টা করেছেন। সেটাও হয়নি, ইতিমধ্যে বালিও বসে গেছে। অনুমান করা হচ্ছে তলদেশ দিয়ে বালি সরে নদ এর মধ্যে চলে গেছে। ওই সড়কে চলাচলকারী যাত্রীবাহি বাসের চালক মানিক হোসেন জানান, তারা যশোর থেকে কালীগঞ্জ হয়ে জিন্নানগর পর্যন্ত চলাচল করে থাকেন।

এই ধসের কারনে তাদের মহেশপুর শহর ঘুরে যেতে হচ্ছে। এতে প্রায়ই শহরের মধ্যে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। আর এই ঘটনা মাঝে মধ্যেই হয়ে থাকে বলে জানান। তিনি বলেন, এই ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী পদক্ষেপ জরুরী। আর সড়ক বিভাগে খোজ নিতে গেলে এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জানান, তারাও সড়কটি নিয়ে চিন্তিত। কোনো ভাবেই এই ধস সামলাতে পারছেন না। সর্বশেষ তারা ৩২ লাখ টাকা খরচ করে রিটেনিং ওয়াল দিয়ে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা করেছেন।

সেটাতেও এই ধস নামায় তারা বুঝে উঠতে পারছেন না কিভাবে এই জায়গাটি রক্ষা করবেন।বিষয়টি নিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আহসান উল কবীর জানান, তারাও এটি নিয়ে চিন্তিত। তিনি বলেন, সড়কটির ৩ বছর পূর্বে যখন সংষ্কার হয়েছিল তখন কোনো সমস্য দেখা দেয়নি। পরে কপোতাক্ষ নদ খননের কাজ করা হয়। তিনি আরো বলেন, সাধারণত নদ-নদী খননের সময় ভেতরের মাটি কেটে পাড় বাঁধা হয়।

এখানে সেটা করা হয়নি। নদ এর ভেতর থেকে কাটা মাটি সড়কের উপর রাখা হয়েছিল, সেই মাটি পরে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যে কারনে ভাঙ্গন স্থানের তলদেশের মাটি আলগা থাকায় এই অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। তবে তারা পানি উন্নয়ন  বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে টেকসই ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here