জোড়া-তালি দিয়েও ঠিকমত চলছে না মহেশপুর সাব- রেজিস্ট্রি অফিস

0
জোড়া-তালি দিয়েও ঠিকমত চলছে না মহেশপুর সাব- রেজিস্ট্রি অফিস

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ মহেশপুর(ঝিনাইদহ) সংবাদদাতাঃ জোড়া-তালি দিয়েও ঠিকমত চালানো যাচ্ছে না ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কার্যক্রম। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সেবা প্রত্যাশীরা। দিনের পর দিন জমি রেজিস্ট্রি না করতে পারায় জমি ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভোগান্তির পাশাপাশি সরকারও হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব।

তাই দ্রুত এ সমস্যা সমাধানে সাব-রেজিস্ট্রার পদায়নের দাবী সেবা প্রত্যাশীসহ সংশ্লিষ্টদের।স্থায়ী সাব-রেজিস্টার থাকতে আগে যেখানে প্রতি মাসে ৯০০ দলিল রেজিস্ট্রি হতো, এখন সেখানে হচ্ছে মাত্র ৪০০শ’ দলিল। সরকারের এ খাত থেকে রাজস্ব কমেছে মাসে প্রায় ২ কোটি টাকা। বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, মহেশপুর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের আওতায় পৌরসভাসহ ১২টি ইউনিয়নের ২৫৫টি গ্রামে প্রায় ৪ লাখ মানুষ বসবাস করেন।

এই উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার গত বছরের ডিসেম্বরে বদলি হওয়ার কারণে বিভিন্ন গ্রামের মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার দূর থেকে এসেও ফিরে যেতে হচ্ছে দলিল রেজিস্ট্রি না করে। প্রায় ১০ মাস স্থায়ী সাব রেজিস্ট্রার না থাকার কারণে জমি রেজিস্ট্রি হচ্ছে না ঠিকমতো। সেই সাথে সাধারণ মানুষও হচ্ছে নাজেহাল। ১ জন সাব-রেজিস্ট্রারকে পালাক্রমে (মহেশপুর-কোটচাঁদপুর) এ দু’ উপজেলায় দায়িত্ব দেওয়া হলেও সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না তিনিও।

সকাল ৯টার সময় অফিস চালু হওয়ার কথা থাকলেও সাব-রেজিস্ট্রার মহেশপুরে আসেন ১১টার পরে। ফলে চরম দুর্ভোগে সেবাপ্রত্যাশীরা। রেজিস্ট্রি না হওয়ায় শত শত জমি ক্রেতা-বিক্রেতা ও জরুরি কাজে দলিল উত্তোলনকারীরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। পাশাপাশি সরকার প্রতি মাসে প্রায় ২ কোটি টাকার রাজস্বও হারাচ্ছে। সেবাপ্রত্যাশীদের অভিযোগ, সকাল ৯টার সময় অফিস চালু হওয়ার কথা থাকলেও সাব-রেজিস্ট্রার মহেশপুরে আসেন ১১টার পরে। সাব-রেজিস্ট্রারের অভাবে কাজ হচ্ছে না।

দলিল নিতে এসে অনেকে ফিরে যাচ্ছেন। দলিল রেজিস্ট্রি ও দলিলের নকল না পেয়ে অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সাব-রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষর ছাড়া কিছুই হয় না। এমন গুরুত্বপূর্ণ পদের কর্মকর্তা মাসের পর মাস না থাকা এমনকি সঠিক ভাবে তাদের দায়িত্ব পালন না করায় সাধারণ মানুষের যেন কষ্টের শেষ নেই। সাব-রেজিস্ট্রার না থাকায় সব কাজ স্থবির হয়ে পড়েছে মহেশপুর উপজেলার সামন্তা গ্রামের নজের আলী জানান, তিন সপ্তাহ ধরে ঘুরে জমির দলিল রেজিট্রি করেছি।

এতে করে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে আমাকে। একদিকে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হয়েছে অপর দিকে সময় অপচয় হয়েছে।দলিল লেখক বাবর আলী বাবু জানান, সপ্তাহে দুই দিন অফিস চলে। নিয়মিত সাব-রেজিস্ট্রি অফিস না চলার কারণে দলিল লেখকসহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার দুর থেকে এসে ফিরে যেতে হচ্ছে তাদের। প্রায় ১০ মাস ধরে রেজিস্ট্রার নিয়মিত না থাকার কারণে জমি রেজিস্ট্রি হচ্ছে না ঠিক মত।

দলিল লেখক জানান, এতো বড় উপজেলায় একজন যদি সাব-রেজিস্ট্রি না থাকে তাহলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। এক দিকে সাধারণ মানুষ দলিল রেজিস্ট্রি করতে না পেরে ভোগান্তি পাচ্ছে অন্যদিকে সরকার প্রতি মাসে মহেশপুরের সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে প্রায় ২ কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। তাই জরুরী ভিত্তিতে মহেশপুরে একজন সাব-রেজিস্ট্রার দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।নতুন কর্মকর্তা পদায়নের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে জানান জেলা রেজিস্ট্রার।

মহেশপুর উপজেলায় গত বছরের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত দলিল রেজিস্ট্রি হয়েছে ১২ হাজার। কর্মকর্তা বদলি হওয়ার পর চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে চলতি মাস অক্টোবর পর্যন্ত দলিল রেজিস্ট্রি হয়েছে মাত্র ৪ হাজার ২০০শ’। স্থায়ী কর্মকর্তা না থাকায় প্রতি মাসে এভারেজ ৫০০ দালিল কম রেজিস্ট্রি হচ্ছে। সরকারের এ খাত থেকে রাজস্ব কমেছে মাসে প্রায় ২ কোটি টাকা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here