প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি:সোনারগাঁয়ের পিরোজপুর ইউনিয়নের চরগোয়ালদী এলাকার বিতর্কিত হামিদ আলির বিরুদ্ধে মেহেরুন্নেসা নামে এক নিরীহ নারীর জমি দখলের অভিযোগে উঠেছে। হত্যা, ভূমিদস্যুতা ও চাঁদাবাজিসহ বহু অপকর্মের হোতা ওই আমিদ আলি একের পর এক অপকর্ম করেও অর্থের দাপটে পার পেয়ে যাচ্ছে।
গত ঈদুল আজহার আগের দিন সন্ধ্যায় তার মালিকানাধিন মদিনা মশার কয়েল কারখানার এক শ্রমিক বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত হলেও তা দামাচাপা দেন আমিদ আলি। ভূক্তভোগী মেহেরুন্নেসার অভিযোগ, পিরোজপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের চরগোয়ালদী এলাকার মৃত হাজী সরফত আলীর ছেলে আমিদ আলি একজন ভূমিদস্যু। সোনারগাঁ উপজেলার চেঙ্গাইন মৌজায় আরএস ১৩০৪,১৩০৫ ও ১৩০৬ নং দাগে মেহেরুন্নেসার মোট ৭০ শতাংশ জমি জোরপূর্বক দখল করে বালু ঐাট করে বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণ করে আমিদ আলি ও তার পালিত সন্ত্রাসী বাহিনী।
প্রতিবাদ করায় দিচ্ছে হত্যার হুমকি। জমি উদ্ধারে জেলা পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করে প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মেহেরুন্নেসা।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত হামিদ আলি পল্লি বিদ্যুতের মিটারের বিল লেখার কাজ করতেন। তখন তিনি আর্থিক সুবিধা নিয়ে বিভিন্ন মিল কারখানার বিল কম করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।
পরে শুরু করেন বিভিন্ন নিরীহ মানুষের ওয়ারিশ ঝামেলার জমি কিনা। ঝামেলার জমি কিনে দখল করার জন্য গড়ে তুলেন একটি সন্ত্রাসী বাহিনী। ফলে রাতা রাতি তিনি বহু টাকার মালিক বনে যান। তার নিজ এলাকার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মেঘনা নদী ঐাট করে দখল করেন তিনি। ঢাকার শনিরআখড়া এলাকায় ৫ টি বহুতল ভবন ও একটি মশার কয়েল তৈরির কারখানাও গড়ে তুলেন হামিদ আলি।
অভিযোগ রয়েছে চাঁদারদাবিতে চাচাতো বোনের ছেলে মনির হোসেন মেম্বার ও তার ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে হামিদ আলি বাহিনী। ওই ঘটনায় ২০০৬ সালের ৩১ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় মামলা হয়। যার নাম্বার ৬৪। পাচকানি মৌজায় মনির মেম্বারের ৬ শতাংশ জমি দখলের অভিযোগও রয়েছে হামিদ আলির বিরুদ্ধে। ২০০৩ সালে ওই এলাকার চাঞ্চল্যকর আবদুল্লাহ হত্যা মামলার প্রধান আসামী ছিলেন হামিদ আলি।
সম্প্রতি গত ঈদুল আজহার আগের দিন সন্ধ্যায় হামিদ আলির মালিকানাধিন ঢাকার কদমতলী থানার তুষার ধারা জামতলা এলাকায় মদিনা মশার কয়েল তৈরির কারখানায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ১ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ওই শ্রমিক ময়মনসিংহ জেলার বাসিন্দা। এ ঘটনা পুলিশকে না জানিয়েই নিহতের লাশ তার গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় হামিদ আলি।
সরকারি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়াই আবাসিক এলাকায় অবৈধভাবে এই কারখানা গড়ে তুলা হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। কারখানাটিতে দেওয়া হয়েছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ। বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শ্রমিক নিহতের বিষয়ে জানতে চাইলে কদমতলি থানার ওসি আবুকালাম জানান, নিহতের পরিবারের অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়রা জানায়, হামিদ আলির শরিরআখড়া বাড়িতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও গুলিসহ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব। কিছু দিন পরই তিনি জামিনে বের হয়ে পড়েন। হামিদ আলি টাকার জোরে দিনকে রাত করে ফেলে। বহু অপকর্ম করেও অর্থের জোরে পার পেয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে হামিদ আলির সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নাম্বারে একাধিকবার ফোন করলে রিং হলেও তিনি রিসিভ করেননি।